অপরাধশিরোনাম

এবার কনের যৌতুক দাবি : শাশুড়ির মামলা

এবার যৌতুক দাবি করেছে কনে। তবে স্বামীর কাছে নয়, শাশুড়ির কাছে। ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি নিয়ে ঢাকার সিএমএম আদালতে শ্বাশুড়ি বাদি হয়ে কনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশ বিভাগের পিবিআই-কে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

ঢাকার জেলার রূপনগর দুয়াড়ী পাড়ার মোঃ আবুল হোসেন এর স্ত্রী রহিমা বেগম বাদি হয়ে ছেলের  বউয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- ছেলের বউ শারমিন ইসলাম (২৩), মোঃ শাহ আলম, রাজিয়া বেগম, শাহরীন ইসলাম (কলি)।

মামলায় ছেলের বউ শারমীন ইসলাম ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অভিযোগে বাদি বলেন-আসামি শারমীন ইসলাম অন্যান্য আসামিদের সহযোগিতায় প্রতারণা করে সরল ছেলেদেরকে আকৃষ্ট করে বিয়ে করে। অতঃপর কিছু দিন যেতে না যেতে তার চরিত্রের বিভিন্ন খারাপ দিক ফুটে উঠে। তারপর শারমীন ইসলাম তার সহযোগীদের মাধ্যমে কাবিনের টাকা ও আর আনুষঙ্গিক টাকা দাবি করে বিয়ে বিচ্ছিন্ন করে। এভাবে সে এই নিয়ে ৭টি বিয়ে করে। তারই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ তার ছেলেকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে। অতঃপর তার স্বভাব চরিত্রের বিভিন্ন খারাপ দিক ধরা পড়ায় তার ছেলে বিদেশ চলে যায়। এরপর ছেলেকে না পেয়ে আসামি গত ২৪ মে তারিখে বাদিনীর নিকট কাবিনের ৩ লাখ এবং যৌতুক হিসাবে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে শ্বাশুড়ীকে নাজেহাল করবে বলে হুমকি দেয়।

কিন্তু শাশুড়ি টাকা পরিশোধ না করায় আসামি তার অন্য সহযোগীদের নিয়ে গত ৭ জুন রাতে বাদির কাছে টাকা দিতে গালমন্দ করে ভয়ভীতি দেখায় ও হুমকি দেয়। এ নিয়ে বাদিনী রূপনগর থানায় পরপর দুটি জিডি করেন। কিন্তু কোনো ফল না পেয়ে বাধ্য হয়ে আদালতে এ মামলা দায়ের করে। মামলায় উল্লেখ করা হয়- আসামী শারমিন ইসলাম নিলা ২০১০ সালে ১৫ অক্টোবর  মোঃ নান্টু, পিতা-দেলোয়ারকে কুমারী সেজে বিয়ে করে, সেখানে আসামির পিতার নাম ফিরোজ মিয়া, মাতা-রাজিয়া উল্লেখ করে, জন্ম তারিখ-১৭/১০/১৯৮৭ইং, অতঃপর তার অাসল চরিত্র ধরা পড়ায় আসামি তার সহযোগীদের নিয়ে নান্টুর কাছ থেকে ২ লাখ টাকা নিয়ে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটায়। এরপর ২০১৩ সালে ১৮ মার্চ তারিখে দুবাই এক হোটেলে চাকরি করার সুবাদে পরিচয় হয় আব্দুল ওয়াদুদের। সেখানে প্রেমের ফাঁদে ফেলে তাকে বিয়ে করতে বাধ্য করে। কাবিন নামায় আসামির পিতা শাহ আলম, জন্ম তারিখ-১৭/১০/১৯৯২ইং, নিজেকে কুমারি দাবি করে। দেনমোহর নির্ধারণ করা হয় ২ লাখ টাকা।

তিন-চার মাস যেতে না যেতে ঝগড়া সৃষ্টি করে স্বামীর বিরুদ্ধে ঢাকার সি.এম.এম আদালতে  মামলা (১৭/১৪) দায়ের করেন। অতঃপর ওয়াদুদ ২ লাখ টাকা দিয়ে এ মামলা থেকে অব্যাহতি পায়। এরপর ২০১৪ সালে ৩ জুলাই তারিখে ইমরান শেখের সাথে প্রেম প্রেম খেলে তাকে বাধ্য করে বিয়ে করতে। সেখানে আসামীর নাম শাহরিন ইসলাম নিলা উল্লেখ করে, পিতা-শাহআলম, মাতা-রাজিয়া, জন্ম তারিখ-০৭/১০/১৯৯২ইং এবং নিজেকে কুমারী দাবি করা হয়। দেনমোহর ছিল ২ লাখ টাকা। ৮-৯ মাসের মাথায় আসামির খারাপ স্বভাব চরিত্র ধরা পড়ায় ইমরান শেখ তাকে স্ত্রী হিসাবে অস্বীকার করে।

অতঃপর ২০১৫ সালে ২৩ জুলাই তারিখে তার বিরুদ্ধে যৌতুকের আইনের ৪ ধারায় ৬৪/১৫ মামলা দায়ের করে। ইমরান শেখের সাথে বিবাহ অটুট থাকা অবস্থায় আসামি অন্যদের সহযোগিতায় বাদিনীর ছেলে সুমনকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বাধ্য করে বিয়ে করতে। ২০১৬ সালে ১৩ জানুয়ারি তারিখে বিয়ে হয়। এখানে আসামির নিজেকে পরিচয়ে বলেন- নাম শারমিন ইসলাম, পিতা-শাহ আলম, জেলা-পিরোজপুর, জন্ম তারিখ-১৭/১০/১৯৯৩ইং। নিজেকে কুমারী দাবি করে। দেনমোহর নির্ধারন করা হয় ৩ লাখ টাকা।

এ অবস্থায় বাদিনীর ছেলে সুমনের আয় রোজগার না থাকায় মায়ের সহযোগিতায় গত ২৭/০২/১৬ইং তারিখে সৌদিআরব চলে যায়। এ সংবাদ পেয়ে আসামী অন্যান্য আসামীদের সহযোগিতায বাদিনীর বাসায় গিয়ে ডাক চিৎকার বিভিন্ন ভয়ভীতি বাদিনীর নিকট কাবিনের ৩ লাখ টাকা ও যৌতুক হিসাবে ৫ লাখ টাকা দাবি করে।

টাকা না দেয়া হলে শারিরীক ও মানসিকভাবে চরম ক্ষতি করার হুমকি দেয়। এ ঘটনায় ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলা দায়ের করেন বাদি।

সুত্র: নয়াদিগন্ত

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button