বিপুল আশরাফ
দেশের প্রথম সৌর বিদ্যুৎচালিত ইঞ্জিন নৌকা তৈরি করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন প্রকৌশলী আহমেদুল কবির উপল। ইউএনডিপির অর্থায়ন ও স্রেডার সাথে চুক্তি অনুযায়ী পরীামূলকভাবে (পাইলট প্রকল্প) সৌর বিদ্যুৎচালিত মোট পাঁচটি নৌকা (সোলার বোটিং) তৈরি সম্পন্ন হয়েছে। স্থানীয় মাথাভাঙ্গা নদীতে প্রাথমিকভাবে এসব নৌকার মধ্যে তিনটি ভাসানো হয়েছে। দেশব্যাপী সৌরচালিত এসব নৌকা চালু করা হলে একদিকে যেমন জ্বালানি সাশ্রয় হবে, অন্য দিকে নদীদূষণ রোধসহ জীববৈচিত্র্য রক্ষা পাবে।
২০১৬ সালের জুন মাসে ইউএনডিপির অর্থায়নে স্রেডার তত্ত¡াবধায়নে পাঁচটি সোলার বোট নির্মাণ কাজ শুরু হয় চুয়াডাঙ্গায়। যার মধ্যে তিনটির কাজ শেষ হয়েছে। বাকি দু’টির নির্মাণ শেষে চলছে রঙের কাজ। সোলার নৌকার মধ্যে তিনটি শুধু সৌর শক্তি দিয়ে চলবে। বাকি দু’টি সৌর শক্তির পাশাপাশি ডিজেল ইঞ্জিনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মাথাভাঙ্গা নদীতে সৌরচালিত নৌকা পরীামূলক চালু করে এতে ভ্রমণ করা হয়েছে। নদীর জীববৈচিত্র্য রা, শ্যালোইঞ্জিন চালিত নৌকার ব্যবহার কমানো ও সৌর শক্তির ব্যবহার ছড়িয়ে দিতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। নদীতে ডিজেল ইঞ্জিনচালিত নৌকা ব্যবহারের ফলে নদীর পানি দূষণ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এতে জীববৈচিত্র্য পড়েছে হুমকির মুখে। তাই পরিবেশের ভারসাম্য রায় নদীতে ডিজেল ইঞ্জিনচালিত নৌকার বিকল্প হিসেবে সৌরচালিত নৌকা ব্যবহার জরুরি। এর ফলে একদিকে যেমন মাছসহ নদীতে বসবাসকারী বিভিন্ন প্রাণী রক্ষা করা সম্ভব হবে, একই সাথে নদীর পানি দূষণ থেকে রক্ষা পাবে।
উদ্ভাবক প্রকৌশলী আহমেদুল কবীর উপল বলেন, ইউএনডিপির অর্থায়নে স্রেডার তত্ত¡াবধায়নে পাঁচটি সোলার বোট নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৭৮ লাখ টাকা। এ সৌর চালিত নৌযানগুলো দুই ধরনের মাপের তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে বড়টির ধারণক্ষমতা ৩০ জন। ছোটটির ধারণক্ষমতা ১০ জন। এই নৌকাগুলো দৈনিক ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে পারবে। তিনটি নৌকা যাত্রীসমেত মাথাভাঙ্গা নদীতে পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হয়েছে। স্র্রোত ভেদ করে নৌকাটি চলতে পারছে। আশা করি আমরা সফল হবো।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক আবদুর রাজ্জাক বলেন চুয়াডাঙ্গার আলোকদিয়ায় পাঁচটি নৌকার মধ্যে তিনটি পরীামূলক চালু করা হয়েছে। বাকি দু’টির কাজ শেষ পর্যায়ে। সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে, তা দিয়ে নৌকাগুলো চলাচল করবে। এগুলো পরিবেশবান্ধব ও শব্দদূষণ মুক্ত। নয়া দিগন্ত।