sliderঅপরাধশিরোনাম

‘আজ আমরা কাঁদছি, কাল আপনারাও কাঁদবেন’

আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবসে আকুতি

পতাকা ডেস্ক :‘বাবা গুমের তিন মাস পর মা আইন ও সালিশ কেন্দ্রে যাওয়ার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। যখন মায়ের লাশ আনতে যাই, তখন থানায় বাবা মৃত লিখে মায়ের লাশ নিয়ে আসতে হয়েছে। আজ আমরা কাঁদছি, কাল আপনারাও কাঁদবেন।’

এভাবেই বাবাকে খুঁজে পাওয়ার আকুতি জানাচ্ছিলেন ২০১৪ সালে নিখোঁজ হওয়া মফিজুল ইসলামের ছেলে সহিদুল ইসলাম।

বুধবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনে ‘আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস’ উপলক্ষে মায়ের ডাক আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সহিদুল ইসলাম।

‘১০ বছর ধরে বাবাকে দেখি না। আমি বাবার ছবি নিয়ে গুম প্রতিরোধ দিবস পালন করতে চাই না। বাবার হাত ধরে বাবা দিবস পালন করতে চাই।’ এভাবেই আকুতি জানাচ্ছিলেন ১০ বছর আগে নিখোঁজ হওয়া বংশাল থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পারভেজ হোসেনের মেয়ে আদিবা ইসলাম হৃদি।

আদিবা ইসলামের বয়স এখন ১২ বছর। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে আদিবার বাবা পারভেজ হোসেনকে রাজধানীর শাহবাগ থেকে কে বা কারা তুলে নিয়ে যায়। এরপর গত ১০ বছরেও তার আর কোনো খোঁজ নেই। এ নিয়ে সরকার বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ কিছু বলতে পারছে না।

২০১৪ সালে নিখোঁজ হওয়া চঞ্চল হোসেনের ১০ বছর বয়সী ছেলে আহাদ হোসেন বলে, আমার বন্ধুরা যখন জিজ্ঞেস করে তোমার বাবা কোথায়, আমি বলি, বিদেশে।

খিলগাঁওয়ে গুলিতে নিহত নুরুজ্জামান জনির বাবা ইয়াকুব আলী বলেন, ‘একটা মানুষকে খুন করতে কয়টা গুলি লাগে? আমার জনিকে ওরা ১৮টা গুলি করেছিল।’

২০১৩ সালের ৩ এপ্রিল ঢাকার মিরপুর থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন মিরাজ খান। এর চার মাস পর চট্টগ্রাম ঈদগাহ এলাকা থেকে মিরাজের ভাই ফিরোজ খানকেও তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ফিরোজ খানের স্ত্রী আমেনা আক্তার বৃষ্টি বলেন, ‘গত ১১টা বছর সেলাইয়ের কাজ করে ছেলেকে নিয়ে কোনো রকম বেঁচে আছি।’

নিখোঁজ সাইদুল ইসলাম সুমনের মা হাজেরা খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) নির্বাহী সভাপতি তানিয়া রব, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী, মায়ের ডাকের সমন্বয়কারী আফরোজা ইসলাম আঁখি প্রমুখ।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button