যমুনা টেলিভিশনের মাজহারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্বা আইনে মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

রংপুর প্রতিননিধি : যমুনা টেলিভিশনের স্টাফ করেসপনডেন্ট ও রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সরকার মাজহারুল মান্নানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মিথ্যা মামলা দাখিলের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন রংপুরের সাংবাদিকরা। যমুনা টেলিভিশনের ‘ক্রাইম সিন’ এ সড়ক ও জনপদ বিভাগের জমি জালিয়াতি করে রেজিষ্ট্রি বায়না দলিল করা সংক্রান্ত মামলায় এক বছর কারাদণ্ড প্রাপ্ত ও তিনটি মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত আসামি রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাকারিয়া আলম শিপলু ও তার বাহিনীর জমি দখল, মাদক সাম্রাজ্য গড়ে তোলাসহ বিভিন্ন অপকর্মের প্রতিবেদন প্রচার হওয়ায় এ মামলা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) বেলা ১১টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত এই মানববন্ধনের আয়োজন করে রংপুরের সাংবাদিক সমাজ।
সাংবাদিক নেতারা বলেন, গণমাধ্যমের কণ্ঠ রোধ করতেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অপব্যবহার করছে অপরাধীরা। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে মামলা প্রত্যাহার করা না হলে কঠোর আন্দোলনে যাবে সাংবাদিকরা।
মানববন্ধনে অংশ নেন রংপুরে কর্মরত জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ছাড়াও রংপুর প্রেস ক্লাব, রিপোর্টার্স ক্লাব, সিটি প্রেস ক্লাব, সাংবাদিক ইউনিয়ন, টেলিভিশন ক্যামেরা জার্নালিষ্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিষ্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব, মাহিগঞ্জ প্রেস ক্লাব, হারাগাছ প্রেস ক্লাবসহ বিভিন্নি সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃরা ও সদস্যরা।
রংপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তরের ব্যুরো প্রধান মাহবুব রহমান হাবুর সভাপতিত্বে এবং ঢাকা পোস্টের নিজস্ব প্রতিবেদক ফরহাদুজ্জামান ফারুকের সঞ্চালনায় এ সময় বক্তব্য রাখেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ইনডিপেনডেন্টর সিনিয়র রিপোর্টার আবদুস সাহেদ মন্টু, একুশে টেলিভিশন, দৈনিক সংবাদ ও বাংলা ট্রিবিউনের ব্যুরো প্রধান লিয়াকত আলী বাদল, সিটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি দৈনিক সমকালের ব্যুরো প্রধান স্বপন চৌধুরী, রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি ইনডিপেনডেন্ট ও কালের কণ্ঠের ব্যুরো প্রধান নজরুল ইসলাম রাজু, রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সালেকুজ্জামান সালেক, রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোজাফফর হোসেন, এনটিভির সিনিয়র রিপোর্টার এ কে এম ময়নুল হক, আনন্দ টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান মাহফুজুর রহমান প্রিন্স, নিউজ২৪-এর ব্যুরো প্রধান ও রিপোর্টার্স ক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম মানিক, কোষাধ্যক্ষ এবং মোহনা টেলিভিশনের বিভাগীয় প্রধান শফিউল করিম শফিক, চ্যানেল২৪-এর স্টাফ রিপোর্টার ফকরুল শাহীন, রিপোর্টার্স ইউনিটিরসহ সভাপতি রবিউল ইসলাম বাবলু, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিষ্ট অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি আসাদুজ্জামান আফজাল, মাহিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি বাবলু নাগ, হারাগাছ প্রেস ক্লাবের সভাপতি আয়নাল হক, অনলাইন জার্নালিষ্ট অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক শাহরিয়ার মিম, পীরগঞ্জ সাংবাদিক কল্যান ট্রাস্টের সভাপতি আব্দুল করিম প্রমুখ।
এ সময় সিনিয়র সাংবাদিক রংপুর প্রেস ক্লাবের সাবেক কোষাধ্যক্ষ সুশান্ত ভৌমিক, বাংলাদেশ প্রতিদিনের নিজস্ব প্রতিবেদক নজরুল মৃধা, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের ব্যুরো প্রধান আব্দুর রহমান মিন্টু, বাংলা ভিশনের ব্যুরো প্রধান জুয়েল আহমেদ, সময় টেলিভিশনের রিপোর্টার রেদওয়ান হিমেল, ফটো জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম রিপনসহ রংপুরের সিনিয়র ও জুনিয়র গণমাধ্যকর্মীরা অংশ নেন।
এছাড়াও রংপুরের বদরগঞ্জ, পীরগঞ্জ, মিঠাপুকুর, তারাগঞ্জ, পীরগাছা, গঙ্গাচড়া উপজেলার সাংবাদিক নেতারা মানববন্ধনে অংশ নেন।
ডিজিটাল নিরাপত্বা আইনে মামলা দাখিলের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সাংবাদিক নেতারা বলেন, যমুনা টেলিভিশনের ক্রাইম সিন এ যে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচার করা হয়েছে। তাতেই সব তথ্য উপাথ্য সন্নিবেশিত আছে। তিনি সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধিগ্রহণকৃত জমি জাল দলিল করে বিক্রির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। এবং তিনটি মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত। আরো চারটি মামলা বিচারাধীন। কিন্তু তিনি কিভাবে আদালতে এসে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেন সেটি দেখার দায়িত্ব পুলিশের।
সাংবাদিক নেতারা বলেন, পিবিআইকে নিরপেক্ষভাবে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে প্রতিবেদন দিয়ে মামলা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করতে হবে। নইলে রংপুরের সাংবাদিক সমাজ মাঠে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে। একই দাবিতে পিবিআইকে স্মারকলিপি দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয় মানববন্ধনে।
সাংবাদিক নেতারা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সুযোগ নিচ্ছে অপরাধীরা। সরকারকে সজাগ থাকতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে যেসব সংবাদকর্মীর বিরুদ্ধে নিউজের কারণে এই মামলা করা হয়েছে তা প্রত্যাহার করতে হবে।