sliderস্থানিয়

তাহিরপুরে গরু ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ ইজারাদারের বিরুদ্ধে ; বাজারে গরু ব্যবসা না করায় ধর্মঘট ‎

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জ জেলার বৃহৎ হাট তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট বাজারের ইজারাদার কর্তৃক শফিকুল ইসলাম (৩৮) নামের এক গরু-ছাগল ব্যবসায়ীকে রাস্তা থেকে ধরে নিজ অফিস কক্ষে এনে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাজারের ইজারাদার বিএনপি নেতা আজিজুল ইসলামের নিজ অফিসে।

‎এ ঘটনায় বাদাঘাট বাজারের গরু ছাগল ব্যবসায়ী সমিতির শতাধিক সদস্যরা (গরু ব্যবসায়ীরা) এর বিচার না পাওয়া পর্যন্ত ওই হাটে গরু ছাগল ব্যবসা না করার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।

‎এ ঘটনায় গরু ছাগল ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা আজ রোববার দুপুরে বাদাঘাট বাজারের লামা বাজার তাদের অস্থায়ী অফিসে এক আলোচনা সভায় বসে। এ সময় গরু ছাগল ব্যবসায়ী সমিতির সিরাজ মিয়া বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই বাজারে সুনামের সাথে ব্যবসা করে আসছি। আমাদের (গরু ছাগল ব্যবসায়ী) ১০০ জনের একটি সমিতি আছে। আগের ইজারাদারসহ এখন যে ইজারাদার আছে তাদের সাথে আমাদের আলোচনা আছে। সমিতির যে সদস্য হাটে গরু ছাগল কিনে রশিদ না করলে বা অন্য কোন অপরাধ করলে আমাদের জানাতে। এর বিচার আমার ৫ হাজার টাকা জরিমানাসহ তার যে বিচার নাই সেই বিচার করবো। বৃহস্পতিবারের আগে চিনাকান্দি বাজার থেকে ৫টি ছাগল কিনছে তার রশিদও ওই বাজার থেকে করেছে। এবং গত বৃহস্পতিবার আমার সদস্য শফিকুল বাদাঘাট বাজার থেকে ১৫টি ছাগল কিনছে তার রশিদ করেছে। বিকালে সিলেটের এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মিয়ারচড় খেয়াঘাটের পিকআপ ভ্যানে তুলে সিলেট নেয়ার জন্য। পরে সন্ধ্যায় ইজারাদার বিএনপি নেতা আজিজুল লোক পাঠিয়ে সিলেটের ব্যবসায়ীসহ শফিকুলকে ধরে নিয়ে আসে তার অফিসে। চিনাকান্দি বাজারে কিনা ৫ ছাগলের রশিদ কেন বাদাঘাট থেকে করলানা। এ জন্য দুজনকেই মারধর করে আজিজুল।
সমিতির সদস্য মারধরের শিকার ভুক্তভোগী শফিকুল বলেন, আমার অন্য বাজার থেকে গরু ছাগল কিনলেও তাদের কে (বাদাঘাট বাজার ইজারাদার) টাকা দিতে হয়। বাড়িতে বা রাস্তাঘাটে গরু ছাগল কিনলেও তাদের কাছ থেকে রশিদ নিতে হয়। না হলে তার (ইজারাদাররা) আমাদের মারধর করাসহ বিভিন্ন হুমকি ধামকি দেয়। আমি তাদের (বাদাঘাট বাজার) থেকে ১৫টি ছাগল কিনছে এর রশিদ আছে বিশ্বম্ভরপুরে চিনাকান্দি বাজার থেকে ৫টি ছাগল কিনছে এর রশিদও আমার কাছে আছে। কিন্তু ওইদিন রাস্তা থেকে আমাদের আজিজুল ভাই লোক দিয়ে ধরিয়ে তার অফিসে আনে। এসময় সবগুলো ছাগলের রশিদ দেখানো পরেও চিনাকান্দি বাজার থেকে কিনা ৫টি ছাগলে টাকাও তাদের দিতে হবে। আমি না করার আমি ও আমার সাথে সিলেটের ব্যবসায়ীকে মারধর করে। তাই আমারা এর বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের সমিতির সদস্যরা কেই আর এই বাজারে গরু ছাগল ক্রয়বিক্রয় করবনা মর্মে সিদ্ধান্ত নেই।

সমিতির সভাপতি-সিরাজ মিয়া, সাবেক সভাপতি আবু সায়েদ, মিলন সদস্য, উপদেষ্টা নুর মিয়া বলেন, এর বিচার না পাইলেই আমার ইউএনও’র কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে ইজারাদার বাতিলের জন্য আবেদন করবো। তার শুধু আমাদের সাথে দুর্ব্যবহার এই করেন না। বর্তমান ইজারাদার সরকারের দেয়া ইজারাদার মূল্যের দ্বিগুণ ইজারার টাকা নেয়। না দিলে আমাদের সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করে। এমনকি মারধরও করে। আমরা এর বিচার চাই। ছাগল কিনার রশিদ থাকার পরেও আমাদের দুই ব্যবসায়ীকে রাস্তা থেকে ধরে এনে বাদাঘাট বাজার তার নিজেস্ব অফিসে মারধর করে। এ বিচার না পাওয়া পর্যন্ত এই বাজারে আর ব্যবসা না করার জন্য প্রতিজ্ঞা করেছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইজারাদার আজিজুল ইসলাম বলেন, ছাগল ব্যবসায়ী শফিকুল বাজারে ছাগল কিনেছেন ২০টি। কিন্তু রশিদ করেছে ১৫টির। এ জন্য শফিকুলকে লোক দিয়ে ডাকিয়ে আমার অফিসে আনি। পরে দুজনের মধ্যে ভুলবোঝাবুঝি মিমাংসা হয়। আর মারধরের কথা যা বলছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট আমি কাউকে মারধর করিনি। আর ব্যবসা করাটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার কেউ বাজারে ইচ্ছা হলে ব্যবসা করবে ইচ্ছার না হলে ব্যবসা না করবে এটা তাদের ব্যাপার।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button