sliderউপমহাদেশশিরোনাম

দিল্লিতে মুসলিম বিরোধী সহিংসতায় পুলিশ জড়িত: নিউ ইয়র্ক টাইমস

ভারতের দিল্লিতে মুসলিম বিরোধী সহিংসতায় পুলিশ নিজেও জড়িত বলে জানিয়েছে মার্কিন দৈনিক নিউ ইয়র্ক টাইমস। দৈনিকটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় পুলিশ মুসলিম বিরোধী সহিংসতায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরাসরি অংশ নিয়েছে অথবা সহযোগিতা করেছে আবার কোথাও সহিংসতা থামানোর পদক্ষেপ না নিয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে।
নিউ ইয়র্ক টাইমস দিল্লির প্রাণঘাতী সহিংসতায় মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর পুলিশের অকথ্য নির্যাতনের একটি সার্বিক চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। তারা বলছে, প্রথম দুই দিন হিন্দু ও মুসলিম দুর্বৃত্তরা একে অপরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লেও, এরপর থেকে মুসলিমদের বাড়িঘর, দোকানপাট ও অন্যান্য স্থাপনায় ধারাবাহিক হামলা হয়েছে। পুলিশ সেসময় কেবল নিষ্ক্রিয়ই ছিল না, মুসলমানদের ওপর নির্দয় হামলাও চালিয়েছে।
এ সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি ভিডিও বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরছে বলেও জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস। ২৪ ফেব্রুয়ারি উত্তর-পূর্ব দিল্লির একটি এলাকায় হিন্দু ও মুসলমানরা একে অপরের দিকে পাথর ছুড়ছিল, বন্ধ করে রেখেছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক।


সন্তানদের কাছে ফেরার তাড়া থাকায় কাউসার আলি নামের এক বাসিন্দা তখন ওই সড়ক পেরিয়ে নিজের বাসায় যেতে পুলিশের সাহায্য চেয়েছিলেন, আর সেটাই কাল হয় তার। পুলিশ কর্মকর্তারা তৎক্ষণাৎ তাকে মাটিতে ফেলে দিলে তিনি মাথায় আঘাত পান। পুলিশ কেবল তাকেই নয়, আরও কয়েকজন মুসলিমকে নির্বিচারে পিটিয়েছিল। আহত, রক্তাক্ত ওই মানুষগুলোর কণ্ঠে যখন অনুনয় আর আকুতি ঝরছিল, পুলিশরা তখন হেসেছিল, লাঠি দিয়ে মারার ভয় দেখিয়ে জাতীয় সংগীত গাইতে বাধ্য করেছিল।
নির্যাতনের এ চিত্র একটি ভিডিওতে ধরাও পড়ে। পুলিশ সেদিন যাদের আঘাত করেছিল, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাদের একজন দুদিন পর মারা যান। বেশ কয়েকটি ভিডিওতে পুলিশকে মুসলিম বিক্ষোভকারীদের পেটাতে ও তাদের দিকে পাথর ছুড়তে এবং উন্মত্ত হিন্দুদের স্বাগত জানিয়ে তাদের উদ্দেশ্যে হাত নাড়তেও দেখা গেছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দিক থেকে সহিংসতা শুরুর পরপরই, পুলিশকে তাদের বন্দুক জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বলেও এক পুলিশ কমান্ডার জানিয়েছেন।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিনিধি সেসময় বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে লাঠি হাতে সহিংসতা রোধে অক্ষমতা ও সহিংসতা মোকাবেলায় বন্দুকের প্রয়োজনীয়তার কথা বলতে শুনেছিলেন।
কয়েকদিনের ওই সহিংসতায় যে ৫৩ জনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে, তাদের দুই তৃতীয়াংশের বেশি মুসলমান বলে জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস। মানবাধিকার কর্মীদের অনেকে এ ঘটনাকে পরিকল্পিত গণহত্যা বলেও অভিহিত করেছেন।
পার্সটুডে

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button