sliderস্থানিয়

ফরিদপুরে কেন্দ্রীয় এনসিপি নেতার বাবাকে হামলায় থানায় মামলা 

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : বোয়ালমারীতে কেন্দ্রীয় এনসিপি নেতা হাসিবুর রহমান অপুর বাবা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যের উপর হামলার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। হামলার সময় আসামীরা বাড়িতে ঢুকে বেআইনি জড়তাবদ্ধ হয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে বাড়িঘরে লুটপাট চালিয়েছে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। 

এ ঘটনায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর বোয়ালমারী থানায় হাসিবুর রহমানের চাচা আজিজুর রহমান ঠাকুর বাদি হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৬-৭ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন। তবে ঘটনার দ্ইুদিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ এখনো আসামীদের (রবিবার দুপুর পর্যন্ত) গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপপরিদর্শক মো. শিমুল মোল্যার কাছে আসামীদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনার পর থেকে আসামীরা পলাতক রয়েছে। তবে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আসামীদের গ্রেপ্তারের পুলিশ কাজ করছে। খুব শীর্ঘই তারা ধরা পড়বে। 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় জেলার বোয়ালমারী উপজেলার চতুল ইউনিয়নের আরাজী বারখাদিয়া গ্রামে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য ও কেন্দ্রীয় এনসিপি নেতা হাসিবুর রহমানের বাবা বজলুর রহমান ঠাকুরের বাড়িতে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালায় একই গ্রামের ছিরু শেখ তার ছেলে সজিব শেখ, জুয়েল শেখ ও তানভীর গাজীসহ ১০-১২ জন দুর্বৃত্তরা। এ সময় বাড়িতে ঢুকে গালিগালাজ করতে থাকলে বসতঘর থেকে বজলুর রহমান ঠাকুর বের হয়ে প্রতিবাদ করলে ধারালো দেশীয় অস্ত্র রামদা,লোহার রড ও লাঠিসোঠা দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে হামলাকারীরা। ঘটনার সময় বজলুর রহমান ঠাকুরের স্ত্রী ফরিদা বেগম স্বামীকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাকেও লাঞ্ছিত করে তার গলায় থাকা স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয় আসামীরা। আসামীদের বিরুদ্ধে বসতঘর ভাঙচুর করে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার লুটপাট করার কথা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। 

মামলার বাদি অপুর চাচা আজিজুর রহমান ঠাকুর জানান, জুলাই আন্দোলন শুরুর সময় থেকেই ফ্যাসিস্টের আওয়ামী দালালরা অপুকে আন্দোলন থেকে বিরত রাখতে আমাদের উপর চাপপ্রয়োগ করে আসছিল। গত ৫ আগস্টের পর তারা কিছুটা গা-ঢাকা দিলেও সম্প্রতি অপু সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে প্রচারণা করায় আবারো তারা নানা ভাবে আমাদের হয়রানি ও হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় এলাকার কিছু সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোকজন আমার ভাইয়ের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। 

হামলায় আহত বজলুর রহমান ঠাকুর বলেন, আমি সারাজীবন পুলিশের চাকরি করেছি, কেউ বলতে পারবেনা আমি কারো কোনো ক্ষতি করেছি। তা গ্রামের লোকজন জানেন, তারাই স্বাক্ষ্য দিবে। আমার ছেলে জুলাই বিপ্লবে অংশ নেওয়ার পর থেকেই হামলাকারীরা নানাভাবে আমাদের অত্যাচার করে আসছে। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করায় আমার উপর হামলা হয়েছে। 

আগামী সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-১ আসন (মধুখালী-বোয়ালমারী-আলফাডাঙ্গা) থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হাসিবুর রহমান অপু বলেন, ২০০৮ সালে আমার বাবা পুলিশের চাকুরী থেকে অবসর নেন। তারপর থেকে বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন। গ্রামে কারো সাথে আমাদের বিরোধ না থাকলেও অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে আমার বাবা ও বাড়িঘরে হামলা চালানো হয়েছে। হতে পারে আগামী সংসদ নির্বাচনে এনসিপি থেকে মনোনয়ন চাওয়া কারণ। তিনি নির্বাচনী মাঠে আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে আমার মনোবল ভেঙ্গে প্রতিপক্ষ দলের লোকজন সন্ত্রাসীদের এটি করিয়েছে। আমি জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে ধারণ করে এদেশের মানুষকে সত্যিকারের স্বাধীনতার স্বাদ দিতে কাজ করে যাবো ইনশাআল্লাহ। তিনি সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা ও হামলার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন। 

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বোয়ালমারী থানা অফিসার ইনচার্জ মাহমুদুল হাসান বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে আসামীরা পালিয়ে রয়েছে। তবে আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button