সফল ব্যক্তিদের ১০০ জীবনচর্চা: অনুশীলন ২৪- ‘অপরকে ক্ষমা করুন’

‘সফল ব্যক্তিরা করে এমন ১০০টি বিষয়: সফল জীবনযাপনের ছোট্ট অনুশীলন’ বইটি হাতে অনুবাদক বুশরা আমিন তুবা। ছবি: নূর, প্রিয়.কম।
প্রিয় পাঠক, আপনাদের জন্য রয়েছে আমাদের এই নতুন আয়োজন। এখানে ‘দ্য সিল্ক রোড পার্টনারশিপ’ এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা নাইজেল কাম্বারল্যান্ড লিখিত একটি বইয়ের সাথে আপনাদের পরিচয় করানো হবে। বইটির শিরোনাম, ‘হান্ড্রেড থিংস সাকসেসফুল পিপল ডু: লিটল এক্সারসাইজেস ফর সাকসেসফুল লিভিং’। এবং আমরা বইটি অনুবাদ করছি “সফল ব্যক্তিদের ১০০ জীবনচর্চা” শিরোনামে। সপ্তাহব্যাপী এই আয়োজনে প্রতিদিন এই বই থেকে একটি করে বিষয় আলোচনা করা হবে। আজকের আয়োজনে জেনে নিন সফল ব্যক্তিদের করা ২৩ নম্বর বিষয়টি সম্পর্কে। বইটি অনুবাদ করেছেন বুশরা আমিন তুবা।
অনুশীলন ২৪- ‘অপরকে ক্ষমা করুন’
অন্যকে ক্ষমা করতে না চাইলে আপনি কখনোই মনে শান্তি অনুভব করবেন না। শুধু শুধু মন খারাপ করে, রাগ পুষে রাখলে কিংবা হিংসা করলে কখনোই ভালো বোধ করবেন না আপনি। কোন একটা বইয়ে আমি পড়েছিলাম, রাগ পুষে রাখা এবং অন্যকে ক্ষমা না করা হলো নিজে বিষ খাওয়া এবং অন্য মানুষের মৃত্যু কামনা করার মতন নিকৃষ্ট!
জীবনে সফলতা অর্জন করতে চাইলে যারা আপনাকে কষ্ট দিয়েছে কিংবা নীচু চোখে দেখেছে তাদের সবাইকে ক্ষমা করে দেওয়া উচিত। এজন্য নয় যে তারা সঠিক ছিলো কিংবা তারা যা করেছে তা আপনি ভুলে গিয়েছেন। বরং এজন্য যে তাদের ক্ষমা করে দিলে আপনি পরিপূর্ণ ও ইতিবাচক একটি জীবন পাবেন। তাদের ক্ষমা করে আপনি সরে যাওয়ার পথ খুঁজে পাবেন। নিজের বানানো কারাগার থেকে আপনি যেন তাদের মুক্ত করে দিলেন। এটা আপনার অবশ্যই বুঝতে হবে যে অন্যকে ক্ষমা করলে আপনি নিজের জন্যই একটি দারুণ পৃথিবী তৈরি করে নিতে পারবেন।
অন্যকে ক্ষমা করা মানে এই নয় যে আপনি কষ্ট পাননি কিংবা কারো উপর রাগ করা দোষের কোন কিছু। অন্যকে ক্ষমা করে আপনি এটাই মনে মনে বলছেন যে, ‘আমি আবার আবেগ এবং অনুভূতি কোনভাবেই তোমার মতন মানুষের জন্য নষ্ট করতে চাচ্ছি না’। মানুষকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার সময় আমি একটা ব্যাপার সব সময় খেয়াল করি যে তারা যেন সবকিছু ভুলে গিয়ে নতুন জীবন শুরু করতে পারেন।
কাউকে ক্ষমা করা এবং নতুনভাবে বিশ্বাস করতে শেখা সর্বদা পাশাপাশি চলে। কোন সম্পর্কে যখন খারাপ কিছু ঘটে তখন সেটি ছেড়ে দেওয়া উচিত কিংবা পুনরায় শুরু করতে শেখা উচিত। কাউকে ক্ষমা করে দিলে মন থেকে নেতিবাচকতা দূর হয় এবং নতুনভাবে সম্পর্কের সূচনা ঘটে।
ক্ষমা করে দেওয়ার ব্যাপারে সততা অবলম্বন করুন
প্রায়ই আমরা নিজেদের বোকা বানাই এটা ভেবে যে মানুষকে ক্ষমা করে দেওয়ার মতন কোন কারণ নেই। যেমন-
– অবশ্যই আমি রাগ করিনি কারণ আমি অফিসে কোন প্রমোশন পাইনি
– আমার সহকর্মীরা আমার আইডিয়া নিয়ে প্রেজেন্টেশন দিয়েছে। আমি এতে কিছু মনে করিনি
– না, আমি আমার সঙ্গীর অবিশ্বাসতার জন্য কোন কষ্ট পাইনি
একটু চিন্তা করুন কোন ব্যাপারটা আপনাকে কষ্ট দিয়েছে যেটি আপনি এড়িয়ে চলছেন? নিজের সঙ্গে সৎ থাকুন। অন্য সবার সামনে এমনভাবে থাকতে পারেন যেন আপনার কিছুই হয়নি। মাঝে মাঝে আমরা আমাদের সত্যিকারের অনুভূতি কারো সঙ্গে ভাগাভাগি করতে চাই না এবং সেটি ঠিক আছে।
অন্য মানুষকে ক্ষমা করে দেওয়ার মতন সময় এবং সুযোগ আপনাকেই খুঁজে নিতে হবে। এতে করে আপনার অনেক দিন, সপ্তাহ কিংবা আরো বেশি সময় লেগে যেতে পারে। আপনি ভরসা করেন এমন কারো সাথে নিজের অনুভূতিগুলো বর্ণনা করতে পারেন।
ক্ষমা করার নিজস্ব উপায় খুঁজে বের করুন
কিভাবে আপনি কাউকে ক্ষমা করবেন সেটি নিতান্তই আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার কিন্তু আপনাকে প্রথমে আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে যে আপনি ক্ষমা করবেন। তবে তাকে লিখে জানানো অন্যরকম একটা অনুভূতি সঞ্চার করবে। তারা ক্ষমা চান কী না সেটা ব্যাপার না কিন্তু আপনার কাজ আপনিই করবেন। আপনি আপনার পরিবারের সদস্যদের কিংবা বন্ধুদের ও বলতে পারেন যে আপনি অমুক ব্যক্তিকে ক্ষমা করেছেন এবং ভালো বোধ করছেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আপনাকে নেতিবাচক যাবতীয় অনুভূতি ঝেড়ে ফেলতে হবে। তাহলেই আপনি ফুরফুরে অনুভব করবেন।