sliderস্থানিয়

মানিকগঞ্জে বিশ্ব খাদ্য দিবসে খাদ্য উৎসব পালিত

মোহাম্মদ আলী,মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা হাটিপাড়া ইউনিয়নের বরুন্ডি গ্রামে কৃষি প্রতিবেশবিদ্যা শিক্ষন কেন্দ্রে “হাতে রেখে হাতে, উত্তম খাদ্য ও উন্নত আগামীর পথে” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষ্যে খাদ্য উৎসব পালিত হয়। ১৬ অক্টোবর বরুন্ডি কৃষক সংগঠনের আয়োজনে, বেসরকারী গবেষণা ধর্মী প্রতিষ্ঠান বারসিক ও PANAP সহযোগিতা করেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষক গবেষক ও কৃষক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সবিতা বিশ্বাস।
এ সময় খাদ্য উৎসবে আলোচনা করেন কৃষক মাহিনুর আক্তার, বিনা মন্ডল, কল্পনা সরকার মোঃ সোবাহান, গুরুদাস সরকার, কৃষক গবেষক গোসাইদাস সরকার
প্রমূখ।

এ সময় বারসিক প্রোগ্রাম অফিসার গাজী শাহাদত হোসেন বাদল, সত্যরঞ্জন সাহা, মুকতার হোসেন ও বারসিক মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল চন্দ্র রায় বলেন বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে খাদ্য উৎসবে গ্রাম বাংলার সংস্কৃতি নারীদরে চর্চা ফুটে উঠেছে।

গ্রামে মানুষ বসবাস করে খাবারের সমস্যা হলে মাঠ ঘাট থেকে খাবার সংগ্রহ করে খাবার চাহিদা মেটাতে পারেন।চাষাবাদে কৃষক পর্যায়ে তথ্য আদান প্রদানের মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে সহায়ক হয়। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য রক্ষায় পিঠা পায়ে, নাড়ু মুড়ি তৈরী আমাদে সংস্কৃতি, বাংলার মানুষের নিরাপদ খাদ্য ও খাদ্য নিরাপত্তায় সহায়তা করে। । কৃষকের কৃষি চর্চা ও বৈচিত্র্যময় ফসল চাষের মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা সহায়ক হবে।

খাদ্য উৎসবে অংশগ্রহন করেন যুব, শিশু ও নারী, কৃষক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ইউপি সদস্য ও উন্নয়ন কর্মী সহ শতাধিক মানুষ। উৎসবে গ্রামের নারীদের হতের তৈরী ঐতিহ্যবাহী পিঠা পায়েসের ষ্টল, জৈব উপায়ে চাষকৃত সবজি ষ্টল, নিরাপদ খাদ্য ফলের ষ্টল, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে বালাই ও জৈব সারে ষ্টল, গ্রামীণ কৃষি যন্ত্রপাতির ও বীজ ষ্টল, অচাষকৃত উদ্ভিদের ষ্টল উপস্থাপন করেন।ষ্টলের মাধ্যমে বরুন্ডি গ্রামের কৃষক সবিতা বিশ্বাস অচাষকৃত উদ্ভিদের উপকারিতা তুলে ধরেন। গ্রামীণ পরিবারে যখন খাবারের সমস্যা হলে বা পরিবারে খাবার না থাকলে চকে থেকে অচাষকৃত কুড়িয়ে পাওয়া হেলেঞ্চা,কচু, ঘিমা, কাটানইটা, থানকুনি, বউটুনি, বাইতা শাক সংগ্রহ করে রান্না করি। এই শাক রাসায়নিক সার ও বিষ ছাড়া, পুষ্টি গুন অনেক বেশি।খেতেও স্বাদ ভালো।

কৃষক শোভা রাণি বরুন্ডি হাটিপাড়া, মানিকগঞ্জ পিঠা পায়েসের ষ্টল থেকে বলেন আমাদের জমির হিজল দিঘা ও ডেপর ধানের চাল গুড়ি করে কুলি পিঠা,চিতই পিঠা, মুড়ি, খই, নারিকেলের নাড়ু, মুড়ির নাড়ু,খয়ের নাড়ু, পাটিসাপটা পিঠা, ভাপা পিঠা, তিল কুলি, মিষ্টান্ন, পিঠা তৈরী করেছি। কালিজিরা ধানের চাল দিয়ে পায়েস তৈরী করেছি। নিজের হাতে তৈরী করে খেলে খাবার নিরাপদ হয়। আমরা ভালো থাকি, অসুখ হয় না। গ্রামীণ পিঠা পায়েসের ঐতিহ্য রক্ষায় খাদ্য উৎসব অন্যান্য নারীদের উৎসাহীত করবে। পিঠা পায়েস আমাদের দীর্ঘ দিনের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, সক্ষমতা ও লোকায়েত চর্চা। এই চর্চার মাধ্যমে গ্রামীন খাদ্য সংস্কৃতি ফুটে উঠে।

আমরা জৈব উপায়ে ধান, শাক সবজি, মসলা চাষ করি।উৎপাদিত ফসল আমরা নিজেরা খাই ও বাজারে বিক্রয় বেশ ভালো দামে বিক্রয় করি। বর্তমানে গ্রামে যারা জৈব উপায়ে চাষ করে তাদের সুনাম আছে, বাজারে ফসল নিলে সহজে বিক্রয় হয়ে যায়।খাদ্য উৎসবে বিভিন্ন ধরনের বালাই ও কম্পোষ্ট সার উপস্খাপনের মাধ্যমে কৃষকগণ কম খরচে চাষাবাদে উৎসাহীত হবে। চাষাবাদ কৌশল ও জ্ঞান চর্চা তথ্য আদান প্রদান হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button