sliderস্থানীয়

চরফ্যাশনে হিজড়া সেজে পুরুষের প্রতারণা ও অশ্লীলতা!

আবদুস সাত্তার, লালমোহন প্রতিনিধি : হিজড়া সেজে প্রতারণার মাধ্যমে অশ্লীলতা ও চাঁদাবাজীর উৎপাত বেড়েই চলছে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায়। কে আসল আর কে নকল নিয়ে হিজড়াদের মধ্যে শুধু ঝগড়া বিবাদই নয় রিতিমত চাঁদার ভাগ বাটোয়ারা এবং সিনিয়র, জুনিয়র নিয়ে চলছে বাগযুদ্ধ। তবে এর মধ্যেই অভিযোগ উঠেছে সালাহ উদ্দিন নামের একজন টেইলার্স কর্মী হিজড়া সেজে চরফ্যাশন উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে চাঁদাবাজি ও বাসাবাড়িতে তরুন যুবকদের সঙ্গে অশ্লীলতা করে ব্ল্যাক মেইলের মাধ্যমে অর্থনৈতিক ফায়দা নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন একাধীক ভূক্তভোগী। তারা বলেন, উপজেলার চর-কলমী ইউনিয়নের চর-মঙ্গল এলাকার মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে সালাহ উদ্দিন পুরুষ হয়েও হিজড়া সেজে সানি হিজড়া নাম ব্যবহার করে নিজ এলাকাসহ চরফ্যাশন উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে মানুষের কাছ থেকে চাঁদাবাজী ও অশ্লীলতাসহ ব্ল্যাক মেইল করে টাকাপয়সা হাতিয়ে নিচ্ছে। হাজি মনির উদ্দিন নামের চর-কলমী এলাকার এক বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, আমি আঞ্জুরহাট বাজারে দীর্ঘ ৩০বছর ধরে ব্যবসা করি। ওই বাজারে আমার দোকানের পাশে সালাহ উদ্দিন খলিফা (টেইলার্স কর্মী) কাজ করত। কিছুদিন আগে সালাহ উদ্দিন টেইলার্সের কাজ বন্ধ করে ঢাকায় যায়। পরবর্তীতে ঢাকা থেকে সে নারীদের পোষাক পড়ে আঞ্জুরহাট বাজারে আসে এবং স্থানীয় সঞ্জিব ওরফে রাজুর সেলুনে কিছুদিন চাকুরি করে। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য এবং এলাকাবাসী সালাহ উদ্দিনকে নারী সূলভ আচরণ ও পুরুষ হয়ে নারী সাজতে মানা করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সালাহ উদ্দিনের প্রতিবেশি বলেন, সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী ও দুইটি সন্তান রয়েছে। সে একটু সুন্দর হওয়ায় হিজড়া সেজে এলাকায় অশ্লীলতার পাশাপাশি স্থানীয় চর-মঙ্গল গ্রামের তরুন যুবকদের ঢাকায় নিয়ে হিজড়া বানিয়ে চরফ্যাশন উপজেলার বেতুয়া বিআরডিবি শরীফপাড়া ৬নং ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় উঠতি বয়সি ও যুবকদের সঙ্গে নাচগান এবং অশ্লীল কর্মকান্ড করে যুব সমাজকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে বলে দাবী করেন। সালাহ উদ্দিন ওরফে সানি হিজড়ার পরিবারের এক সদস্য বলেন, আমরা ধার্মীক পরিবারের মানুষ। আমরা চাই সালাহ উদ্দিন হিজড়াদের জগত থেকে সাধারণ জীবনে ফিরে আসুক এবং তার সন্তানদের ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে সংসার করুক। বাজারের চাল ব্যাবসায়ী আবুল কালাম,স্বর্ণ ব্যবসায়ী অমল বোস এবং ওষুধ ব্যাবসায়ী এনায়েত উল্লাহসহ একাধীক ব্যাবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, সপ্তাহের প্রত্যেক হাটে বাজারে এসে হিজড়া নামধারী ভূয়া প্রতারকরা এসে দোকান থেকে চাঁদা কালেকশন করে। যদি না দেই তাহলে ব্যাবসায়ীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে এসব ভূয়া ও প্রতারক হীজড়ারা। পৌরসভা ৬নং ওয়ার্ডের একাধিক বাসিন্দা বলেন,এই এলাকায় সালাহউদ্দিন (সানি হিজড়া)সহ একাধিক হিজড়া রয়েছে। যাদেরকে দিয়ে একটি চক্র বিভিন্ন বাসা বাড়িতে ভাড়ায় গিয়ে নাচগানসহ অশ্লীলতা করে বেড়াচ্ছে। এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল নোমান রাহুল বলেন, কোনো ব্যাক্তি যদি হিজড়া বা তৃতিয় লিঙ্গের মানুষ বলে পরিচয় দিয়ে প্রতারণাসহ ব্ল্যাক মেইলের সঙ্গে জড়িত থাকে এবং তার বিরুদ্ধে যদি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয় তাহলে অবশ্যই তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকের মাধ্যমে পরিক্ষা করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button