
ব্রিসবেনে এক অবিশ্বাস্য কাণ্ড প্রায় ঘটিয়েই বসেছিলো পাকিস্তান। কিন্তু ৩৯ রানের আক্ষেপে সেটা হলো না। নিজেদের ইতিহাসের অন্যতম সেরা একটা ইনিংস খেলেও পাকিস্তানকে হারতে হয়েছে ব্রিসবেন টেস্টে। হারের ব্যবধান ওই ৩৯ রানই।
পাকিস্তানের লক্ষ্য ছিলো ৪৯০ রান। এতো রান চেজ করে টেস্ট ক্রিকেটে কোনো জয়ের রেকর্ড নেই। কিন্তু নাই বলে যে আর হবে না, তা তো হতে পারে না; পাকিস্তান বোধহয় মন্ত্র জপতে জপতেই মাঠে নেমেছিলো। অন্তত তার প্রচেষ্টা দেখে এ কথা বলাই যায়।
উইকেটে হাড়ভাঙা খাটুনিতে ১৩৭ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেও হৃদয়ভাঙা হার মেনে মাঠ ছাড়তে হয়ছে আসাদ শফিককে। অথচ তার ব্যাটেই অবিশ্বাস্য গল্পটার মূল পটভূমি রচিত হয়েছিলো। তার সঙ্গে আজহার আলির ৭১ ও মোহাম্মদ ইউনুসের ৬৫ রানও ছিলো দারুণ আশাজাগানিয়া। শেষ দিকে আমিরের ৪৮, ওয়াহাব রিয়াজের ৩০ ও ইয়াসির শাহর ৩৩ রানও বাঁচিয়ে রেখেছিলো পাকিস্তানের ইতিহাস গড়ার আশাটা।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর হয়নি। ৩৯ রানের আক্ষেপে পুড়তে হয়েছে পাকিস্তানকে। আর ৩৯টা রান করতে পারলে পাকিস্তান ব্রিসবেন টেস্ট তো জিততোই, সঙ্গে মালিক হয়ে যেতো টেস্ট ইতিহাসের রোমাঞ্চকর চেজের গল্পেরও।
ম্যাচ শেষে পাকিস্তানের নিশ্চয় আফসোসটা বেশি হচ্ছে ছন্নছাড়া প্রথম ইনিংসের জন্য। যেখানে তারা ব্যাটিং করতে পেরেছিলো মোটে ৫৫ ওভার। রান এসেছিলো ১৪২। এতো কম রানের প্রথম ইনিংসের পর পাকিস্তান যে এই ম্যাচ থেকে গর্ব করার মতো কিছু পেয়ে গেলো, এটাই তো অনেক! মিকি আর্থারের শিষ্যদের এখন এটা ভেবেই একটু সান্ত্বনা খুঁজতে হবে।
অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে স্টিভ স্মিথ এবং দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামা পিটার হ্যান্ডসকবের সেঞ্চুরিতে ভর করে তুলে ৪২৯ রান। পাকিস্তানের উপর চাপ নেমে আসে তখনই। সেই চাপেই কিনা কে জানে, প্রথম ইনিংসে মিসবাহর দল একেবারে চিড়েচ্যাপ্টা! তিন পেসারের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি তারা।
পরের ইনিংসে ২০২ রানকেই যথেষ্ট মনে করে ইনিংস ঘোষণা করে দেয় পাকিস্তান। সেটাই অবশ্য করার কথা ছিলো। কারণ ততক্ষণে যে পাকিস্তানকে ৪৯০ রানের অস্পৃশ্য এক লক্ষ্য দেয়া হয়ে গেছে।
তারপরও পাকিস্তান শেষ পর্যন্ত যে লড়াইটা করলো, তাতে ম্যাচ অস্ট্রেলিয়াকে ম্যাচটা জিততে হলো প্রায় হারতে হারতে। টেস্ট শেষ পর্যন্ত দুই দলের কাছেই স্মরণীয় থাকবে নিশ্চিত। ভবিষ্যতে এই ম্যাচের কথা মনে স্মিথরা হয়তো স্বস্তি অনুভব করবেন, ভাববেন একটুর জন্য বেঁচে গিয়েছিলাম। আর মিসবাহদের এই টেস্টের কথা মনে হলেই বুক ফেরে বের হবে কেবল দীর্ঘশ্বাস!