sliderস্থানীয়

সিংড়ায় তিন জমজ সন্তানকে নিয়ে চিন্তিত দিনমজুর বাবা মা

নাটোর প্রতিনিধি: চারমাস আগে এক সঙ্গে জন্ম নিয়েছিল তিন কন্যা সন্তান । নাম রাখা হয় পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা। তিনটি সন্তানই সুস্থ-সবল হওয়ায় বাবা-মায়ের মন ছিল আনন্দে ভরপুর । কিন্তু কয়েকদিন যেতে না যেতেই তাদের সে আনন্দ বিলীন হতে চলেছে। নাড়িছেঁড়া ধন প্রিয় তিন সন্তান দের প্রতিদিনের দুধ, ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন দিনমজুর বাবা। এতে চরম হতাশায় দিন কাটছে নবজাতক সন্তানের বাবা-মায়ে সন্তানদের নিয়ে খুব বিপদের মধ্যে আছি ভাই, ঘরে নিজেদের খাবারই নেই এর মধ্যে খাবার কিনে শিশু তিনটিকে বাঁচাবো কি করে”। কথা গুলো বলতে বলতেই কেঁদে ফেললেন, নাটোরের সিংড়া পৌর পাড়ার বাসিন্দা তিন জমজ কন্যা সন্তানের মা সুমি আক্তার। সুমি আক্তারের স্বামী আরিফুল ইসলাম একজন দিনমজুর। কখনো রাজমিস্ত্রী, আবার কখনো জমা রিক্স্রা চালিয়ে যে আয় হয় তা দিয়ে কোন রকম সংসার চালিয়ে আসছিল দিনমজুর আরিফুল। আজ থেকে ৬ বছর আগে বিবাহ হওয়া এই দম্পতির । ৫ বছর বয়সী একটি মেয়ে সন্তানের পর ৪ মাস আগে জন্ম নেয় তিন জমজ মেয়ে। প্রথমত ধার দেনা করে নবজাতক শিশু তিনটিকে খাবার জোগাড় করতে পারলেও এখন তা আর সম্ভব হচ্ছে না। অল্প আয়ে প্রতিদিন শিশুদের খাবার জোগাড় করতে মহা বিপাকে পড়েছেন পরিবারটি। দিনের পর দিন খাদ্যের অভাবে অপুষ্টিতে ভুগছে এই তিন জমজ শিশু।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিংড়া পৌর পাড়ার একটি ভাড়াটে বাসার চৌকিতে বসে জমজ তিন শিশুকে ভাতের মাড় ও সুজি খাওয়াচ্ছেন মা সুমি আক্তার। তার চোখে মুখে ক্লান্তি ও চিন্তার ছাপ। সুমি আক্তার জানান, খিদের পেটে সন্তানদের কান্না দেখলে সহ্য করতে পারি না । কোন কোন দিন নিজেরা না খেয়ে থাকি। ওই টাকা দিয়ে খাবার কিনে ওদের খাওয়াই। কথা গুলো বলতে বলতেই কেঁদে ফেলেন সুমি আক্তার। কান্না থামিয়ে সুমি আক্তার আরও জানায়, আজ ৭ দিন ধরে ওদের দুধ কিনে দিতে পারছিনা। শুধু ভাতের মাড় আর সুজি খাওয়াচ্ছি। ওদের বাবা জমা রিক্সা চালিয়ে প্রতিদিন ৩শত থেকে ৪শত টাকা আয় করে । সে টাকা দিয়ে চাল, ডাল আর বাজার করতেই শেষ হয়ে যায় । তাঁর মধ্যে আবার তিন সন্তানের জন্য দুধ কেনা ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদা খাতুন বলেন, বিষটি অবগত হলাম। আমরা তিন কন্যা সন্তানের বিষয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছি। যদি তারা অসর্মথবান হন তাহলে দরিদ্র বাবা-মায়ের ঘরে জন্ম নেওয়া সন্তান তিনটি যাতে সুন্দর ভাবে বেড়ে উঠতে পারে সেজন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা করা হবে । তবে দরিদ্র বাবা-মায়ের সন্তান তিনটি যেন সুন্দরভাবে বেড়ে উঠতে পারে সেজন্য সমাজের স্বচ্ছল মানুষদেরকে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button