মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা: আক্রান্ত ইরান-বাহরাইন-ওমান-কুয়েত
চীনের নতুন করোনাভাইরাসে আতঙ্কিত বিশ্ববাসী। এশিয়া থেকে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে। কয়েক দিনে মৃতের সংখ্যাও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
কভিড-১৯ নামে চীনের এই মহামারি ভাইরাসে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৬৯৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে গোটা পৃথিবীতে আক্রান্ত হয়েছেন ৮০ হাজার ১৪৬ জন।
চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি মৃতের সংখ্যা ইরানে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ১৫ জন। আক্রান্ত ৯৫ জন। যার অধিকাংশই শিয়া পবিত্র নগরীর কৌমের বাসিন্দা। ইরানের স্বাস্থ্য উপমন্ত্রীও আক্রান্ত হয়েছেন করোনাভাইরাসে
তবে দেশটির আধা সরকারি একটি সংবাদমাধ্যম আইএলএনএ জানায়, মৃতের সংখ্যা অন্তত ৫০ জন। কৌম থেকে সরকারি কর্মকর্তাদের এমন দাবি জানায়।
এদিকে বাহরাইনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে নয়জন। ওমানে সংক্রমণ ঘটেছে তিনজনের দেহে। সোমবার প্রথম করোনা সংক্রমণের কথা ঘোষণা করেছিল আরব দেশ দুইটি।
কুয়েত, ইরাক, মিসর, ইসরায়েলেও সংক্রমণ ঘটেছে করোনাভাইরাসের। সোমবার দেশগুলোতে একজন করে আক্রান্তের খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ইরানের সঙ্গে নিজেদের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে ইরাক, পাকিস্তান, আর্মেনিয়া, তুরস্ক। আফগানিস্তান আকাশ ও সড়ক যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির সঙ্গে
মঙ্গলবার ইরান থেকে উড্ডয়ন করা একটি যাত্রীবাহী বিমান আঙ্কারায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিমানটি ইস্তাম্বুলে অবতরণ করার কথা ছিল। বিমানটির ১৩০ জন যাত্রীকে ১৪ দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে বলে জানা গিয়েছে।
করোনা আতঙ্কে ইতালি ও জাপান ভ্রমণে নাগরিকদের সতর্ক করে দিয়েছে সৌদি আরব। ইতালিতে আক্রান্তের সংখ্যা ২৭০, মারা গেছে ৭ জন। দেশটিতে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে ১২টি শহরের অন্তত ৫০ হাজার মানুষকে। জাপানে সংক্রমণ ঘটেছে ১৬০ জনের দেহে, একজনের মৃত্যু ঘটেছে।
চীনের মূল ভূখণ্ডের বাইরে অন্তত ৩০টির বেশি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে কভিড-১৯ নামে এই করোনাভাইরাস। তাইওয়ান, ফিলিপাইন, ফ্রান্সে মারা গেছে একজন করে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ডিসেম্বরের শেষের দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে করোনাভাইরাসটির উৎপত্তি। প্রদেশটিতেই এখন পর্যন্ত মারা গেছে আড়াই হাজারের অধিক।
করোনাভাইরাস শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সংক্রমণ। এই রোগের কোনো প্রতিষেধক এবং ভ্যাকসিন নেই। মৃতদের অধিকাংশই বয়স্ক যাদের আগে থেকেই শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত জটিলতা ছিল।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদ্যন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে। এটি মোড় নিতে পারে নিউমোনিয়া, রেসপিরেটরি ফেইলিউর বা কিডনি অকার্যকারিতার দিকে। পরিণতিতে ঘটতে পারে মৃত্যু।
এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। কারও ক্ষেত্রে ডায়রিয়াও দেখা দিতে পারে। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। সাধারণ ফ্লুর মতোই হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়াতে পারে এ রোগের ভাইরাস।