
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ১৭ মার্চ (মঙ্গলবার) দেশের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ সচিব আনোয়ারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এদিন সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি-বেসরকারি ভবন এবং বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
২০২০ সালের ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মগ্রহণের শতবছর পূর্ণ হবে। বাংলাদেশ ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর এ জন্মশতবর্ষ (মুজিববর্ষ শীর্ষক) উদযাপন করবে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। একইসঙ্গে হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটিও। কমিটির সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা, আওয়ামী লীগের গত সরকারের ১০ জন মন্ত্রী, বর্তমান সরকারের মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, ঢাকার দুই মেয়র, তিন বাহিনীর প্রধান, পুলিশ মহাপরিদর্শক, কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, দুজন সাবেক গভর্নর, বিভিন্ন ধর্মের মানুষের প্রতিনিধি এবং বেশ কয়েকজন সাংবাদিক, শিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মীকে রাখা হয়েছে এই কমিটিতে। প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ড.কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীকে জাতীয় কমিটির সদস্যসচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস গত ১০ জানুয়ারি বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে মুজিববর্ষের ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে। মুজিববর্ষ উদযাপনে দেশ-বিদেশে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী, বঙ্গবন্ধুর নামে আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রবর্তন, ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড’ এবং হাতে হাত রেখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের প্রতিকৃতি গড়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়ার আয়োজন। থাকছে কনসার্টসহ নানা আনন্দ আয়োজন ও রক্তদানসহ সেবাধর্মী কর্মসূচি। প্রকাশ করা হবে জন্মশতবার্ষিকীর বিভিন্ন স্যুভেনির ও স্মারক বক্তৃতা। ১৭ মার্চ মূল অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান এবং বঙ্গবন্ধুর আমলের রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিত্বদের। আমন্ত্রিতদের মধ্যে আছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ, জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন প্রমুখ।
জানা গেছে, জন্মশতবার্ষিকীর মূল আয়োজন শুরু হবে ১৭ মার্চ সূর্যোদয়ের সময়। সকালে ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে সেনাবাহিনীর তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে শুরু হবে মূল অনুষ্ঠান। এদিন ঢাকা ও গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় একইসঙ্গে অনুষ্ঠান শুরু হবে। সকালে টুঙ্গিপাড়ায় থাকবে জাতীয় শিশু দিবসের নানা আয়োজন। বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হবে মূল অনুষ্ঠান। সারাদেশেই এদিন আয়োজন করা হবে আনন্দ র্যালির। সাজানো হবে গুরুত্বপূর্ণ সব স্থাপনা ও সড়কদ্বীপ। এছাড়া হবে দেশি-বিদেশি শিল্পীদের সমন্বয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও।