
আব্দুর রহমান রাসেল,রংপুর ব্যুরো: রংপুরের প্রত্যান্ত গ্রাম থেকে উঠে আসা চার নারী ফুটবলার উন্নত প্রশিক্ষণ নিতে ইউরোপের দেশ পর্তুগালে যাচ্ছেন। রংপুর সদর উপজেলার সদ্যপুস্করণী এলাকায় নারী ফুটবলের গ্রামখ্যাত এখানকার বাসিন্দারা বলছেন, পিছিয়ে পড়া অঞ্চল ফুটবল দিয়ে প্রতিনীধিত্ব করবে এখানকার নারীরা। অতীতেও অনেক সাফল্য নিয়ে এসেছে সদ্যপুস্কুরিনী যুব স্পোর্টিং ক্লাব নারী ফুটবলাররা। পর্তুগালে প্রশিক্ষণের সুযোগ পাওয়ার বিষয়টিও আরেকটি বড় সাফল্য। গত সোমবার (৪ এপ্রিল) যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে উন্নত প্রশিক্ষনের জন্য খেলোয়াড়দের নামের চূড়ান্ত তালিকায় বাজিমাত করেছে রংপুরের নাছরিন আক্তার, মৌরাশি আক্তার, শাম্মি আক্তার ও রেখা আক্তার। এরা সবাই সদর উপজেলার পালিচড়া নামের একটি ছোট গ্রামে ফুটবল খেলে। জাতীয় পর্যায়ে ১ লাখ ১০ হাজার ৫৬৫ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে বাছাইকৃতদের নিয়ে বিকেএসপিতে ২ মাস নিবিড় প্রশিক্ষণ প্রদান শেষে বালিকাদের ১১ জনের দলটিকে উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য পর্তুগাল পাঠানো হবে।পর্তুগালে প্রশিক্ষণের সুযোগ পাওয়ায় আনন্দে ভাসছে ফুটবলার ও এখানকার বাসিন্দারা। স্টাইকার নাছরিনের নানি ফজিলা খাতুন বলেন,আমার নাতনি ছোট বেলা থেকে খেলা খেলতেছে। ওর বাবা মা কেউ নাই। আমি খুব কষ্ট করে মানুষ করছি। এখন বিদেশে যাচ্ছে সবার দোয়ায় টেনিং করে ভালো খেলে আসতে পারে। এলাকাবাসিরা বলছেন,বাবা-মা কেই নেই নাছরিন আক্তারের ঠাই পেয়েছেন নানীর কাছে দারিদ্রতা জয় করে আকাশঁ ছোয়ার স্বপ্ন দেখেন এই নারী ফুটবলার। নারী ফুটবলার স্টাইকার নাছরিন আক্তার বলেন, আসলে আমরা ইউরোপের পর্তুগালে যাচ্ছি অনেক ভালো লাগছে। সদ্যপুস্কুরিনী যুব স্পোর্টিং ক্লাবের জন্য বিদেশে প্রশিক্ষণের সুযোগ পাওয়ায় আনন্দিত। আমি গত এক বছর পায়ের লিগামেন্ট ছিড়ে যাওয়ায় ফুটবল খেলা থেকে পিছিয়ে থাকতে হয়েছে। কিস্তু সাবেক রংপুর জেলা পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার সহযোগীতায় অপারশন সম্পন্ন হয়। এর পর থেকে আবারও শুরু করেছি ফুটবল খেলা। জানা গেছে, এরা সবাই সদ্যপুস্কুরিনী যুব স্পোর্টিং ক্লাবে খেলছে, ক্লাবটি ২০২০ সাল থেকে আলোর মুখ দেখা শুরু করে। ক্লাবের সভাপতি ও ফুটবল প্রশিক্ষক মিলন মিয়া জানান, আমাদের সফলতা দিন দিন বাড়ছে। আমাদের লক্ষ্য এই ক্লাবের মাধ্যমে দেশে ভালমানের খেলোয়াড় তৈরিতে ভূমিকা রাখা। আমাদের অনেক পরিকল্পনা রয়েছে, কিন্তু স্পন্সরের অভাবে বাস্তবায়ন করাটা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অজপাড়া গায়ে থেকে কখনো ইউরোপে উন্নত দেশে প্রশিক্ষণের সুযোগ পায়নি। তবে এলাবাসির যে অনুভুতি আমাদের এক ধাপ এগিয়ে দেবে। প্রধান মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই যে অজপাড়া গায়ে ৬ কুটি টাকা ব্যায়ে সদ্যপুস্কুরিনী যুব স্পোর্টিং ক্লাব নারী ফুটবলারদেও জন্য একটি ইউস্টুডিয়াম তৈরি করে দেওয়ার জন্য। একটা কুড়ি আস্তে-আস্তে বেড়ে ওঠে ওদের স্বপ্নটাও একদিন বড় হঠে ওঠবে এমন প্রত্যাশা সবার।