sliderস্থানীয়

সিংগাইরে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে উত্তোলন করা হচ্ছে জমির মাটি

সিরাজুল ইসলাম, সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) : মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় প্রশাসনকে থোরাই কেয়ার করে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে উত্তোলন করা হচ্ছে জমির মাটি। এতে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি,আশপাশের বাড়ি-ঘর ও রাস্তাঘাট।

উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের খোলাপাড়া এলাকায় একাধিকস্থানে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে প্রতিনিয়ত কৃষিজমি, পুকুর ও বসতবাড়ি সংলগ্ন জায়গা থেকে মাটি উত্তোলন করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী মাটি খেঁকো আব্দুল কুদ্দুস কোম্পানী ও তার লোকজন। এদের ভয়ে আশ-পাশের ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকেরা জিম্মি হয়ে পড়েছেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বেশীরভাগ ক্ষেত্রে এসব জেনেও না জানার ভান করছেন। কখনো ঘটনাস্থলে গেলে ড্রেজার মেশিন বন্ধ করে পাইপ খুলে দিয়ে আসেন। পরক্ষণেই আবারো চালু করা হয়। মাঝে-মধ্যে দিনে বন্ধ রাখলেও চলে সন্ধ্যা থেকে ভোর রাত পর্যন্ত।

সরেজমিন মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে দেখা যায়, খোলাপাড়া গ্রামের হায়েত আলীর বাড়ির পেছনেই অবাধে চলছে ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটি উত্তোলন। ভরাট করা হচ্ছে পাশর্^বর্তী জায়গা। পরবর্তীতে সুবিধামতো বিক্রি করে থাকে এসব মাটি। ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটায় হুমকির মুখে ফসলি জমি ও পাশর্^বর্তী বসতবাড়ি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার একাধিক কৃষক বলেন, ড্রেজার বসিয়ে গভীর করে মাটি কাটার কারণে আমাদের ফসলি জমি ড্রেজিংয়ের গর্তে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কেউ যদি জমি দিতে না চায় তাহলে ভয়ভীতি ও হুমকি-ধমকি দিয়ে জোর করেই সেখান থেকে মাটি কেটে নেয় ভূমি খেঁকোরা। শেষ পর্যন্ত ড্রেজার মালিকদের কাছে কম দামে জমি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন সাধারণ কৃষক। এতে অভিযোগ তো দুরের কথা তারা টু শব্দ পর্যন্ত করতে সাহস পান না। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের লোকজন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসলেও ড্রেজার মেশিন বন্ধ রাখার কথা বলে চলে যান। পরক্ষণেই তারা আবারো মাটি কাটার উৎসবে মেতে ওঠেন। স্থানীয় সংবাদকর্মীদের কাছে ভুক্তভোগীরা নিজেদের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরেন।

ড্রেজার মালিক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, আমার পুকুর থেকে ড্রেজার দিয়ে মাটি কেটে পাশের জমিতে ফেলছি। ৪-৫ ফুট গভীর করে কাটলে পার্শ^বর্তী জমির কোনো সমস্যা হয় না। তাছাড়া বসতবাড়ি থেকে প্রায় একশ শতাংশ দুরে ড্রেজার বসানো হয়েছে। আরেক ড্রেজার মালিক কুদ্দুস কোম্পানীর সহোদর সিরাজুল ইসলাম বলেন, থানায় অবজেকশন জানানোর কথা শুনে আমার ক্ষতি হলেও ড্রেজার বন্ধ করে পাইপ খুলে ফেলেছি।
দীর্ঘদিন যাবত জমিতে অবৈধ ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে অবাধে মাটি কাটার বিষয়টি প্রশাসনের নিরব ভূমিকায় মূলহোতারা থাকছেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। এতে বেড়েই চলছে তাদের কর্মযজ্ঞ ।
বলধারা ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারি কর্মকর্তা মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি স্যারদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আব্দুল কাইয়ুম খান বলেন, গত তিন দিন আগে ওই এলাকা থেকে একটি অবৈধ ড্রেজার ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। অপরটির ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button