sliderঅপরাধশিরোনাম

চাচা পরিকল্পনাকারী আর খুনের মিশনে ফুপাতো ভাই

মিরপুরে শিশু অপহরণের পর হত্যা
রাজধানীর মিরপুর এলাকায় সাইমুম (১১) নামে এক শিশুকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় তার চাচা পরিকল্পনায় ছিলেন বলে জানা গেছে। জন্মসূত্রে ইতালির নাগরিক ছিল শিশু সাইমুম। প্রযুক্তির সহায়তায় তার অপহরণের সঙ্গে জড়িত সাত জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এলাকাবাসীও এ ঘটনায় মর্মাহত।
মিরপুর থানার ওসি মোস্তাজিরুর রহমান জানান, গত ১৭ ডিসেম্বর মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের ‘এ’ ব্লকের ৫৫/৫৬ নম্বর বাড়ির সামনে থেকে সাইমুম নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় শিশুটির মা রুপা বেগম মিরপুর থানায় একটি জিডি (সাধারণ ডায়েরি) করেন। শিশুটির মায়ের অভিযোগ পেয়ে তাকে খুঁজতে শুরু করে পুলিশ। ঐ রাতেই মায়ের মোবাইল ফোনে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে কল আসে। কল আসা ঐ নম্বর পরে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর গতকাল রাতে দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে আরো পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ঐ শিশুর লাশ শাহআলী মার্কেটের ১৪ তলা থেকে উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরো জানান, আসামিরা স্বীকার করেছে যে, ১৭ ডিসেম্বর অপহরণের পর শাহআলী মার্কেটে নেওয়ার পর ঐ দিনই সন্ধ্যায় তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে তারা। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ঐ ছেলের ফুফাতো ভাইও আছেন। অন্যরা ফুফাতো ভাইয়ের বন্ধু। এই হত্যার সঙ্গে সাইমুমের আপন চাচা রনিও জড়িত। তিনি পলাতক রয়েছেন। গত তিন মাস ধরে সাইমুমকে হত্যার পরিকল্পনা করে তারা। ময়নাতদন্ত শেষে ঐ শিশুর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সাইমুমের চাচা রনির সঙ্গে তার মায়ের বাড়ি ও সম্পত্তি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। এ নিয়ে মাঝেমধ্যে হুমকি-ধমকিও দিত ভবঘুরে রনি। পুলিশের ধারণা, সাইমুমকে হত্যা করে সম্পত্তি দখলের পরিকল্পনা ছিল তাদের।
সাইমুমের মামা সাব্বির আহমেদ জানান, শুটির জন্মের দুই বছর পর বাবা আনোয়ার হোসেন মারা যান। এরপর মা রুপা বেগম দেশে ফিরে কবির নামে একজনকে বিয়ে করেন। দুই বছর আগে সাইমুমকে নিয়ে মা বাংলাদেশে আসেন। সে মিরপুর বাংলা স্কুলে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। মিরপুর ৬ নম্বরের ‘এ’ ব্লকে মায়ের সঙ্গে থাকত সাইমুম।
সাব্বির আরো জানান, মুক্তিপণ চাওয়ার পর দরকষাকষি হয়। ১৮ ডিসেম্বর দুপুরে মুক্তিপণ ১ লাখ টাকা ঠিক হয়। তারা একবার বলে মোহাম্মদপুরে টাকা নেবে, আবার মিরপুর ১০ নম্বরে নেবে।
এরপর সন্ধ্যায় জানায়, তারা সাক্ষাতে টাকা নেবে না। অপহরণকারীরা জানায়, তারা ১ লাখ টাকা বিকাশে নেবে। পরে তিনটি বিকাশ নম্বরের মাধ্যমে মোট ৬০ হাজার টাকা পাঠানো হয়। টাকা পাঠানোর পরপরই তারা নম্বর বন্ধ করে দেয়। এরপর পুলিশ বিকাশের সূত্র ধরে সাত জনকে গ্রেপ্তার করে।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button