
প্রেস বিজ্ঞপ্তি: আজ ২১ অক্টোবর ২০২১,বেলা ১১টায় মিরপুর শিয়ালবাড়ী মোড়ে বৃহত্তর মিরপুর গার্মেন্টস শ্রমিক সংগঠন সমূহের উদ্যোগে এক প্রতিবাদ সমাবেশ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। রেডিমেড গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি লাভলী ইয়াসমীনের সভাপতিত্বে ও মাদারল্যান্ড গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পয়াদক মোঃ আল-আমিনের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন সভাপতি বদরুল আলম, সাধারণ সম্পাদক জায়েদ ইকবাল খান, ন্যাশনাল লেবার ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক মরিয়ম আক্তার, মাদারল্যান্ড গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন সভাপতি সালেহা ইসলাম শান্তনা, সম্মিলিত শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি পারভিন আক্তার, রেডিমেড গার্মেন্ট ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রুপালী খাতুন, সোহেল রানা, জাতীয় প্রগতিশীল গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি শিরিন শিকদার, গার্মেন্টস টেইলার্স ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের ঢাকা মহানগরের সভাপতি রুহুল আমিন হাওলাদার ও আঞ্চলিক কমিটির নেতা আবুল কালাম আজাদ, জাগনারী ফাউন্ডেশনের নেত্রী হালিমা ইয়াসমীন, শিউলি বেগম, একতা গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি সীমা আক্তার ও জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি আলেয়া বেগম, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফেডারেশনের নেত্রী তনিমা হামিদ সুমি প্রমূখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘১৪ অক্টোবর ঢাকার মিরপুরের রাসায়নিক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। এতে অন্তত ১৬ জন শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন, আর অসংখ্য শ্রমিক দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনা আমাদের সকলের হৃদয় কাঁপিয়ে তুলেছে এবং দেশের শিল্পখাতের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দিক দিয়ে একটি দিকনির্দেশক সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করছে। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার পেছনে মূল কারণগুলো স্পষ্ট–নিরাপত্তাহীন ভবন, অবৈধভাবে রাখা রাসায়নিক গুদাম, এবং অকার্যকর অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এই অগ্নিকাণ্ড নিছক কোনো দুর্ঘটনা নয়। এটি বাংলাদেশের শিল্পখাতের নিরাপত্তা ব্যবস্থার গভীর ও কাঠামোগত ব্যর্থতার প্রতিফলন। যেখানে শ্রমিকের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হয়, যেখানে নিরাপত্তা মানদণ্ডকে উপেক্ষা করা হয় এবং দায়হীন মালিকপক্ষ শাস্তির বাইরে থাকে, সেখানে এ ধরনের ঘটনায় পুনরাবৃত্তি ঘটতে বাধ্য। এটি কেবল শ্রমিকদের জীবনের ক্ষতি নয়, এটি আমাদের সমাজের নৈতিক দায় এবং রাষ্ট্রের দায়িত্বহীনতার প্রতিফলন।
বক্তরা আরো বলেন “আমরা দৃঢ়ভাবে দাবী করছি–নিহত ও দগ্ধ শ্রমিকদের পরিবারকে দ্রুত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং পুনর্বাসন করতে হবে। দায়ীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। মিরপুরসহ দেশের প্রতিটি শিল্পাঞ্চলে নিরাপত্তা মানদণ্ড কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে এবং শ্রমিকদের ফায়ার ড্রিল, খোলা নির্গমনপথ ও কার্যকর অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম নিশ্চিত করতে হবে।
শ্রমিকদের জীবন সস্তা নয় উল্লেখ করে তাঁরা বলেন, “তাদের মর্যাদা পুঁজির উপর নয়, শ্রমের উপর। আমাদের আন্দোলন, আমাদের প্রতিবাদ, এবং আমাদের দাবি হলো–শ্রমিকের জীবনের নিরাপত্তা দেয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব। যতদিন পর্যন্ত দোষীদের শাস্তি হবে না, ততদিন পর্যন্ত আগুন থামবে না।”
দাবিসমূহ:
১. আইএলও কনভেনশন ১২১ অনুযায়ী নিহত ও আহত শ্রমিকদের পরিবারকে দ্রুত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন প্রদান করতে হবে।
২. দায়ীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৩. মিরপুরসহ দেশের সব শিল্পাঞ্চলে নিরাপত্তা মানদণ্ড কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে।
৪. শ্রমিকদের ফায়ার ড্রিল, খোলা নির্গমনপথ ও কার্যকর অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম নিশ্চিত করতে হবে।




