এক বছরে সমাধান না হলে রোহিঙ্গারা ঠেঙ্গারচরে : তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু জানিয়েছেন, এক বছরের মধ্যে রোহিঙ্গা সংকটের কূটনৈতিক সমাধান না হলে রোহিঙ্গাদের ঠেঙ্গারচর দ্বীপে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি ও এটিএন বাংলার যৌথ আয়োজনে আজ মঙ্গলবার রাজধানীর এফডিসিতে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা নিয়ে এক ছায়া সংসদ বিতর্ক অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
সংসদীয় বিতর্কে অংশ নেয় বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি ও প্রাইম ইউনিভার্সিটির দুটি দল।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে জাতিসংঘের উদ্যোগে ত্রিপক্ষীয় কূটনৈতিক সমঝোতা প্রয়োজন। এ সংকট মোকাবিলায় তিনি বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ভূমিকারও প্রশংসা করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার তিন স্তরের পরিকল্পনা নিয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে বুকে টেনে নিয়ে খাওয়াচ্ছি, পড়াচ্ছি। স্বল্পমেয়াদি, দুই হাজার একর জায়গা চিহ্নিত করেছি ওদেরকে রাখার জন্য। আর দীর্ঘস্থায়ী আমরা ওদের একটা দ্বীপে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছি। যদি সময় লাগে তাহলে আমরা এক বছর দেখব। এক বছরের ভেতরে যদি সমাধান না হয়, তাহলে আমরা ঠেঙ্গারচর বা অন্য চরে মিয়ানমারের সব নাগরিককে নিয়ে যাব।’
হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘মিয়ানমার সমস্যা আমাদের ঘাড়ে এসে পড়েছে। ভারতের মতো মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্র। মিয়ানমার তাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। কিন্তু মিয়ানমার বাংলাদেশ আক্রমণ করেনি, আমরাও মিয়ানমার আক্রমণ করিনি। কিন্তু তারা রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি বর্বরোচিত নির্যাতন চালিয়েছে, গণহত্যা চালিয়েছে এবং অত্যাচার করেছে; যার ফলে রোহিঙ্গারা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণ করেছে। এখন ধৈর্য ধরে মুনশিয়ানার সঙ্গে এ সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে। এটি আন্তর্জাতিক সমস্যা, যা মানবিকভাবে বিবেচনা করা জরুরি। এ নিয়ে রাজনীতি করা থেকে বিরত থাকা উচিত।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এই ঘটনার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মাত্রা আছে। এর সমাধান কী, সামরিক পথে সমাধান হবে, নাকি রাজনৈতিক নাকি কূটনৈতিক পথে সমাধান হবে? এই সমস্যা তুলে ধরতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম। এই সংকটে বাংলাদেশ কোনো আন্তর্জাতিক সাহায্য না চেয়ে একাই মোকাবিলার চেষ্টা করেছে। তবে বন্ধুরাষ্ট্রগুলো নানা রকম রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে এসেছে। বাংলাদেশ সরকার মনে করে ১৬ কোটি মানুষ খেতে পারলে, তারাও খেতে পারবে। জাতিসংঘের ভূমিকা, শেখ হাসিনার উদ্যোগ এবং কূটনৈতিক উদ্যোগের মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের প্রক্রিয়া চলছে। কফি আনান কমিশনের রিপোর্টকে ভিত্তি করে সমাধান বের করতে হবে।