sliderঅপরাধশিরোনাম

ইবিতে ছাত্রী নির্যাতন : ভিডিও ধারণকারীর ফোন লাপাত্তা

তদন্তে মিলেছে নির্যাতনের প্রমাণ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের নির্যাতিত ছাত্রীর ভিডিও ধারণের অভিযোগে অভিযুক্ত হালিমা আক্তার উর্মির মোবাইল ফোন হারিয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

ওই ফোনেই ভিডিও ধারণ করা হয়েছে সন্দেহে ফোনটি উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর পত্র পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে হল প্রশাসন।

সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) হল বডির তদন্ত প্রতিবেদনে নির্যাতনের তথ্য সঠিক প্রমাণিত হওয়ায় জড়িত পাঁচ ছাত্রীকে হল থেকে বহিষ্কার করেছে হল প্রশাসন।

হল থেকে বহিষ্কৃতরা হলেন শাখা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের তাবাচ্ছুম, একই বিভাগ ও বর্ষের মাওয়াবিয়া, আইন বিভাগের একই বর্ষের ইসরাত জাহান মীম ও ফাইন আর্টস বিভাগের একই বর্ষের হালিমা আক্তার উর্মি।

জানা গেছে, শেখ হাসিনা হলে একচেটিয়া আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছে ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা। ক্ষমতার দাপটে ভয়ে তার নির্দেশ মতো কাজ করেছেন বলে দাবি করেছেন বাকি অভিযুক্তরা। ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে কয়েকজন জানিয়েছেন, প্রথম দিনে ফুলপরীর সাথে ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি অন্তরার ঝামেলা হওয়ার পরই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তিনি। পরে প্রভোস্ট ফুলপরীর মুচলেকা নিয়ে হলে থাকতে বলেন। এরপরই আন্তরা সবাইকে নির্দেশ দেন, ‘ফুলপরীকে এমন অত্যাচার করবে, যেন সে নিজেই হল থেকে বের হয়ে যায়। দরকার পড়লে মেরে গুম করে ফেলবে। এরপর যত প্রটেকশন লাগে, আমি দেব।’

এদিকে একই ঘটনার তদন্ত সম্পন্ন করেছে হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি। কমিটির সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহাবুব আলম বলেন, তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিবেদন হাইকোর্টে পাঠানো হয়েছে। বাকি সিদ্ধান্ত মহামান্য হাইকোর্ট গ্রহণ করবে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক গঠিত কমিটির প্রতিবেদনের কপিও হাইকোর্ট বিভাগে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে মঙ্গলবার হাইকোর্টে শুনানি হবে বলে জানা গেছে।

এছাড়াও শাখা ছাত্রলীগ গঠিত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানিছেন শাখা সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত। তিনি বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে‘। তবে প্রতিবেদনে কী আছে, ওই বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি আরাফাত।

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি দুই দফায় ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী ফুলপরীকে রাতভর র‌্যাগিং, শারীরিকভাবে নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করার অভিযোগ ওঠে। এতে শাখা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ছাত্রলীগ কর্মী তাবাসসুম ইসলাম, মোয়াবিয়া জাহান, ইসরাত জাহান মিমি ও হালিমা খাতুন উর্মীসহ কয়েকজন জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর।

পরে ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ ফেব্রুয়ারি একটি তদন্ত কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে ১৫ ফেব্রুয়ারি পৃথকভাবে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল ও শাখা ছাত্রলীগ তদন্ত কমিটি গঠন করে।
নয়াদিগন্ত

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button