
আগামী ২৫শে এপ্রিল করোনাভাইরাস পরীক্ষা করতে ৫০০ কিট সরকারের কাছে হস্তান্তর করবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বিবিসি বাংলাকে একথা জানান।
তিনি বলেন, এই ৫০০ কিট দেয়া হচ্ছে সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার জন্য।
“এটা দিচ্ছি তারা যাতে (সরকার) কম্পারিজন (তুলনা) করতে পারে।”
আশা করা হচ্ছে যে, এই কিট দেয়ার পর দু-তিন দিনের মধ্যে সরকার চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে। অনুমোদন পাওয়ার পর পর্যায়ক্রমে এক লাখ কিট দেয়া হবে বলে জানানো হয়।
তিনি বলেন, এর আগে গত ২০ শে এপ্রিল কিট জমা দেয়ার কথা থাকলেও বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে ল্যাবে যান্ত্রিক ত্রুটি তৈরি হওয়ায় সেই ব্যাচটি বরবাদ হয়ে যায়। ফলে পুরো ব্যাচটিই নতুনভাবে তৈরি করতে হয়েছে। যার কারণে ঠিক সময়ে সেগুলো হস্তান্তর করা যায়নি।
তবে এই কিটটি আরো উন্নত হয়েছে বলে জানান তিনি।
বর্তমানে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ল্যাবে যে উৎপাদন পদ্ধতিতে কিট উৎপন্ন করা হচ্ছে তা আধা-স্বয়ংক্রিয়। যার সাহায্যে মাসে এক লাখ কিট উৎপাদন সম্ভব।
তিন মাস পরে এক কোটি কিট সরবরাহ করার কথা ভাবছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। তবে তার জন্য কিট উৎপাদনে অটোমেশন পদ্ধতি স্থাপন করতে হবে।
এছাড়া ইংল্যান্ড, চীন ও আমেরিকা থেকে কিছু কাঁচামাল এখনো এসে পৌঁছায়নি বলে জানান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
এসব সমস্যা ছাড়াও স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে পর্যাপ্ত সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে না বলে তিনি অভিযোগ করেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সাত দিন আগে গবেষণার জন্য আক্রান্ত রোগীদের থেকে ১০টি রক্তের নমুনা চেয়েছিলেন। কিন্তু সেগুলো তারা এখনো হাতে পান নি।
“এটা আমলাতান্ত্রিকতা। তারা একটা ছোট অর্ডার দিয়ে দিলেই হয়। এটা তো মিষ্টি না যে আমরা খেয়ে ফেলবো।”
গবেষণার জন্য দুটি হাসপাতাল থেকে যাতে রক্তের নমুনা নেয়া যায় তার অনুমোদন দিলেই হয় বলে জানান তিনি। আর এতে করে গবেষণা আরো অনেক বাড়বে এবং আরো বেশি তথ্য পাওয়া সম্ভব হবে বলেও জানানো হয়।
“আমাদের আগের গবেষণাগুলো বাইরের রক্ত দিয়ে করা। বাংলাদেশের রোগীর রক্ত পাওয়া গেলে অনেক বেশি তথ্য পাওয়া যেতো,” তিনি বলেন।
এমন অভিযোগের বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, রক্তের নমুনা চেয়ে কোন ধরণের আবেদন তারা পাননি।
এদিকে, যেসব কিট হস্তান্তর করা হবে সেগুলো সংক্রমিত বাংলাদেশিদের রক্তের উপর গবেষণার পরই তৈরি করা হয়েছে বলে জানান। এর আগে সরকার ৫টি রক্তের নমুনা পাঠানোর পর সেগুলোর উপর গবেষণা চালানো হয়।
এই গবেষণার পর যে কিট উৎপাদন করা হয়েছে তা শতভাগ ক্ষেত্রে করোনাভাইরাস শনাক্ত করতে সক্ষম বলে জানান তিনি।
“আমাদের কিট হান্ড্রেড পার্সেন্ট এটাকে ডিটেক্ট (শনাক্ত) করতে পেরেছে,” তিনি বলেন।
১৫ মিনিটের মধ্যেই এই কিট দিয়ে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা সম্ভব।
কেনিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশ থেকে এই কিট কেনার প্রস্তাব আসছে বলে জানান তিনি।
তবে সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদন ছাড়া এটি সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি।
বিবিসি বাংলা