কবি নির্মলেন্দু গুণের পর ২১শে পদকের দাবি তুললেন কবি অসীম সাহা। শুক্রবারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নির্মলেন্দু গুণের নিজে থেকে স্বাধীনতা পদক দাবি শিরোনামের এক স্ট্যাটাসে কবি নির্মলেন্দু গুণের পক্ষেই অভিমত দিয়েছেন অসীম সাহা।
একই সঙ্গে কবি নির্মলেন্দু গুণের ২১শে পদক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে যারা দ্বিমত পোষণ করেছেন, তাদের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। ফেসবুকের স্ট্যাটাসে কবি অসীম সাহা লিখেছেন, নির্মলেন্দু গুণ স্বাধীনতা পদক দাবি করেছেন। তাতে অনেকেই মনক্ষুণœ হয়েছেন। অনেকে এমন অশ্লীল কটাক্ষ করেছেন যে, তাদেরকে মাতৃগর্ভজাত বলে মনে হয় না! যেখানে শিশু না কাঁদলে মাতৃদুগ্ধ পাওয়া যায় না, সেখানে দাবি না জানালে নির্মলেন্দু গুণকে আরও কত পরে স্বাধীনতা পদক দেওয়া হতো, তা নিয়ে সংশয় আছে। গুণকে কেন এই দাবি জানাতে হলো?’
কবি নির্মলেন্দু গুণের নিন্দুকদের উদ্দেশে তিনি লিখেছেন, যারা মানুষের ভালোবাসা ইত্যাদি বাণী শুনিয়েছেন, তারা এতদিন কোথায় ছিলেন? এতদিন তারা কেন এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করে দাবি জানাননি যে, নির্মলেন্দু গুণকে স্বাধীনতা পদক দেওয়া হোক। পশ্চাৎদ্দেশে আল দেওয়া যাদের স্বভাব, ছুতোনাতা পেলেই তারা সে কাজটিতে দারুণ পটু। আর আসল কাজের সময় তাদের টিকিটির দেখা মেলে না! এটা হচ্ছে কিছু বেয়াদব বাঙালির মজ্জাগত অভ্যাস।’ একুশে পদকপ্রাপ্ত কবিদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।
তিনি লিখেছেন, আজ ৫০ বছরের অধিক সময় ধরে শুধু কবিতার জন্যে আমার জীবন উৎসর্গ করেছি। ১৯৬৪ সালে লেখালেখির শুরু করি। বাংলা একাডেমি আমাকে সাহিত্য পুরস্কার দিয়েছে ২০১১ সালে। কত বছর হলো? এর আগে যাদের দেওয়া হয়েছে, তাদের সকলেই কি আমার চেয়ে যোগ্য ছিল? আমি নিজে থেকে কোনো পুরস্কার, পদক, সম্মাননা প্রভৃতির কোনো দাবি কখনো করিনি। কিন্তু যারা এখন বড় বড় বাণী শোনাচ্ছেন, তারা কেউ কখনো আমার পক্ষে দাবি তুলেছিলেন যে, “অসীম সাহাকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রদান করা হোক।” কারা এখন ২১শে পদক পাচ্ছেন? তারা আমার চেয়ে কোনদিক দিয়ে, কতটা যোগ্য?’
আমলাদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘এক ছাগল আমলার কারণে আমাকে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে চলে আসতে হয়েছিল। তখন এই বাণী-প্রদায়করা কোথায় ছিলেন? তারা কী এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিলেন? তারা কী কোনো দিন আমাকে একুশে পদক প্রদানের জন্য কোনো দাবি জানিয়েছেন? যদিও তারা দাবি জানালেও কোনো কাজ হবে না! কারণ ওখানে দু-একজন দুর্দান্ত ক্ষমতাশালী আমলা বসে আছেন, যারা ২১শে পদক কমিটিতে আমলাশক্তি প্রয়োগ করতে দ্বিধা করেন না, তারা কমিটিতে থাকতে আমি কখনো একুশে পদক পাব না!
তিনি আরও লিখেছেন, ‘তা হলে আমি কী করব? চুপ করে থাকব? আমি তো চুপ করেই আছি। কিন্তু যারা মহৎ বাণী শোনাচ্ছেন, গুণকে, আমাকে কিংবা অন্যকে হেদায়েত করছেন, তাদের কণ্ঠ এত মিহি কেন? তাই মুখগ্রন্থে বাহাদুরি দেখাবার আগে নিজ কর্তব্যটি পালন করুন। তারপর না হয় গুণ, আমি কিংবা যারা সত্য কথা বলতে ভয় পায় না, তাদের নসিহৎ করবেন।’ সুত্র : শীর্ষ নিউজ