sliderআন্তর্জাতিক সংবাদশিরোনাম

বাংলাদেশীসহ ৫ কর্মীকে উদ্ধারে কী করছে জাতিসঙ্ঘ

জাতিসঙ্ঘ জানিয়েছে, ইয়েমেনে অপহৃত সংস্থাটির পাঁচজন কর্মীকে উদ্ধারে জোর তৎপরতা চলছে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও বার্তা সংস্থাগুলোর খবরে বলা হচ্ছে, গত শুক্রবার ইয়েমেন থেকে পাঁচজন জাতিসঙ্ঘ কর্মীকে অপহরণের ঘটনা ঘটে, যার জন্য উগ্রবাদী গোষ্ঠী আল কায়েদা দায়ী বলে উল্লেখ করে অন্তত একটি প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
এদের মধ্যে চারজন ইয়েমেনি ও একজন বিদেশী বলে খবরাখবরে উল্লেখ করা হয়।
পরিবারের সদস্যদের বরাতে ঢাকার গণমাধ্যম বলছে, ওই বিদেশী নাগরিক মূলত একজন বাংলাদেশী।
তার পরিচয়ও প্রকাশ করে ঢাকার বেশ কয়েকটি দৈনিক পত্রিকা। নাম উল্লেখসহ প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, যিনি দুই দশক ধরে জাতিসঙ্ঘের সাথে যুক্ত।
তিনি ইয়েমেনে জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছিলেন।
ইয়েমেনে জাতিসঙ্ঘের একজন মুখপাত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, অপহৃতদের মুক্তির জন্য কর্তৃপক্ষের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করছে সংস্থাটি।
ইয়েমেনে গত প্রায় ছয় বছর ধরে যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করছে সৌদি সমর্থিত জোটের সামরিক অভিযানের কারণে। ইরান সমর্থিত হাউছি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে এ অভিযান চালাচ্ছে তারা।
এ সংঘাতে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং বাড়ি ঘর ছেড়ে পালিয়েছে কয়েক লাখ মানুষ, যা সেখানে চরম মানবেতর পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
ঢাকায় পাওয়া খবরে জানা যাচ্ছে, অপহৃতদের উদ্ধারের বিষয়ে অগ্রগতি জানার জন্য সবাই জাতিসঙ্ঘের দিকেই তাকিয়ে আছে, যদিও অপহরণের খবরটি ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এসেছে।
যদিও ঢাকায় জাতিসঙ্ঘ অফিসে যোগাযোগ করা তারা এ বিষয়ে তারা অবহিত নন বলে জানিয়েছেন।
অন্যদিকে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর বা আইএসপিআর বলছে, বর্তমানে কর্মরত কর্মকর্তা (সার্ভিং অফিসার) না হওয়ায় এবং ওই ব্যক্তি অন্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকায় বিষয়টি তাদের অবগতিতে নেই।
অবশ্য ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জাতিসঙ্ঘ অফিসের বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, অপহৃত কর্মকর্তার পরিবারের সাথে বিষয়টি নিয়ে জাতিসঙ্ঘের যোগাযোগ হয়েছে এবং তাকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে তাদের আশ্বস্তও করা হয়েছে।
জানা গেছে, অপহৃত ওই বাংলাদেশী ইয়েমেনে একাই থাকতেন। তার পরিবারের অন্য সদস্যরা বাংলাদেশে রয়েছেন।
কারা কীভাবে অপহরণ করেছে
খবরে বলা হচ্ছে, অপহৃত বাংলাদেশী ব্যক্তি প্রায় দুই দশক আগে জাতিসঙ্ঘে যোগ দিয়েছিলেন। আর কিছুদিন পরেই তার অবসরে যাওয়ার কথা।
জাতিসঙ্ঘের ইয়েমেন কার্যালয় জানিয়েছে, একটি ফিল্ড মিশন শেষে অ্যাডেনে ফিরে আসছিলেন ওই বাংলাদেশীসহ পাঁচজন।
শুক্রবার ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চলে পৌঁছালে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা তাদের অপহরণ করে নিয়ে যায়।
ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের খবর অনুযায়ী, যাদের অপহরণ করা হয়েছে তাদের চারজন ইয়েমেনের নাগরিক।
তাদের অপহরণের জন্য প্রাথমিকভাবে আল কায়েদা জড়িত বলে পত্রিকাটি খবর দিচ্ছে।
তবে রয়টার্সসহ অন্যান্য কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম খবর দিচ্ছে, অপহরণের জন্য ইয়েমেনের স্থানীয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো দায়ী।
এসব দাবির সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিবিসির তরফ থেকেও নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
দক্ষিণ ইয়েমেনভিত্তিক আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকার শনিবারই গণমাধ্যমকে জানিয়েছে যে, জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা বিভাগ অপহৃতদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কাজ করছে।
ইয়েমেনে অপহরণের ঘটনা প্রায়শই ঘটে। সাধারণ মুক্তিপণ আদায় করে অনেককে ছেড়ে দেয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো।
এ ধরনের গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে আল-কায়েদা ও আইএসের নামও শোনা যায়।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে গার্ডিয়ানের খবর বলছে, অপহৃতদের প্রথমে আবিয়ান প্রদেশে নিয়ে পরে সেখান থেকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গেছে অপহরণকারীরা।
তবে এসব কর্মকর্তাদের মুক্তির জন্য স্থানীয় উপজাতীয় নেতাদের মাধ্যমে অপহরণকারীদের দরকষাকষি চলছে বলেও খবর পাওয়া যাচ্ছে।
সূত্র : বিবিসি

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button