শফিকুল ইসলাম সুমন, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটের কাছে ডুবে যাওয়া ফেরি রজনীগন্ধার সহকারী মাস্টার হুমায়ুন কবিরের লাশ মিলল পাঁচ দিন পর। এদিন আরও একটি ট্রাক উদ্ধার করেছে উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা।
সোমবার বিকাল ৪টার দিকে হরিরামপুর উপজেলার পদ্মা নদী থেকে হুমায়ুনের লাশ উদ্ধার করা হয় বলে পাটুরিয়া নৌ-পুলিশের ওসি মিজানুর রহমান জানিয়েছেন।
বিআইডব্লিউটিসির আরিচা অঞ্চলের উপ-মহাব্যবস্থাপক শাহ মোহাম্মদ খালেদ নেওয়াজ জানান, ফেরিডুবির ঘটনাস্থল থেকে ১৩ থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে হরিরামপুরের পদ্মা নদীতে হুমায়ুনের লাশ ভেসে ওঠে।
বুধবার সকাল ৮টার দিকে পাটুরিয়া ঘাটের ৫ নম্বর ফেরিঘাটের ২০০ মিটার অদূরে পদ্মায় নয়টি যানবাহন নিয়ে ডুবে যায় ফেরি রজনীগন্ধা-৭। অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পাড়ে ফিরলেও হুমায়ুনের কোন খোঁজ মিলছিল না।
ওই এলাকা থেকেই বেলা সাড়ে ৩টার পর ডুবে যাওয়া ফেরি থেকে আরও একটি ট্রাক উদ্ধার করা হয় বলে বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তা খালেদ নেওয়াজ জানান। এ নিয়ে মোট পাঁচটি ট্রাক উদ্ধার করা হল।
৫ দিন পর ভেসে উঠল ফেরির সহকারী মাস্টারের লাশ
সবাইকে বাঁচিয়ে নিখোঁজ ছিলেন হুমায়ুন। গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরে তার স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। তিনি ২০১১ সালে বিআইডব্লিউটিসি-তে চাকরি শুরু করেন। সাত মাস আগে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরি পথে যোগদান করেন।
ঘটনার দিন হুমায়ুন কবিরের ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিসির আরিচা ঘাটের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রুবেলুজ্জামান বলেন, “আমরা শুনেছি, যখন ফেরিটি ডুবতে থাকে তখন হুমায়ুন সবাইকে সতর্ক করে। একে একে সবাইকে ট্রলারে তুলে দেন। শেষে আর তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।”
ফেরি ডুবে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধানে জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিএ গঠিত দুটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে। সাত কর্মদিবসের মধ্যে কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।
ফেরি ডুবির দিন উদ্ধারকারী জাহাজ ‘হামজা’ গিয়ে একটি কভার্ডভ্যান ও একটি ট্রাক উদ্ধার করে। পরদিন আরেক উদ্ধারকারী জাহাজ ‘রুস্তম’ গিয়ে উদ্ধার করে তুলা বোঝাই একটি ট্রাক। রোববারও একটি ট্রাক উদ্ধার করা হয়।
তবে রজনীগন্ধা ফেরি গাড়ি নিয়ে কেন ডুবে গেল, সেই প্রশ্নের সুনিশ্চিত জবাব পাওয়া যায় নাই।
দুর্ঘটনার পর নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী মালবাহী একটি ছোট জাহাজের ধাক্কার কথা বলছেন। তবে তা নাকচ করছেন ফেরিতে থাকা গাড়ির চালকরা। তাদের বক্তব্যে ফেরির পেছনের দিকে একটি গোল ঢাকনার মতো জায়গা দিয়ে নিচ থেকে পানি ওঠার কথা উঠে এসেছে।
আর চালকদের ভাষ্য, সেখানে অন্য কোনো নৌযানের ধাক্কার কোনো ঘটনা দেখেননি। বরং ধীরে ধীরে কাত হয়ে ফেরিটিকে ডুবতে দেখেছেন তারা।