sliderবিনোদন

দীপিকার নাক কাটলে কোটি কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা

দীর্ঘ বাধা-বিপত্তির পর আজ বৃহস্পতিবার মুক্তি পেল সঞ্জয় লীলা বনশালির বহুল আলোচিত ছবি ‘পদ্মাবত’। বলিউডের এই ছবিকে কেন্দ্র করে ভারতের উগ্র হিন্দুবাদীরা মারাত্মক সহিংসতা ছড়িয়ে দিচ্ছে। এর মধ্যেই ফের পদ্মাবতী চরিত্রে অভিনয় করা দীপিকা পাড়ুকোনের নাক কাটার হুমকি দিল কানপুরের একটি সংগঠন।
কানপুর ক্ষত্রিয় মহাসভার প্রেসিডেন্ট গজেন্দ্র সিংহ রাজাওয়াত বুধবার সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‘আমরা কানপুরের সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা সংগ্রহ করেছি। যিনি দীপিকার নাক কাটতে পারবেন, তাকে ওই টাকা পুরস্কার দেব।’’
এ দিকে রাজস্থান, হরিয়ানা, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন এক কংগ্রেস সমর্থক। সুপ্রিম কোর্ট আগেই সব রাজ্যে ‘পদ্মাবত’ মুক্তির নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিজেপি শাসিত এই চার রাজ্য বাদে গোটা দেশে ছবিটি মুক্তি পায়। প্রশ্ন ওঠে, ‘পদ্মাবত’ মুক্তির আগে কেন হিংসাত্মক আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ করা গেল না? সোমবার সুপ্রিম কোর্টে সেই মামলার শুনানি।
তবে পশ্চিমবঙ্গে ‘পদ্মাবত’ নিয়ে বুধবারই গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি জানিয়েছেন, ছবি মুক্তির পর আইন শৃঙ্খলার দায়িত্ব নেবে রাজ্য। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের রাজ্যে ছবিটি নিয়ে কোনো বাধা নেই। বজরং দল এটা (গোলমাল) করছে। যারা হাঙ্গামা করছে, বিজেপির উচিত তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখা।’’ তবে পুলিশ আত্মবিশ্বাসী, বাংলায় ছবিটির অবাধ প্রদর্শনে অসুবিধা হবে না।
ছবি মুক্তির আগেই দেশের নানা জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছিল সহিংস বিক্ষোভ। রাজপুত করণি সেনা হুমকি দিয়েছিল, ‘পদ্মাবত’-এর মুক্তি তারা যেকোনো মূল্যে রুখবে। ছবিতে ইতিহাস বিকৃত হয়েছে, এই অভিযোগে শপিং মলে ভাঙচুর চালিয়েছে কয়েকটি সংগঠন। পোড়ানো হয়েছে গাড়ি। স্কুল পড়ুয়া ভর্তি বাসেও ঢিল ছোঁড়া হয়েছে বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি দেখে মাল্টিপ্লেক্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, রাজস্থান, গুজরাত, মধ্য প্রদেশ ও গোয়ায় ছবিটি প্রদর্শন করবে না তারা।
এদিকে সিনেমা হল মালিক ও সাধারণ জনতাকে সাবধান করা হয়েছে ছবিটির প্রদর্শন ও তা গিয়ে দেখার ব্যাপারে। পরিস্থিতি দেখে মাল্টিপ্লেক্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া জানিয়েছে, রাজস্থান, গুজরাত, মধ্য প্রদেশ ও গোয়ায় ছবিটি প্রদর্শন করবে না তারা।
অভিযোগ, গতকাল গুরুগ্রামের জিডি গোয়েঙ্কা স্কুলের বাসে হামলা চালায় কার্ণি সেনার গুন্ডারা। এই পরিস্থিতিতে আজ বন্ধ রাখা হয়েছে শহরের কয়েকটি স্কুল। রবিবার পর্যন্ত বন্ধ থাকবে স্কুলগুলি।
মঙ্গলবার গুজরাতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের পর গতকালও হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ ও রাজস্থানের কিছু এলাকায় সহিংস বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা রাস্তা আটকে বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। বিক্ষোভকারীরা গুরুগ্রামের বজিরপুর-পতৌদি রোডের ওপর অগ্নিসংযোগ করে। দিল্লি-জয়পুর হাইওয়ে আটকে দেয় তারা। একইভাবে আটকে দেওয়া হয় গুরুগ্রামের সোহনা রোড, ছোঁড়া হয় ইটপাটকেল। আগুন দেওয়া হয় একটি বাসে। উত্তর প্রদেশের মিরাটের একটি মলে পদ্মাবতীর বিরোধিতায় বিক্ষোভ দেখানো হয়।
মথুরায় বিক্ষোভকারীরা আটকে দেয় ট্রেন। মধ্য প্রদেশের হোসঙ্গাবাদেও কার্ণি সেনা সদস্যরা অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করে। গাড়িতে আগুন দিয়ে, সিনেমা হলের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়ে ছবি প্রদর্শন রোখার চেষ্টা করে তারা। রাজস্থানের চিতোরগড় দুর্গের কাছে হয় বিরোধ প্রদর্শন। জম্মুর ইন্দ্রা সিনেমা হলের টিকিট কাউন্টারে ইট ছুঁড়ে কাচ ভেঙে দেয়া হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button