sliderরাজনীতিশিরোনাম

প্যারোলে নয়, খালেদা চান জামিনে মুক্তি

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্যারোলে মুক্তি পেতে রাজি নয়, তিনি আইনি প্রক্রিয়ায় স্বাভাবিক পথে জামিনে মুক্তি পেতে চান। এমনটাই জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার একাধিক আইনজীবী।
শারীরীক অসুস্থতার কারণে গত ১ এপ্রিল পুরান ঢাকার কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমইউ্‌এইচ) আনার পরে তার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া বিএনপি নেতা ও আইনজীবীদের স্পষ্ট ভাষায় বলে দিয়েছেন, উন্নত চিকিৎসার স্বার্থে প্যারোলে বা শর্তসাপেক্ষ মুক্তিতে ন্যূনতম সায় নেই তার। বাংলা নববর্ষের দিন বিএনপি চেয়ারপারনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন দলের নীতিনির্ধারক ফোরামের তিন সদস্য। তাদের কাছে আবারও প্যারোলের ব্যাপারে অনাগ্রহের বিষয়টি জানিয়ে দেন খালেদা জিয়া।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) বিএসএমএইউতে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সঙ্গে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও নজরুল ইসলাম খান দেখা করেন। তাদের সঙ্গে কথাবার্তার একপর্যায়ে প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি ওঠে।
এ সময় তিনি দলীয় নেতাদের উদ্দেশে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেছেন, আমি কেন প্যারোলে মুক্তি নেবো? আমি তো আইনি প্রক্রিয়ায় জামিন পাওয়ার অধিকার রাখি। প্যারোল মানে হচ্ছে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি।
বিএসএমএইউতে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে আসা নাম প্রকাশে অনাগ্রাহী এক নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নেতাদের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, আমাকে বিরুদ্ধে করা মামলার সাজার বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে আদালতে আপিল করা আছে। জামিনে মুক্তি পাওয়া আমার ন্যায় সঙ্গত অধিকার। মামলাগুলোতে জামিন পেতেই যা করার করবো। প্যারোলে মুক্তি নেবো কেন।’
ওইনেতা আরও জানান, অসুস্থতার কারণে খালেদা জিয়াকে শারীরিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত দেখাচ্ছিল। আলাপের সময় কখনো কখনো তিনি হাত তুলে বা নেড়ে কথা বলতে পারছিলেন না। আর্থ্রাইটিসের ব্যথার কারণে তিনি পা নাড়াতে পারছিলেন না। কখনো কখনো তার মুখের কথা জড়িয়ে যাচ্ছিল। তবে তার প্রতিটি বাক্য ছিল গোছালো। নিজে অসুস্থ হলেও দলের কয়েকজন নেতার মৃত্যু ও অসুস্থতার ব্যাপারে খোঁজ-খবরও নিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে বিএনপির টিকিটে এমপি নির্বাচিত হওয়া ৬ জনের সংসদে যাওয়ার ব্যাপারে রাজনৈতিক মহলে যে গুঞ্জন রয়েছে সেটা নিয়েও বিরক্তি প্রকাশ করেছেন তিনি।
বিএনপির শীর্ষস্থানীয় একটি সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার পরিবার বা দলের নেতাকর্মীরা আবেগের বশবর্তী হয়ে যে কোনো মূল্যে নেত্রীর মুক্তি চাইছেন। তাই বিকল্প হিসেবে কেউ কেউ প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি সামনে এনেছেন। কিন্তু যেখানে জামিনে মুক্তি পাওয়া বিএনপি চেয়ারপারসনের ন্যায় সঙ্গত অধিকার, সেখানে প্যারোলের মতো শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি চান না তিনি। কিছুদিন আগে একবার প্যারোলে মুক্তির প্রসঙ্গ তুলে তার কড়া ধমক খেয়েছেন কয়েকজন আইনজীবী। খালেদা জিয়া অনাগ্রহী হওয়ায় হালে পানি পায়নি প্যারোলের মুক্তির আয়োজন।
উল্লেখ্য, গত বছর ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালত পাঁচ বছর সাজা দেন খালেদা জিয়াকে। এরপর ওই রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন তার আইনজীবীরা। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধির আবেদন (রিভিশন) করে দুদুক। দুদুকের আবেদন গ্রহণ করে খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়। হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা, যা শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে।
এছাড়া গত ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলা বিচারিক আদালত খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সাজা দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন তার আইনজীবীরা। এটিও শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে। পূর্বপশ্চিম.কম

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button