১৯ বছর পর সিংগাইরে স্ত্রী হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার

সিরাজুল ইসলাম, সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) : মানিকগঞ্জের সিংগাইরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী সালমা আক্তার (১৯) হত্যা মামলার মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামী স্বামী লাল চাঁন ওরফে রবিনকে (৪২)দীর্ঘ ১৯ বছর পর গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪, সিপিসি-৩, মানিকগঞ্জ। গ্রেফতারকৃত লালচান উপজেলার সায়েস্তা ইউনিয়নের শ্যামনগর গ্রামের করিম গাজী ও পালক পিতা মুন্নাফ পালের ছেলে।
রবিবার (১৭ মার্চ) রাত আটটার দিকে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানা এলাকা থেকে রবিনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় র্যাব-৪।
রাত বারোটার দিকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাব-৪, সিপিসি-৩ এর লেফটন্যান্ট কমান্ডার
মো. আরিফ হোসেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০২০ সালের জুনে লাল চানের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয় একই ইউনিয়নের দক্ষিণ সাহরাইল
গ্রামের নিহত সালমা আক্তারের। বিবাহের পরই লাল চান নেশা ও জুয়ার সাথে জড়িয়ে কর্মহীন হয়ে পড়ে। এরপর থেকেই সালমা
আক্তার ও তার পরিবারের কাছে যৌতুক দাবি করতে থাকে লালচান। সালমার পরিবার লাল চানের দাবীকৃত যৌতুক না দেয়ায়
তাকে প্রায়ই মারধর করতো। এ নিয়ে এলাকায় একাধিক গ্রাম্য সালিশ বৈঠকও হয়েছে। সবশেষ ২০০৫ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রবিনের মারপিটে নিহত হয় সালমা আক্তার। পরদিন নিহতের মা বাদী হয়ে সিংগাইর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনার তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা ও সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে লাল চাঁনের বিরুদ্ধে আদালতে
চার্জশীট দাখিল করেন। আদালত সাক্ষ্য প্রমান ও উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ আসামী লাল চাঁনকে
মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেন। উক্ত মামলায় গ্রেফতার এড়াতে পলাতক থাকায় আদালত আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী
করেন।
আরো জানা যায়, মামলা রুজুর পর থেকে গ্রেফতার এড়াতে আসামি লাল চান ছদ্মনাম রবিন ব্যবহার করে আসছিলো। পেশা
পরিবর্তন করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন।
প্রথম স্ত্রী হত্যার পর লালচান দ্বিতীয় বিয়ে করলে সে ঘরে রানী নামের এক কন্যা সন্তান আছে।
র্যাব-৪, সিপিসি-৩ এর লেফটন্যান্ট কমান্ডার মো. আরিফ হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।