slider

ঠাকুরগাঁওয়ে একটি ভুলে ফাহিমের ১০ বছরের স্বপ্ন ভঙ্গ

মোঃ মজিবর রহমান শেখ, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মথূরাপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের এস,এস,সি পরিক্ষার্থী ফাহিম আহম্মেদ। পড়ালেখা করেছেন বিজ্ঞান বিভাগে। পরিক্ষার আগের দিন প্রবেশপত্র হাতে নিয়ে দেখেন রেজিস্ট্রেশন হয়েছে মানবিক বিভাগে। তাই তাকে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ালেখা করেও পরিক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে হচ্ছে মানবিকের হয়ে। যা মেনে নিতে পারছেনা ফাহিম। এ কারণে ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত হয়ে পরেছে ফাহিমসহ অসহায় পরিবারটি। রেজিস্ট্রেশন করার সময় শারিরিকভাবে অসুস্থ্য হওয়ায় বিদ্যালয়ে যেতে পারেনি ফাহিম। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূলের কারণে ফাহিমের রেজিস্ট্রেশন হয় মানবিক বিভাগে। আবার রেজিস্ট্রেশনের পরে প্রিন্ট কপিতেও তাকে না জানিয়ে স্বাক্ষরও নেওয়া হয় এমন অভিযোগ তুলছেন এস,এস,সি পরিক্ষার্থী ফাহিম আহম্মেদ। শুধু ফাহিম নয় বিজ্ঞানের ছাত্র হয়ে মানবিক বিভাগে পরিক্ষা দিচ্ছে এ খবর মেনে নিতে পারছেনা তার সহপাঠিরাও।

ফাহিমের একাধিক সহপাঠি জানান, দুই বছরে কোন শিক্ষক বলেনি তার রেজিস্ট্রেশন মানবিক বিভাগে হয়েছে। একসাথে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ালেখা সহ ফরম ফিলাপ করেছি। ব্যবহারিক ক্লাশ গুলিও এক সাথেই করেছি। তাহলে ফাহিম মানবিকে কেমন করে হয়? ফাহিম বলেন, দুই বছর বিজ্ঞান বিভাগে লেখাপড়া করেছি। বিজ্ঞান বিভাগের জন্য যে ফি দিতে লাগে তা দিয়ে ফরম ফিলাপও করেছি। বিজ্ঞান বিভাগে পড়ালেখা করে আমি মানবিক বিভাগে কেমন করে পরিক্ষা দিব। বিষয়টি দেখার পরে বিদ্যালয়ে যোগাযোগ করলে প্রধান শিক্ষক আমাকে পরিক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে বলে। সে কারণে বাংলা পরিক্ষায় অংশ গ্রহণ করেছি। আমার বিভাগ পরিবর্তন না হলে আমি মানবিকের বিষয় গুলো পাশ করতে পারবনা। একটি ভুলের কারণে আমার ১০ বছরের স্বপ্ন ভঙ্গের পথে। এ কষ্ট আমি মেনে নিতে পারছিনা। ফাহিমের মা ফাতেমা বেগম বলেন, অন্যের বাড়িতে কাজ করে ছেলেকে পড়ালেখা করাচ্ছি। আমার ছেলের সাথে এমন হয়েছে কিছুতেই মেনে নিতে পারছিনা। পরিক্ষার আগের দিন থেকে বিষয়টি জানার পরে দারে দারে ঘুরছি। আমার ছেলেকে নিয়ে খুব আতংকে আছি। কোন সময় কি করে বসে বুঝতে পারছিনা। যে সময় রেজিস্ট্রেশনের কাগজে স্বাক্ষর নেয় তখন ফাহিম অসুস্থ্য ছিল। তারা না বলে স্বাক্ষর নিয়েছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সমাধান করবে বলেছেন। সমাধান না হলে আমার ছেলের জীবন নষ্ট হয়ে যাবে। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মথূরাপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, এ ভুলের জন্য ফাহিম দায়ী। তার রেজিস্ট্রেশন হয়েছে মানবিকে। সে দেখে শুনে প্রিন্ট কপিতে স্বাক্ষর করেছে। পরিক্ষার ১০ দিন আগে প্রবেশপত্র দেওয়া হয়েছে। তখন কিছু বলেনি পরিক্ষার আগের দিন বিষয়টি অবগত করেছে। এতে আমরাও বেশ বিব্রত। তার ইচ্ছে অনুযায়ি বিভাগ পরিবর্তনের জন্য দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে চেস্টা চলছে। দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর কামরুল হাসান বলেন, মানবিক কারণে শিক্ষার্থীদের ভূল সংশোধন চলমান রয়েছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আসলে সংশোধনের চেস্টা করা হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button