sliderঅপরাধশিরোনাম

টিউলিপ সিদ্দিক ও তার আইনজীবী নিজেদের দেশকে ছোট করছেন: দুদক

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক এবং তার আইনজীবী নিজেদের দেশকে (যুক্তরাজ্য) ছোট করছেন বলে মনে করছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

দুদক ব্রিটেনের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছে না উল্লেখ করে আবদুল মোমেন বলেন, ব্রিটেনের রাজনীতি কি এতই ভঙ্গুর যে তার দেশের একজনের নামে মামলা হলে; আর তাতেই ব্রিটেন সরকার, রাজনীতি একেবারে ধসে পড়বে— এটা কি হতে পারে?

টিউলিপের আইনজীবীকে শব্দ চয়নে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তারা নিজেদের দেশকে ছোট করছেন। প্রমাণ করছেন ব্রিটেনের রাজনীতি ভঙ্গুর। আমাদের হস্তক্ষেপের কী আছে? দুদকের কার্যপরিধিতে রাজনীতিতে যাওয়ার সুযোগ নেই।

চিঠি আদান-প্রদান নয়, অন্যান্য অভিযুক্তদের মতোই আদালতে এসে টিউলিপকে মামলা মোকাবেলার আহ্বান জানান দুদক চেয়ারম্যান।

সম্প্রতি টিউলিপের আইনজীবী দুদককে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, অন্তর্বর্তী সরকার ও দুদক ব্রিটেনের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আমার সহজ একটা প্রশ্ন, টিউলিপ সিদ্দিকীর কেইসটা কি এমন কোনো কেইস যেটা ব্রিটেনের ভঙ্গুর রাজনীতিকে আরও ভঙ্গুর করবে। বিষয়টিকে আমরা অন্যভাবেও দেখতে পারি।

চিঠিপত্রের মাধ্যমে টিউলিপ মামলা নিষ্পত্তি করতে চাইছেন জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, অপরাধী যে দেশে অপরাধ করবে তাকে সেই দেশেই তা মোকাবেলা করতে হবে। এখন মনে হচ্ছে সম্ভবত চিঠিপত্রের মাধ্যমে তিনি মামলা নিষ্পত্তি করতে চাইছেন। এটা তো হওয়ার কথা নয়। কোর্টে মামলা হচ্ছে, টিউলিপ সিদ্দিকীকে কোর্টে হাজির হয়ে মামলা মোকাবেলা করতে হবে।

টিউলিপ সিদ্দিকীর মামলা কোনো রাজনৈতিক মামলা নয় জানিয়ে তিনি বলেন, এটা কোনো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা নয়। কাউকে ছোট করার মামলা নয়। অনেক আসামির মতো টিউলিপ সিদ্দিকীও একজন অভিযুক্ত। আমাদের এর চেয়েও অনেক বড় মামলা আছে।

তিনি আরও বলেন, টিউলিপ আমাদের কাছে বাংলাদেশি নাগরিক। তার জাতীয় পরিচয়পত্র আছে। তার টিআইএন আছে। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে মামলা করেছি। আমার বিশ্বাস টিউলিপ বাংলাদেশের আইন মেনে মামলা মোকাবেলা করবেন।

টিউলিপ গোড়া থেকেই সব জানতেন, এজন্য মন্ত্রীর পদ থেকে তাকে সরে যেতে হয়েছে বলে জানান তিনি। বলেন, টিউলিপের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা আছে। তার অনুপস্থিতিতে বিচার চলবে।

এর আগে ২৩ জুন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও দুদক ব্রিটিশ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক। ইউনূস ও দুদক বরাবর পাঠানো এক উকিল নোটিশে তিনি উল্লেখ করেন, তার সুনাম ক্ষুণ্ন করাই তাদের উদ্দেশ্য।

প্রসঙ্গত, দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সমালোচনার মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হন লেবার এমপি টিউলিপ। তিনি যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসনের এমপি। ঢাকার গুলশানের একটি প্লট অবৈধভাবে হস্তান্তরের ব্যবস্থা করিয়ে দিয়ে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের কাছ থেকে ‘ঘুষ’ হিসেবে একটি ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগে টিউলিপের বিরুদ্ধে গত ১৫ এপ্রিল মামলা করে দুদক।

পরে গত ১৫ জুন টিউলিপকে দ্বিতীয় দফায় ২২ জুন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে দুদক। এর আগে ১৪ মে টিউলিপকে তলব করেছিল দুদক। তবে সেই তলবি চিঠি পাচ্ছেন না বলে বিভিন্ন মাধ্যমে অভিযোগ করেছেন টিউলিপ।
ইত্তেফাক

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button