sliderআন্তর্জাতিক সংবাদশিরোনাম

ইউরোপ-আমেরিকায় যে কারণে করোনার সংক্রমণ বেশি

করোনার উৎসভূমি চীন, কিন্তু চীনের চেয়ে ইউরোপ ও আমেরিকায় প্রাণঘাতি এ ভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। ইউরোপের প্রায় প্রতিটা দেশই কভিড-১৯আক্রান্ত হয়েছে। ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, জার্মানিতে করোনা তীব্রগতি ছড়িয়ে পড়ে। একইভাবে করোনা ভাইরাস যুক্তরাষ্ট্রেও বিস্তৃত হয়। ইউরোপ-আমেরিকার ভাইরাসটির সংক্রমণের গতি ততোটা আক্রমণাত্মক নয়। কেন এমন হচ্ছে? এর কারণ খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
মার্কিন গবেষকরা মনে করেন যে, পশ্চিমা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া কভিড-১৯ মহামারিটির পিছনে থাকা সার্স-কোভি -২ ভাইরাসের বিশেষ স্ট্রেন অন্যদের চেয়ে বেশি সংক্রামক। ফলে বিশ্বের অনেক ধনী দেশে এইরকম ভয়াবহ প্রকোপ হয়েছে।
সুদূর চীনে প্রথম ভাইরাস সনাক্ত করা সত্ত্বেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মার্চের গোড়ার দিকে ইউরোপকে মহামারির কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে ঘোষণা করেছিল। পরে মার্চের শেষের দিকে আমেরিকাকেও করোনার এপিসেন্টার ঘোষণা করা হয়।
ভাইরাসটির জিনগত বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আমেরিকার বেশিরভাগ স্ট্রেনই ইউরোপ থেকে এসেছে, চীন থেকে নয়। বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি কভিড-১৯ রোগী সনাক্ত ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর পরেই আছে ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য।
অনলাইনে প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণাপত্রে নিউ মেক্সিকোর লস আলামোস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির গবেষকরা বলেছেন যে, বিশ্বজুড়ে ৬ হাজার পৃথক সার্স-কোভি -২ জেনেটিক সিকোয়েন্স বিশ্লেষণ করার পরে তারা একটি শক্তিশালী কারণ খুঁজে পেয়েছে। যেটা এই ভাইরাসটির ইউরোপ আমেরিকায় শক্তিশালী হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে পারে।
গবেষক দলের প্রধান বেটে করবার বলেছেন, ‘ব্যাপারটি উদ্বেগজনক, কারণ আমরা দেখেছি ভাইরাসটির রূপান্তরিত রূপটি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে এবং মার্চ মাসের মধ্যেই মহামারি আকার নিয়েছে। এই রূপান্তরিত ভাইরাসগুলো যখন একটি জনসংখ্যায় প্রবেশ করে, তারা দ্রুত স্থানীয় মহামারিটি গ্রহণ করতে শুরু করে, ফলে তারা আরো সংক্রামিত হয়।’
রূপান্তরটি ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনে রয়েছে যা এটি স্বাস্থ্যকর কোষগুলোকে সংক্রামিত করতে ব্যবহার করে। এই রোগের সম্ভাব্য ভ্যাকসিনগুলোর অনেক গবেষণায় স্পাইক প্রোটিনের দিকে মনোনিবেশ করা হয়েছে। কোনভাবে যদি ভাইরাসটির স্পাইক প্রোটিনকে অকেজো করা যায় তাহলে এটি আর কার্যকর নাও হতে পারে।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজিস্ট অ্যাঞ্জেলা রাসমুসেন বলেছেন, ‘আমরা একটি রূপান্তর খুঁজে পেয়েছি যা সময়ের সাথে প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে। তবে সংক্রমণে এর কার্যকরী তাৎপর্য কী সেটা এখনো জানা হয়নি। ইবোলা ভাইরাসেও একই রকম রূপান্তর দেখা গিয়েছিল।
পূর্বপশ্চিম

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button