sliderস্থানিয়

রাঙামাটিতে ভূমি কমিশনের বৈঠক ঘিরে উত্তেজনা; অবরোধ ও বিক্ষোভের ডাক

মোঃ কামরুল ইসলাম, রাঙামাটি প্রতিনিধি: পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের বৈঠক প্রতিহত করতে ১৯ অক্টোবর (রবিবার) দিনব্যাপী ছাত্র-জনতার আহ্বানে ব্যাপক কর্মসূচি পালন করা হবে। পিসিসিপি’র আট দফা দাবি বাস্তবায়ন না করে বৈঠক করার চেষ্টা করা হলে কঠোর অবস্থান নিয়ে তা প্রতিহত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
​পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের বৈঠককে কেন্দ্র করে রাঙামাটিতে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

আগামী ১৯ অক্টোবর রবিবার এই বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। তবে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) ও সচেতন ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে এই বৈঠক প্রতিহত করতে সেদিন দিনব্যাপী রাঙামাটি শহরে ব্যাপক কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাঙামাটি শহরের একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা সভাপতি মো: তাজুল ইসলাম তাজ। ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- বৈঠক স্থান ঘেরাও, বিক্ষোভ এবং পৌর এলাকায় দিনব্যাপী অবরোধ পালন।

সংবাদ সম্মেলনে মো: তাজুল ইসলাম তাজ বলেন,বিতর্কিত ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের বৈঠক প্রতিহত করতে ও আমাদের ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে আমরা আগামী রবিবার রাঙামাটি শহরে বিক্ষোভ, ঘেরাও ও অবরোধ পালন করবো।তিনি দল-মত নির্বিশেষে সকলকে এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে উপস্থিত হওয়ার আহ্বান জানান।

কর্মসূচি অনুযায়ী, ১৯ অক্টোবর রবিবার সারাদিন ব্যাপী রাঙামাটি শহরের প্রতিটি মোড়ে দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতা অবস্থান নেবে। এই অবস্থান থেকেই তারা বৈঠক স্থান ঘেরাও এবং পৌর এলাকায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করবে।
​সংবাদ সম্মেলন থেকে পিসিসিপি তাদের সুনির্দিষ্ট আট দফা দাবি তুলে ধরেছে। এই দাবিগুলো বাস্তবায়ন না করে ভূমি কমিশনের বৈঠক করার চেষ্টা করা হলে, রাঙামাটির শান্তিপ্রিয় জনতাকে সাথে নিয়ে কঠোর অবস্থান নিয়ে তা প্রতিহত করা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।

সচেতন ছাত্র-জনতার পক্ষে পিসিসিপি ঘোষিত দাবি সমূহ হলো:
​১। পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনে জনসংখ্যা অনুপাতে সকল জাতি গোষ্ঠী থেকে সমান সংখ্যক সদস্য নিশ্চিত করতে হবে।
২। পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির কার্যক্রম শুরুর পূর্বে, ভূমির বর্তমান অবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ভূমি জরিপ সম্পন্ন করতে হবে।
৩। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের মানুষের ভূমির উপর ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশের সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক ভূমি কমিশন সংশোধনী আইন ২০১৬ এর ধারা সমূহ বাতিল করতে হবে।
৪। পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি ব্যবস্থাপনা দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী প্রবর্তন করতে হবে এবং সমতলের ন্যায় জেলা প্রশাসকগণকে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির অধিকার দিতে হবে।
৫। কমিশন কর্তৃক ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির কারণে কোনো ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্থ হলে তাকে পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকারি খাস জমিতে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৬। পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের চেয়ারম্যানের ক্ষমতা ২০০১ সালের ভূমি কমিশন আইন অনুযায়ী বলবৎ করতে হবে।
৭। পার্বত্য চট্টগ্রামে তথাকথিত রীতি, প্রথা ও পদ্ধতির পরিবর্তে দেশে বিদ্যমান ভূমি আইন অনুসারে ভূমি কমিশনের কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
৮। বাংলাদেশ সরকারের আদেশ অনুযায়ী জেলা প্রশাসক কর্তৃক বন্দোবস্তীকৃত, অথবা কবুলিয়ত প্রাপ্ত মালিকানা থেকে কাউকে উচ্ছেদ করা যাবে না।

সংবাদ সম্মেলনে পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো: আলমগীর হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক পারভেজ মোশাররফ হোসেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব পরিষদের সভাপতি মো: নূর হোসেন, পিসিএনপি’র রাঙামাটি জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মো: হুমায়ুন কবির সহ বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button