sliderউপমহাদেশশিরোনাম

ভারতের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান, সেনাবাহিনী সরাবে না চীন!

আগামী সপ্তাহে ব্রিকস সম্মেলনে দেখা হবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর। কিন্তু তার আগে কার্যত নিষ্ফলা গেল ভারত-চীন দু’দেশের সেনাকর্তাদের ১৯তম বৈঠক। পূর্ব লাদাখের সীমান্ত সমস্যা মেটাতে দু’দিন আগে চুসুল-মলডো সীমান্তবর্তী এলাকায় ওই বৈঠক হয়। সূত্রের মতে, ডেপসাং ও ডেমচক দু’টি এলাকা থেকে নিজেদের সেনাবাহিনী সরাতে রাজি হয়নি চীন। গত তিন বছরে অন্যান্য বৈঠকের মতোই এবারের বৈঠকটিও ব্যর্থ হয়েছে। গালওয়ান সংঘর্ষের আগের স্থিতাবস্থা কবে ফিরবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন ভারতের সরকার বিরোধীরা।

অবশ্য ভারত সরকারের একটি সূত্রের দাবি, দু’দিন আগের বৈঠকটি একেবারে ব্যর্থ হয়েছে বলা যায় না। এর আগে এপ্রিল মাসে হওয়া বৈঠকে দু’দেশ একসাথে যৌথ বিবৃতি পর্যন্ত দেয়নি। এবার অন্তত যৌথ বিবৃতি দিয়ে দু’দেশই সীমান্তে শান্তি ও সুস্থিরতা বজায় রাখার প্রশ্নে একমত হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে সীমান্তে শান্তি ফেরাতেও রাজি হয়েছে।

ভারতীয় পক্ষ দাবি করছে যে তিন বছর আগে গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় অংশে ঢুকে পড়ে চীন সেনাবাহিনী। তার পর থেকেই সেনাবাহিনী প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা জারি রয়েছে দু’দেশের মধ্যে। সূত্রের মতে, পরশুর বৈঠকে ডেপসাং এলাকায় চীন সেনাসদস্যদের পিছিয়ে যাওয়ার দাবি জানানো হয়। কারণ চীন সেনাসদস্যদের উপস্থিতির দরুন ওই এলাকায় নজরদারি চালাতে পারছে না ভারত। ফলে দৌলত বেগ ওল্ডি এয়ার স্ট্রিপ অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এ ছাড়া চীন সেনাসদস্যদের উপস্থিতির কারণে ডেপসাং এলাকায় থাকা ওয়াই জংশনেও নজরদারি চালাতে পারছে না ভারত।

ভারতীয় সূত্রের দাবি, নিজেদের সীমান্ত ছেড়ে প্রায় ১৮ কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে এসে বসে রয়েছে চীন সেনাবাহিনী। তার ফলে ৬৫টি পেট্রোলিং পয়েন্টের মধ্যে ২৬টিতে নজরদারি বন্ধ রাখতে হয়েছে ভারতকে। আর কৌশলগতভাবে সুবিধাজনক অবস্থানের কারণে কোনোভাবেই সেখান থেকে সেনাবাহিনী সরাতে রাজি হচ্ছে না চীন। একই অবস্থা ডেমচকেও। সেখানে সিএনএন ট্র্যাক জংশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চীন সেনা ঘাঁটি গেড়ে থাকায় কারাকোরাম পাস এলাকায় আপাতত নজরদারি বন্ধ ভারতীয় সেনাবাহিনীর।

এই অবস্থায় একের পর এক নিষ্ফলা বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন তুলে গতকাল সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা। নরেন্দ্র মোদি সরকারের উদ্দেশে তার প্রশ্ন, ‘চীন যে প্রায় হাজার বর্গ কিলোমিটার জমি দখল করে রেখেছে, তা কবে ফেরত আনবে মোদি সরকার? কবে আগেকার স্থিতাবস্থা ফিরে আসবে? কবে চীনকে চোখ রাঙাতে সক্ষম হবে ভারত?’

২০ জুন সর্বদলীয় বৈঠকে নরেন্দ্র মোদি দাবি করেছিলেন, ভারতের জমিতে কেউ প্রবেশ করেনি। সুরজেওয়ালার প্রশ্ন, ‘তা হলে কি ধরে নিতে হবে মোদি ভুল তথ্য দিয়ে দেশকে বিভ্রান্ত করেছিলেন? যদি কেউ ভারতের জমিতে প্রবেশ না-ই করে থাকে, তা হলে চীন সেনাবাহিনীর সাথে এত বৈঠক কেন করা হচ্ছে?’
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button