বীরগঞ্জ প্রতিনিধি : দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনির হোসেন। তার অপকর্মে আতঙ্কিত এলাকাবাসী। চুরি, ছিনতাই, সন্ত্রাসী হামলা, মিথ্যা মামলা সাজিয়ে টাকা আদায় ও ডলারিসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মনিরের বিরুদ্ধে ২০টিরও অধিক মামলা রয়েছে।
সাম্প্রতিক একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, মনির হোসেন তার তালাক প্রাপ্ত স্ত্রী মাহফুজাকে দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে কিভাবে টাকা আদায় করে। যদিও ভিডিওতে থাকা আরেক ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি। কিন্তু ভিডিওটি করেছেন ও কথা বলছেন মনির হোসেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মনির হোসেন বেশ কয়েক বছর থেকেই এই অপকর্ম গুলোর সাথে জড়িত ছিলেন। ইউপি নির্বাচনের আগে মনির হোসেন সকল অপকর্ম প্রায় ছেড়ে দিয়েছিলেন কিন্তু কাউন্সিলর হওয়ার পরেই সে আবার অপকর্ম গুলো শুরু করে দেন। তার এই অপকর্মে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, মনির হোসেন তার স্ত্রীকে লোক দেখানো তালাক দিলেও, তার সেই স্ত্রীর সাথে এখনও অবৈধ সম্পর্ক রেখেছেন। মনির হোসেন তার স্ত্রীকে দিয়ে টিকটকের মাধ্যমে, প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ নিয়ে এসে তাদেরকে জিম্মি করে ভিডিও বানিয়ে টাকা আদায় করে এবং কেউ টাকা দিতে না পারলে মনির তার তালাক প্রাপ্ত স্ত্রীকে দিয়ে ধর্ষণ মামলা দেয়।
তাদের এই মিথ্যা ধর্ষণ মামলার শিকার শুধু বাইরের মানুষ নয়। তার নিজ এলাকাতেও দশ জনের অধিক মানুষ শিকার হয়েছে এবং অনেক পরিবারকে এই রকম মামলা দিয়ে একেবারে নিঃস্ব করে দিয়েছে। এখনও তার এলাকার অনেক মানুষ পালিয়ে বেড়াচ্ছেন মামলার ভয়ে।
ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে, স্থানীয়রা বলেন, “মনির হোসেন কে তিনি কি করেন? এটা যদি প্রশাসন তদন্ত করেন এবং তার বিষয় গুলো আমলে নেয়। তাহলে সকল সত্য সহজেই জনসম্মুখে আসবে। আর এতোকিছু জানার পরেও যদি প্রশাসন নিবর থাকে। তাহলে এলাকাবাসী হিসেবে আমাদের কষ্ট হলেও সহ্য করে যেতে হবে। আমাদের বুঝতে হবে মনির হোসেন অসীম ক্ষমতার অধিকারী। তাকে দাবিয়ে রাখার মতো কোনো আইন বাংলাদেশে নেই”।
অভিযোগের বিষয়ে স্থানীয়রা জানান, মনির হোসেন এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে গেলে, সে বাসায় এসে বা রাস্তায় দেখতে পেলে বিভিন্ন হুমকি দেয়। কিছুদিন পরে সে কোনো না কোনো ভাবে বাদীকেই ফাঁসিয়ে দেয়। এবং উল্টো মামলার ভয় দেখায়। নতুন করে অভিযোগ দেওয়ার কিছু নেই। তার বিরুদ্ধে যেগুলো মামলা ও অভিযোগ থানায় আছে। সেগুলো খতিয়ে দেখলে বা এলাকায় প্রশাসনের লোক আসলেই সব জানতে পারবে”।
মনিরের বিষয়ে জানার জন্য, ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাক আহাম্মদ সিদ্দিকী মানিকের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে, ফোনে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে জানতে চাইলে, নির্বাহী অফিসার ফজলে এলাহী জানান, “অভিযোগ ও প্রমাণ পাওয়া গেলে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নিকট অপরাধের গভীরতা অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হবে”।