আন্তর্জাতিক সংবাদশিরোনাম

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র শক্তি শত্রুর চোখের শূল

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান প্রতিরক্ষা সক্ষমতা জোরদার, শত্রুর হুমকি মোকাবেলায় নিজের অবস্থানকে সুসংহত করা এবং এ অঞ্চলে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় দীর্ঘ মেয়াদি পদক্ষেপ নিয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ইরানের সাফল্য এটাই প্রমাণ করেছে যে, নৈরাজ্য সৃষ্টির জন্য আমেরিকা ও তার মিত্রদের সমর্থনপুষ্ট সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলার কারণেই এ অঞ্চলে তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীলতা বজায় রয়েছে। নিঃসন্দেহে আমেরিকা ইরানের সামরিক শক্তিমত্বাকে মধ্যপ্রাচ্যে তার আধিপত্য বিস্তারের পথে সবচেয়ে বড় বাধা বলে মনে করে। আর এ কারণে তারা অপপ্রচার চালিয়ে এবং নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ইরানের প্রতিরক্ষা শক্তিকে দুর্বল করার চেষ্টা চালিয়ে আসছে।
মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় সম্প্রতি ইরানের পাঁচটি শিল্প গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে সহযোগিতা করার কথিত অভিযোগে ওই পাঁচ শিল্প গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় এর আগেও একই অভিযোগ তুলে গত ১৮ জুলাই ইরানের ১৮ ব্যক্তি ও দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে নিষেধাজ্ঞা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। অবশ্য ইরানের সঙ্গে এ ধরণের আচরণ শুধু ট্রাম্পের শাসনামলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। এর আগের মার্কিন সরকারগুলোও মধ্যপ্রাচ্যসহ সারা বিশ্বে ইরানের প্রভাব বিস্তারের কথা স্বীকার করে তারা সবসময়ই ইরানের সামরিক শক্তিকে খর্ব করার চেষ্টা চালিয়ে এসেছে।
‘আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ’ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “ইরান ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে এবং এই ক্ষেপণাস্ত্র দেশটির অন্যতম প্রতিরক্ষা বুহ্য। তেহরান এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি পুঁজি বিনিয়োগ করেছে ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে।”
ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দামের চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধের সময় ইরানের বিভিন্ন শহর সাদ্দামের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মুখে পড়ে। চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ইরান ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে হাত দেয়। এ অঞ্চলের কয়েকটি আরব দেশের মতো ইরান কখনই কোটি কোটি ডলারের অস্ত্র কেনার দিকে ঝুঁকে পড়েনি। ইরান সবসময়ই চেষ্টা করেছে সামরিক শক্তিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে।
ইরানের ইসলামি সরকার কখনই সামরিক শক্তিকে অন্য দেশের বিরুদ্ধে হুমকি কিংবা আগ্রাসনের কাজে ব্যবহার করেনি। তবে যে কেউ ইরান কিংবা মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টির চেষ্টা করবে তেহরান তাদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করবে না। ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির হাতামি প্রতিরক্ষা শিল্পে আত্মনির্ভরশীলতার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, তার দেশ কোনো চাপ, নিষেধাজ্ঞা কিংবা হুমকির কাছে মাথা নত করবে না এবং ইরানের বিশেষজ্ঞরা তাদের গবেষণাকর্ম অব্যাহত রাখবে।
পার্সটুডে

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button