
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: দেলাওয়ার হোসেন বলেছেন,জামায়াতে ইসলামীকে আগামী দিনে ক্ষমতায় নিয়ে আসবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি দাবি করেন, মানুষ জামায়াতকে নিরাপদ মনে করে এবং ক্ষমতায় এলে দলটি ন্যায়ভিত্তিক কল্যাণরাষ্ট্র গড়ে তুলবে।
ঠাকুরগাঁও শহরের সাধারণ পাঠাগার মাঠে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশ ঠাকুরগাঁও শহরের সাধারণ পাঠাগার মাঠে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশ |
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের মতো জাতীয় নির্বাচনে জামায়াত বিজয় লাভ করবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ও ঠাকুরগাঁও-১ (সদর) আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী দেলাওয়ার হোসেন।
তিনি বলেছেন, ‘ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রাম এবং সর্বশেষ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির বিশাল বিজয় অর্জন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা শিবিরের হাতে যে রেজাল্ট তুলে দিয়েছে, সে রেজাল্টই প্রমাণ করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীও একইভাবে ভূমিধ্বস বিজয় লাভ করবে। কারণ ছাত্র-ছাত্রীরা যেভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরকে নিরাপদ মনে করেছে, ঠিক সেভাবে সারাদেশের মানুষও জামায়াতে ইসলামীকে নিরাপদ মনে করে। সুতরাং আগামী দিনে বাংলাদেশের নিরাপত্তা জামায়াতে ইসলামীই দিতে পারবে।’
তিনি আরো বলেছেন, ‘নিরাপদ, সুখী, সম্মৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য এদেশের মানুষ ব্যালট বিপ্লবের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামীকে আগামী দিনে ক্ষমতায় নিয়ে আসবে, ইনশাআল্লাহ।’
শনিবার (১৮ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় ঠাকুরগাঁও শহরের সাধারণ পাঠাগার মাঠে আয়োজিত এক শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দেলাওয়ার হোসেন বলেন, ‘শ্রমিকরা হলো দেশের অর্থনীতির মূল চাবিকাঠি। শ্রমিকদের নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু শ্রমিকদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। আল্লাহ শ্রমিকদের বন্ধু হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন, কিন্তু আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতাদের বন্ধু হতে পারে না শ্রমিকরা। দুর্নীতিবাজ, সুদখোর, ঘুষখোর, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজরাই আমাদের দেশের নেতাদের বন্ধু হয়। অথচ শ্রমিকরা রাজনীতিবিদদের বন্ধু হতে পারে না। তাদের ধারের কাছেও যেতে পারে না। শুধুমাত্র ইসলামী শাসন ব্যবস্থা না থাকার কারণে একটি মানবিক ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না থাকার কারণে, কোরআন ও সুন্নাহর আইন প্রতিষ্ঠিত না থাকার কারণে আজ শ্রমিকরা ন্যায় বিচার পাচ্ছে না। তারা মর্যাদা ও সম্মান পাচ্ছে না। আগামী দিনে জামায়াত রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে একটি কল্যাণমূলক মানবিক রাষ্ট্র গড়ে তুলবে। সুশাসন ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করবে। শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার ও সম্মান পাবে। শ্রমিকদের জন্য মজুরি কাঠামো ও বোর্ড গঠন করা হবে। ইসলামী শ্রমনীতি প্রতিষ্ঠা করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের ভাই, এ ঠাকুরগাঁওয়ের সন্তান, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আমাকে এ আসনে (ঠাকুরগাঁও-১) মনোনীত করা হয়েছে। আমাকে কাজ করার জন্য বলা হয়েছে, নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সংগঠনের নির্দেশনায় আমি এখানে আগামী নির্বাচনের জন্য কাজ করছি। আমি শুধুমাত্র এমপি হওয়ার জন্য নয়, রাজনীতিবিদ হিসেবে নয়, আপনাদের একজন সন্তান, ভাই, বন্ধু, সহপাঠী হিসেবে আমি ছাত্রজীবন থেকেই এলাকার মানুষদের জন্য কাজ করে আসছি। যার অংশ হিসেবে, সামর্থহীন পরিবারে টিউবওয়েল, মসজিদে ওযুখানা স্থাপন, কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে গবাদিপশু, মেলাই মেশিন, রিকশা-ভ্যান বিতরণ, অসহায় পরিবারে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেয়া, অসুস্থদের চিকিৎসা সহায়তা দেয়াসহ বিভিন্ন মানবিক ও সামাজিক কাজ করে আসছি। যেখানে, দল, মত বা ধর্মের বিচার না করে আমি সকলের পাশে থাকার চেষ্টা করছি। আপনারা যদি আগামী দিনে আমাকে এমপি নির্বাচিত করে সংসদে পাঠান, তাহলে সরকারি বরাদ্দের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করে এলাকার উন্নয়ন করা হবে। এ এলাকার রাস্তাঘাট পাকাকরণ, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ, কৃষিভিত্তিক শিল্প কারখানা স্থাপন, মেডিক্যাল কলেজ ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ প্রতিষ্ঠা, যুব প্রশিক্ষণ সেন্টার স্থাপন, বন্ধ বিমান বন্দর চালু করণসহ জনকল্যাণমূলক উন্নয়ন কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হবে।’
ঠাকুরগাঁও জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ কফিল উদ্দিন আহাম্মদের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনর রশিদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর সাবেক ঠাকুরগাঁও জেলা আমির অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল হাকিম, বর্তমান জেলা আমির অধ্যাপক বেলাল উদ্দিন প্রধান, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক অধ্যাপক আবুল হাসেম বাদল, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মোহাম্মদ আলমগীর,শ্রমিক কল্যাণের জেলা সভাপতি মতিউর রহমান।
সমাবেশে জামায়াত, শিবির ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের বিভিন্ন স্তরের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।