এস এম জীবন রায়হান, শরীয়তপুর প্রতিনিধি: শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলা শহরে নির্মিত ৫০ শয্যা বিশিষ্ট নতুন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি দ্রুত চালুর দাবী জানিয়েছেন স্থানীয়রা। রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলা শহরের বৈশাখীপাড়ায় নব নির্মিত হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সহ স্থানীয় সহস্রাধিক মানুষ অংশ নেয়। মানববন্ধন শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
মানববন্ধনে উপজেলা বিএনপির সভাপতি মমিনুল হক স্বপন মাঝি, সাবেক পৌর কাউন্সিলর দেলোয়ার ছৈয়াল, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি মামুন মল্লিক, শিক্ষক প্রতিনিধি মাষ্টার নুরে আলম, সাইদুল হক মুন্নাহ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ভয়াবহ নদী ভাঙনে নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর মুল ভবন ভেঙে গিয়েছে। ফলে দীর্ঘদিন স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী। বর্তমানে কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে নতুন হাসপাতাল নির্মান শেষ হলেও একটি অযৌক্তিক রিট এর ভিত্তিতে এখানে স্বাস্থ্য সেবা চালু করতে বিলম্ব করা হচ্ছে। এখানে হাসপাতালটি দ্রুত চালু করার দাবী জানাই আমরা।
ফলে দীর্ঘদিন স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী। বর্তমানে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন হাসপাতাল নির্মাণ শেষ হলেও একটি অযৌক্তিক রিটের ভিত্তিতে এখানে স্বাস্থ্যসেবা চালু করতে বিলম্ব করা হচ্ছে। এখানে হাসপাতালটি দ্রুত চালু করার দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর শরীয়তপুরের সহকারী প্রকৌশলী সাব্বির আহম্মেদ বলেন, নতুন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। কিন্তু পুরোনো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি স্ব স্থানে রাখার দাবি জানিয়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা। এ সংক্রান্ত একটি রিট দায়ের হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যেহেতু একাধিক স্থানে রাখার সুযোগ নেই, তাই নতুন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি চালু করা যাচ্ছে না। তবে আমরা আশা করছি, দ্রুতই এই জটিলতা কাটিয়ে নতুন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি চালু করা যাবে।
৫০ শয্যা বিশিষ্ট নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ১৯৬৮ সালে স্থাপন করা হয়। এটি উপজেলা সদর থেকে চার কিলোমিটার দূরত্বে কেদারপুর ইউনিয়নের মুলফৎগঞ্জ বাজারে অবস্থিত। ২০১৮ সালে পদ্মা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির মূল ভবন বিলীন হয়ে যায়। ঝুঁকিতে পড়ে কমপ্লেক্সের আরও ১২টি ভবন। তখন স্বাস্থ্যসেবার কাজ কিছুদিন বন্ধ রাখা হয়। এরপর তা সীমিত করে চালু করা হয়। এরপর উপজেলা সদরে নতুন করে আরেকটি ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং পুরোনো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল করার কথা জানানো হয়। ২০২০ সালে উপজেলা সদরের বৈশাখীপাড়ায় নতুন হাসপাতালের নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আটটি ভবন, গ্যারেজ ও ওয়্যারহাউস নির্মাণের জন্য ২০২০ সালে ছয় একর জমি অধিগ্রহণ করে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটির ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ২৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা। বর্তমানে নতুন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির নির্মাণ কাজ শতভাগ শেষ হলেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এখনও বুঝে নেয়নি।
অন্যদিকে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্থানান্তর না করার জন্য স্থানীয় এক আইনজীবী হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন। ফলে বর্তমানে নতুন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি দ্রুত চালু করার দাবি করেছেন স্থানীয়রা।