sliderশিরোনামশীর্ষ সংবাদ

ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’, বন্দরে সতর্কতা

সাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। দক্ষিণ পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত হচ্ছে তীব্র ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’। রোববার (২৮ এপ্রিল) কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তামিলনাড়ুতে আছড়ে পড়বে এই ঝড়।
এদিকে, বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরা নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি চেন্নাই থেকে ১১১০ কিলোমিটার এবং অন্ধপ্রদেশের মছলিপত্তনম থেকে ১৩শ কিলোমিটার দূরে আছড়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
১১৫ কিলোমিটার বেগে এই ঝড় তাণ্ডব চালাবে বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন এলাকায়। তামিলনাড়ু, পুদুচেরিতে এই ঝড় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যাবে।
এর প্রভাব পড়তে পারে পার্শ্ববর্তী কেরালা রাজ্যেও। ফলে কেরালায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সোমবার সমুদ্রের পানি আরও উত্তাল হয়ে উঠবে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
অন্ধ্র প্রদেশ ও তামিলনাড়ু উপকূলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রের কাছাকাছি যেতে নিষেধ করা হয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকার লোকজনকে নিরাপদে অবস্থান করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের আট দেশের আবহাওয়া দপ্তরের নির্ধারিত তালিকা থেকে এই অঞ্চলের ঝড়ের নাম দেওয়া হয়। বাংলাদেশের প্রস্তাবিত নাম থেকে এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম হয়েছে ‘ফণী’।
আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, নিরক্ষীয় ভারত মহাসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি সামান্য উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।
এটি শনিবার বিকাল ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১৯৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১৮৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৯২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ১৮৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে জানিয়ে আবহাওয়াবিদ কালাম বলেন, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
সর্বশেষ ডিসেম্বরে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ফেথাই, অক্টোবরে ঘূর্ণিঝড় তিতলি ও নভেম্বরে ঘূর্ণিঝড় গজ সৃষ্টি হয়েছিল।
শনিবার সন্ধ্যা ৬টার পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং কুমিল্লা, নোয়াখালী অঞ্চলসহ ঢাকা, খুলনা রাজশাহী বিভাগের কয়েক স্থানে অস্থায়ী দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিচ্ছিন্নভাবে শিলা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button