কলম্বিয়ার নির্যাতিত নারী সাংবাদিককে ‘গোল্ডেন পেন অব ফ্রিডম’ পুরস্কার
সাংবাদিকতায় ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি মোকাবিলায় দৃষ্টান্ত স্থাপন ও নারী অধিকার রক্ষায় প্রচেষ্টার জন্য কলম্বীয় সাংবাদিক জিনেথ বেদোয়া লিমাকে এ বছরের ‘গোল্ডেন পেন অব ফ্রিডম’ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
করোনা মহামারির মধ্যে বুধবার ভার্চুয়ালি এই পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছে সংবাদপত্র ও সংবাদ প্রকাশকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ওয়ার্ল্ড অ্যাসোসিয়েশন অব নিউজপেপার্স অ্যান্ড নিউজ পাবলিশার্স (ডব্লিউএএন-আইএফআরএ)।
দুই দশক আগে নিজের পত্রিকা ‘এল এক্সপেক্তাদরের’ জন্য এক কুখ্যাত আধাসামরিক অধিনায়কের সাক্ষাৎকার নিতে যাওয়ার পথে অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন জিনেথ বেদোয়া লিমা।
সাংবাদিকতায় পেশাগত নিষ্ঠা এবং ট্র্যাজেডি মোকাবিলায় করে অনুপ্রেরণাদায়ী মর্যাদা ও সংকল্প দেখানোর জন্য এ সংগ্রামী নারীকে এ পুরস্কারে ভূষিত করে ফ্রাঙ্কফুর্ট ভিত্তিক ডব্লিউএএন-আইএফআরএ।
সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষা ও উন্নয়নে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রতিবছর ব্যক্তি বা সংস্থাকে ‘গোল্ডেন পেন অব ফ্রিডম’ পুরস্কার দিয়ে থাকে
জানা যায়, সরকারি কর্মকর্তা ও আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে অস্ত্র কেনাবেচার বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য ২০০০ সালে বোগোটার কুখ্যাত লা মোদেলো কারাগারে যাওয়ার সময় তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বেদোয়া লিমাকে।
শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের পর তাকে ছেড়ে দেয়া হলেও তিন বছর পর আবারও অপহরণ করে আট দিন আটকে রাখা হয় তাকে। সেসময়ও তাকে নির্যাতনের শিকার হতে হয়।
তবে ভয়াবহ এ অভিজ্ঞতা নিজের মধ্যে চেপে রেখেছিলেন বেদোয়া লিমা। তবে কলম্বিয়ার অভ্যন্তরীণ যুদ্ধে যৌন সহিংসতার দায় মুক্তি দেয়ার প্রতিবাদে ২০০৯ সালে ‘নো এস হরা দি চালার (আর নীরবতা নয়) শীর্ষক আন্দোলন শুরু হলে তার সেই সব লোমহর্ষক ও বীভৎস অভিজ্ঞতা সামনে আসে।
পুরস্কার গ্রহণ করে এক প্রতিক্রিয়া এ সংগ্রামী নারী বলেন, ‘একজন সাংবাদিকের জন্য এর চেয়ে বড় অনুপ্রেরণা ও সমর্থন আর হয় না।’
২০০৯ সালে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বেদোয়া লিমা জানান, বহু বছর ধরে তিনি তার বীভৎস ও বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা নিয়ে মুখ খোলেননি। কারণ সরকার তখন এই অপরাধগুলোকে স্বীকারই করত না।
সুত্র : দেশ রূপান্তর