
বিনোদন ডেস্ক : ১৭ মার্চ মুক্তি পাচ্ছে মেহজাবীন অভিনীত হইচইয়ের নতুন ওয়েব সিরিজ ‘সাবরিনা’। গত মঙ্গলবার দুপুরে সিরিজটি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মেহজাবীন বলেন, ‘আমরা অনেক বেশি খাটতে পছন্দ করি এবং অন্যদের চেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করি। এজন্য আমরা অনেক বেশি পরিশ্রমী, তাই অনেকটাই আমরা সফল হতে পারি। যদিও বাজেট কম থাকে তবুও আমরা সবসময় অসাধারণ কাজ উপহার দেয়ার চেষ্টা করি। এতে শিল্পীদের পাশাপাশি পরিচালক, টেকনিক্যাল টিম ক্রু সবার ক্রেডিট থাকে। আমি শুধু একা নই, প্রত্যেক শিল্পীর ২-৩ দিনে এক নাটকে কাজ করে পরের দিন আরেক শুটিংয়ে যেতে হয়। এতো কম সময়ে এক চরিত্র থেকে আরেক চরিত্র ধারণ করার কষ্টটা আমরা যারা শিল্পী তারাই শুধু বুঝি। তাই আমি মনে করি আমাদের মতো পরিশ্রমী শিল্পী হয়তো পৃথিবীর কোথাও নেই। হলিউডের শিল্পীদেরও চ্যালেঞ্জ করতে পারি।’
মেহজাবীনের হলিউডের অভিনেতাদের চ্যালেঞ্জ করা নিয়ে ইতিমধ্যেই সরগরম ফেসবুক। অনেকেই ট্রলও করছেন এই অভিনেত্রীকে। এদিকে নেটিজেনদের ট্রলের বিপরীতে অনেকেই মেহজাবীনের বক্তব্যকে যুক্তিসংগত বলেও উল্লেখ করছেন।
কণ্ঠশিল্পী লুৎফর হাসান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘একটা ইন্টার্ভিউয়ে মেহজাবিন বলেছেন আমরা হলিউডের অভিনেতাদের চ্যালেঞ্জ করতে পারি এরকম কিছু। এই বক্তব্য নিয়ে হা হা প্রজন্ম সরব। আমি মেহজাবিনের বক্তব্যে একমত। মেহজাবিনের নানা মাত্রিক চরিত্রে তার মিশে গিয়ে নিখুঁত অভিনয়ের পারদর্শিতা আমাকে তার প্রতি এই মুগ্ধতার জায়গায় নিয়ে গেছে। আমাদের দেশের গ্রামীণ চরিত্রে শাহনাজ খুশি কিংবা চরিত্র অনুযায়ী কোথাও রুনা খান, অসামান্য দক্ষ। তাই নারী দিবসের বিরাট বিরাট স্লোগান দেবার পরের দিন একজন অভিনেত্রীর কথা নিয়ে হা হা শুরু করার আগে আরেকবার ভেবে দেখবেন। আমাদের কিন্তু একজন মোশাররফ করিম আছেন, একজন চঞ্চল চৌধুরী আছেন, একজন শতাব্দী ওয়াদুদ আছেন। আছেন ফজলুর রহমান বাবু কিংবা আরও অনেকেই। আমাদের জায়গা ছোট, সুযোগ কম। তাই, কেউ নিজেদের প্রতি আস্থা প্রকাশ করলে তার আস্থাকে উড়িয়ে দেবেন না প্লিজ। জ্বি, আমাদের অনেক অঙ্গনেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ের অনেক জিনিয়াস আছেন।’
সাংবাদিক অভি মঈনুদ্দিন লিখেছেন, ‘মেহজাবীন চৌধুরী আমাদের দেশের সম্পদ। অবশ্যই তিনি একজন ব্রিলিয়ান্ট অভিনেত্রী।’
সাংবাদিক ইমরুল নূর লিখেছেন, ‘সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে মেহজাবীন চৌধুরীর বলা কিছু কথা নিয়ে দেখলাম নানা সমালোচনা, ট্রল হচ্ছে। এখন কথা হলো, সেখানে তিনি এমন কি অযৌক্তিক বা অপ্রাসঙ্গিক কথা বলেছেন যেটা নিয়ে এত কথা হচ্ছে! যদিও এটা আর নতুন কি, যে দেশের সংস্কৃতির ভালো নিয়ে কেউ কথা বলতে কিংবা এপ্রিসিয়েট করতে কেউ এগিয়ে আসে না, শুধু সুযোগের অপেক্ষায় থাকে ত্রুটি খুঁজে বের করতে; তাদের নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা এতটা চিন্তিত কিনা জানা নেই! আমাদের এই ছোট্ট ইন্ডাস্ট্রির শিল্পীরা যে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন তাতে তো কারও কোন সন্দেহ থাকার কথা না। এই স্বল্প বাজেটের ইন্ডাস্ট্রির শিল্পীরা দুই দিনে একটা নাটকের শুটিং শেষ করেন, যেটা আর কোন ইন্ডাস্ট্রিতেই নেই। পাশের দেশ কলকাতা, তারা দিনে ২/ ৩ মিনিটের একটা ফুটেজ নিতে পারলেই Happily Satisfied কিন্তু আমাদের শিল্পীরা দিনে ২০/৩০ মিনিটেরও বেশি ফুটেজ দেন প্রতিদিন। তাহলে পরিশ্রমটা কাদের বেশি? কলকাতার অনেক শিল্পীর সঙ্গেই কথা হওয়ার সুবাদে তারা যখন শুনে যে মাত্র দুই দিনে আমাদের একটা ফিকশন তৈরি হয়, তখন তারা হা করে তাকিয়ে থাকে আর জানতে চায়- এটা কিভাবে সম্ভব! বলিউডের কথা বাদ-ই দিলাম আর হলিউড? এ তো স্বপ্নের মতো!’
সুত্র : দেশ রূপান্তর