sliderস্থানিয়

কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, সড়ক বিভাগের জমি বেদখল, নির্মাণ হচ্ছে পাকা স্থাপনা

মো.শাহাদাত হোসেন মনু,ঝালকাঠি: ঝালকাঠিতে বেদখল হয়ে যাচ্ছে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সম্পত্তি। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় যে যার ইচ্ছামতো অবৈধভাবে দখল করে তাতে নির্মাণ করেছে অস্থায়ী দোকানের পাশাপাশি পাকা স্থাপনাও । অর্থের বিনিময়ে এসব হচ্ছে বলেই কর্তৃপক্ষ নীরব থাকার অভিযোগও রয়েছে। তবে মাঝেমধ্যে সড়ক ও জনপথ বিভাগ দায়সারা পদক্ষেপ গ্রহণ করে নিজেদেরকে ত্রæটিমুক্ত রাখছেন বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আল আমিন সাংবাদিকদের স্থাপনা নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিতে নির্দেশ দেন।

তথ্যানুসন্ধানে জানাগেছে, ঝালকাঠি শহরের কৃষ্ণকাঠি এলাকার খামারবাড়ি প্রবেশ পথে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের জমির পুকুরে বালু দিয়ে ভরাট করে কর্তৃপক্ষ। এরপরে সেই জায়গায় পৌরসভা ট্রাক স্ট্যান্ড করার উদ্যোগ নিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। ইতঃমধ্যে ওই জমি পৈত্রিকসূত্রে মালিকানা দাবি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন স্থানীয় কয়েকজন । এতে বিবাদী করা হয় সংশ্লিষ্ট সড়ক ও জনপথ বিভাগের অনুকূলে রাষ্ট্রকে। মামলা চলমান অবস্থায় এক ডজনেরও বেশি অস্থায়ী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়। আসবাবপত্র তৈরী ও মাংস বিক্রির দোকান নির্মাণ করে ব্যবসা পরিচালনা করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি গুরুত্বসহকারে পরিচালনা করতে ব্যর্থ হওয়ায় বাদী পক্ষের প্রতি আদেশ দেন আদালত। এঘটনায় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাই দায়ী বলে মনে করে সচেতন মহল। ওই আদেশের বিরুদ্ধে আবার ঝালকাঠির সড়ক ও জনপদ বিভাগ আদালতে আপীল করেছে। মামলা চলমান অবস্থায় একটি পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে সেখানে কাঠের আসবাবপত্র তৈরীর পাশাপাশি মালামাল বিক্রি করছে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)’র ডিলার। যা সামনে থেকে দেখলে কাঠের অস্থায়ী ঘরই মনে হবে। এছাড়া আরো স্থাপনা তৈরীর কাজও চলমান রয়েছে ওই জমিতে। যাতে স্থানীয় সচেতন মহলে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

স্থানীয় প্রভাবশালীদের কারণে কেউ মুখ খুলতে সাহস না করায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজনে জানায়,মহসড়কের পাশে কুরবানির হাট বসানোয় সরকার নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় খামারবাড়ি প্রবেশ পথে সরকারী জমিতে থাকা পুকুরে বালু ভরাট করে সেখানে কুরবানির পশুর হাট বসানো হয়েছিলো। পরে পৌর কর্তৃপক্ষ ট্রাক স্ট্যান্ড নির্মাণের প্রস্তুতি নিলে অদৃশ্য কারণে তা বাস্তবায়ন হয়নি। পৈত্রিকসূত্রে ওই জমির মালিকানা দাবী করে সরকারকে বিবাদী করে আদালতে মামলা করা হয়। অদৃশ্য কারণে সরকার পক্ষের উদাসীনতায় গুরুত্বসহকারে মামলা পরিচালনা না করায় আদালতের আদেশে রাষ্ট্রপক্ষ হেরে গিয়ে বাদী পক্ষ জয়ী হন। দীর্ঘ কয়েকবছর মামলা চলায় সেখানে গড়ে ওঠেছে ডজন খানেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে একটি স্থাপনা নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। আরেকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের স্থাপনা নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের জেলা কার্যালয়ের এক কিলোমিটারের মধ্যে এভাবে দখল দেখেও কর্তৃপক্ষ কার্যত কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয়রা। মামলা চলমান অবস্থায় পাকা স্থাপনা নির্মাণ করায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রতি হতাশা প্রকাশ করেন স্থানীয় সচেতনমহল।

এবিষয়ে টিসিবি ডিলার আনোয়ার হোসেন বলেন,“আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি বুঝে নিতে আমরা আদালতে মামলা দায়ের করেছিলাম। আদালত স্বাক্ষ্য প্রমাণ শেষে যে আদেশ দিয়েছে, তা আমাদের পক্ষেই হয়েছে। আদালতের আদেশের পরে আমরা ব্যবসায়ীক কার্যক্রম শুরু করেছি। আপীলেও আমরাই পাবো। যদি আমরা না পাই তাহলে সরকারী জমি থেকে আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নিবো।”

এবিষয়ে ঝালকাঠি সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আল আমিনের কাছে জানতে চাইলেই তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন,“এগুলো আমাদের কাছে জানতে চেয়ে চাপ সৃষ্টি করেন কেন। সরকারী জায়গায় স্থাপনা নির্মাণ করে তা আপনারা (সাংবাদিক) গিয়ে থামিয়ে দেন। ওই জমি নিয়ে মামলা চলে, প্রথমত তারা (স্থানীয়রা) রায় পেয়েছেন। আমরাও ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করেছি। মামলা চলমান অবস্থায় স্থাপনা নির্মাণসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন তারা। আমরাও তাদের লিখিতভাবে নিষেধ করেছি,না শুনলে কি করবো। আপনারাও তো লিখতে পারেন।”

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button