৪ মাস পর চোখ মেলছে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন গুলিবিদ্ধ মুসা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ শিশু মুসাকে নিয়ে আশার আলো দেখছে তার পরিবার। গুলিবিদ্ধ হওয়ার প্রায় চার মাস পর শিশুটি এখন চোখ খুলেছে, নাড়তে শুরু করেছে হাত-পা।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য শাহরিয়ার মাহমুদ ইয়ামিন এই তথ্য জানিয়েছেন।
শাহরিয়ার মাহমুদ ইয়ামিন বলেন, সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন মুসা হাত-পা নাড়ছে, চোখ খুলছে, বসতে পারছে। এটা আমার কাছে অবিশ্বাস্য লাগছে। আমার চোখে-মুখে কী পরিমাণ আনন্দ তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। মুসা চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সবচেয়ে ছোট যোদ্ধা। এক বুলেট তার দাদির পেটের এক পাশ দিয়ে ঢুকে অন্য পাশ দিয়ে বের হয়ে মুসার মাথায় লেগেছিল। দাদি স্পট ডেট হলেও এখনো মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে বেঁচে আছে মুসা। এখনো তার বেঁচে থাকাটা এক অলৌকিক ঘটনা।
শাহরিয়ার মাহমুদ ইয়ামিন আরও বলেন, সরকার প্রথম ধাপে অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ ছাড়া মুসার জন্য এককালীন এক কোটি ৭৫ লাখ টাকা পাঠিয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে আরও এক কোটি টাকা পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এছাড়াও সরকারি খরচে থাইল্যান্ডে চিকিৎসা চলছে তিন জনের।
মুসার সঙ্গে রয়েছেন তার মা নিশামনি। তিনি বলেন, তার ছেলের এখন লাইফ সাপোর্ট লাগছে না। সে নিজে থেকে হাত-পা কিছুটা নাড়াতে পারছে। চোখ খুলে তাকাচ্ছে। আগে সে চোখের পাতা ফেলত না। তবে এখন ফেলছে। তবে তার দৃষ্টি অর্থপূর্ণ নয়। চোখের সামনে আলো ধরলে বা আঙুল নিয়ে গেলে সে সাড়া দেয় না।
উল্লেখ্য, মুস্তাফিজুর রহমান ও নিশামণি দম্পতির একমাত্র সন্তান মুসা। দাদির সাথে আইসক্রিম কিনতে গিয়ে গত ১৯ জুলাই রাজধানীর রামপুরার মেরাদিয়া হাট এলাকায় বাসার নিচে গুলিবিদ্ধ হয় মুসা ও তার দাদি মায়া ইসলাম (৬০)। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর শুরুতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর দীর্ঘ আড়াই মাস ধরে ঢাকা মেডিকেল ও সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় তাকে গত ২২ অক্টোবর এয়ার এম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুর পাঠানো হয়।