
মোঃ কামরুল ইসলাম, রাঙামাটি প্রতিনিধি: নাগরিক সেবা নিশ্চিত না করে কর বৃদ্ধি মানি না,এমনই স্লোগানে মুখর হয়ে উঠল রাঙামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণ। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় রাঙামাটি পৌরসভার মূল গেটের সামনে পৌর কর বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও নাগরিক সমাবেশ করেছে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা কমিটি।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা কমিটির সভাপতি নির্মল বড়ুয়া মিলন। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক জুঁই চাকমা। বক্তব্য রাখেন ভূক্তভোগী সাহিদা বেগম, পার্টির সদর উপজেলা সভাপতি অমর চাকমা, সাধারণ সম্পাদক জুঁই চাকমা এবং সভাপতি নির্মল বড়ুয়া মিলন প্রমুখ।
নাগরিকদের অভিযোগ: সেবা নেই, কর বাড়ানো হচ্ছে
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া সাধারণ মানুষ জানান, পৌর এলাকায় সেবা কার্যত নেই বললেই চলে। প্রতিনিয়ত নাগরিকরা ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, জলাবদ্ধতা,যানজট, চুরি-ছিনতাই আর মব সন্ত্রাসের ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
ভুক্তভোগী সাহিদা বেগম বলেন জন্মনিবন্ধন বা নাগরিক সনদ করতে গেলেই হয়রানি। পৌরসভা আমাদের সমস্যার সমাধান তো করছেই না, বরং উল্টো কর বাড়িয়ে চাপ দিচ্ছে। সেবা বঞ্চনার দীর্ঘ তালিকা, বক্তারা জানান, পৌর এলাকায় নাগরিকদের মৌলিক সেবার সংকট চরমে পৌঁছেছে।
তাদের অভিযোগগুলো হলো। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেই। প্রতিদিন চুরি, ছিনতাই, ডাকাতির ঘটনা বাড়ছে। ফুটপাত দখলমুক্ত না হওয়ায় মানুষ হাঁটতে পারছে না। কাপ্তাই হ্রদে কচুরীপনা জমে জল দূষণ ও দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। শহরে জলাবদ্ধতা ও যানজট নিত্যদিনের সমস্যা।
পৌর অফিসে জন্মনিবন্ধন ও নাগরিক সনদ করতে গিয়ে হয়রানি। মব সন্ত্রাসের আতঙ্কে মানুষ ভীত।
নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে, টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড যথেষ্ট নয়।
অমর চাকমা বলেন যেখানে নাগরিকরা সেবা পাচ্ছেন না, সেখানে হঠাৎ কর বৃদ্ধি অন্যায়। পৌর কর্তৃপক্ষের উচিত সেবার মান উন্নয়ন করা, তারপর কর বাড়ানোর কথা ভাবা।
অবৈধ কর আরোপের অভিযোগ নেতারা অভিযোগ করেন, পৌরসভা এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়িয়েছে। এটি অবৈধ ও জনগণের প্রতি অন্যায্য।
সভাপতি নির্মল বড়ুয়া মিলন বলেন নাগরিক সেবার উন্নয়ন না করে শুধু রাজস্ব আদায়ের দিকে মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। আমরা কর বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানাই।
নাগরিক প্রত্যাশা ও আন্দোলনের হুঁশিয়ারি সমাবেশে বক্তারা পৌরসভাকে সতর্ক করে বলেন, নাগরিক ভোগান্তি বন্ধ ও সেবা নিশ্চিত না করলে এই আন্দোলন আরও জোরদার হবে। তারা সরকারের কাছে টিসিবির ফ্যামেলি কার্ড সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানান।
জুঁই চাকমা বলেন রাঙামাটির মানুষ উন্নত নাগরিক সেবা চান। এজন্য আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া অনেকেই বলেছেন, রাঙামাটি শহরকে বাসযোগ্য রাখতে হলে শুধু কর নয়, প্রয়োজন সুশাসন, নাগরিক সেবা ও স্বচ্ছতা। সাধারণ মানুষের এই প্রত্যাশা পূরণে পৌরসভা কতটা দায়িত্বশীল হবে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।




