বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস সংক্রমণের নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়েই ঢাকা-১০, গাইবান্ধা-৩ ও বাগেরহাট-৪ আসনের উপনির্বাচন শনিবার অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাওয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অনির্ধারিত জরুরি সভা শেষে কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর হোসেন এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। এর আগে সিইসির সভাপতিত্বে কমিশন ভবনে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
করোনাভাইরাসের ঝুঁকির কারণে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক সব ধরনের কর্মসূচি স্থগিত করার জন্য ভিডিও কনফারেন্সে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশনা পাঠানো হলেও এসব উপনির্বাচন অনুষ্ঠানে এখনও অনড় ইসি।
করোনাভাইরাসে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ জন ও একজনের মৃত্যুর খবর জানায় সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)।
ইসি সচিব বলেন, ‘কমিশন এ ভোটের বিষয়ে সুবিধা-অসুবিধা দুটি বিষয়ই বিবেচনা করেছে। সুবিধা বেশি মনে হয়েছে বলেই ভোটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
এদিকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচন, যশোর-৬ এবং বগুড়া-১ আসনের উপনির্বাচনের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শনিবার কমিশনের নিয়মিত একটি বৈঠক রয়েছে। সেখানেই পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
মো. আলমগীর বলেন, ‘সরকার যেহেতু এখনো করোনাকে দুর্যোগ ঘোষণা করেনি, বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি মহামারি আকার ধারণ করেনি এবং আপনাদের (গণমাধ্যম) কথা মতে ভোটার টার্নওভার কম হবে বলে এ নির্বাচনে স্বাস্থ্যঝুঁকি হবে না বলে মনে করছি’।
তিনি আরো জানান, নির্বাচনের সময় সব ভোটকেন্দ্রে হ্যান্ড সেনিটাইজেশনসহ স্বাস্থ্য নিরাপত্তায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভোটাররা হাত ধুয়ে ভোট দেবেন। ভোট দিয়ে আবার হাত ধোবেন।
ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব বলেন, ‘ঢাকা-১০ আসনে নির্বাচন যাতে বন্ধ হয় এ ধরনের কোনো অনুরোধ প্রার্থীদের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। তারা এ বিষয়ে অনেক শ্রম ও টাকা-পয়সা খরচ করেছেন। এখন যদি নির্বাচন বন্ধ করা হয় তাহলে তারা ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। নতুন করে ভোটের তারিখ নির্ধারণ করলে তাদের অনেক টাকা অপচয় হবে। এসব কথা চিন্তা করে ভোটের দিন না পেছানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাই ভোট হবে। ’
ভোটার কম উপস্থিতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘যেহেতু ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে উপস্থিতি কম ছিল এবং এরই মধ্যে করোনা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, সেই হিসেবে আমরা মনে করছি ভোটার উপস্থিতি কম হবে। আইন অনুযায়ী কোনো নির্বাচনে যদি একজন ভোটারও ভোটাধিকার প্রয়োগ করে, তাহলে নির্বাচন বৈধ হবে এবং প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করতে হবে’।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘সদ্য বিদেশফেরত ভোটারদের নির্বাচনে ভোট দিতে নিষেধ করা হয়নি, তবে তাদের ভোটকেন্দ্রে আসতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
ভোটের কারণে যদি কেউ সংক্রমিত হয় কিংবা এর সংখ্যা বেড়ে যায় তাহলে এর দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন নেবে কি না এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে। প্রতিটি বুথের পাশে ব্যানার থাকবে। কি করণীয় ব্যানারে তার দিকনির্দেশনা থাকবে।’
সংবাদ সম্মেলনে ইসির যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান, এসএম আসাদুজ্জামান, জনসংযোগ পরিচালক ইসরাইল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।