‘১৭ মার্চ’ পূর্বাচলে শুরু বাণিজ্য মেলা

করোনার কারণে দুই মাস পিছিয়ে মার্চে শুরু হতে যাচ্ছে ২৬তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমতি পেলে’ মার্চের ১৭ তারিখ রাজধানীর পূর্বাচলে নতুন ভ্যেনুতে মেলার আয়োজন হবে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়।
সূত্র জানায়, এ সপ্তাহেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেবে আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। অনুমতি মিললে ডিসেম্বরেই কেবল রপ্তানি করে এমন প্রতিষ্ঠানের কাছে দরপত্র চাওয়া হবে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক ক্রেতা ও প্রতিষ্ঠানকে মেলায় অংশ নিতে এ মাসেই দূতাবাসগুলোকে চিঠি দেওয়া হবে।
রবিবার ইপিবির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা রবিবার সন্ধ্যায় দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘করোনার কারনে আমরা মেলা পিছিয়েছি। মুজিব বর্ষেই আমরা এ মেলা করতে চাচ্ছি। তবে মেলার নামে কোনো পরিবর্তন হবে না। অন্য সময় মেলা সামনে রেখে ছয় মাস আগেই প্রস্তুতি নেয়া হয়। করোনার কারণে আমারা এখন আড়াই মাসের মতো সময় পাবো। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন মিললে দরপত্র ও দূতাবাসকে চিঠি দেব। করোনা পরিস্থিতির আরো অবনতি হলে নতুন সিদ্ধান্ত আসতে পারে।’
এত অল্প সময়ের মধ্যে কীভাবে মেলা আয়োজন করবেন জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এবারের মেলা পূর্বাচলের স্থায়ী ভ্যেনুতে হচ্ছে। তাই অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জায় সময় কম যাবে। এ ছাড়া স্টলও কম থাকছে। তাই চাপও কম। কেবল রপ্তানিযোগ্য প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নেয়ায় আগের মতো তেমন ভীড় থাকবে না। তাই করোনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাটা অনেক সহজ হবে।’
১৯৯৫ সাল থেকে জানুয়ারিতে এই মেলার আয়োজন করে ইপিবি। গত ২৫টি মেলা অস্থায়ীভাবে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল। ২০০৭ সালে সেখানেই একটি স্থায়ী মেলা কেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। পরে পূর্বাচলে এ মেলা আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু পুরোপুরি কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় এতদিন আগারগাঁওয়েই মেলার আয়োজন হয়ে আসছিল।
তবে আয়োজনের পর থেকে কখনো এ মেলা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রাখতে পারেনি বলে অভিযোগ রপ্তানিকারকদের।
বিদেশি ক্রেতাদের আনতে ব্যর্থ হওয়া, নিম্নমানের স্থানীয় পণ্যের খুচরা দোকানদারদের স্টল বরাদ্দ দেওয়া, রপ্তানিমূখী প্রতিষ্ঠানকে স্টল না দেওয়া ও স্টল বরাদ্দে অনিয়মসহ নানা অভিযোগ ছিল ব্যবসায়ীদের।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিও ২৫তম মেলার উদ্বোধনে বলেছিলেন, ‘এ মেলা কোনোভাবেই আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে নেই। তবে আগামীবার থেকে পূর্বাচলে এটি অনুষ্ঠিত হলে তখন থেকে পুরোপুরি আন্তর্জাতিক মানের চেষ্টা করা হবে।’
এবারের মেলায় কোনো পরিবর্তন আসবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ইপিবি সচিব মাহমুদুল হাসান শনিবার দেশ রূপান্তরকে বলেছিলেন, ‘আমাদের থেকে এতদিন যারা স্টল নিয়েছে তারাও কিন্তু রপ্তানি করে এমন ঘোষণা দিয়েই দিয়েছে। তবে এবার আমরা অনেক যাচাই-বাছাই করব। সর্বোচ্চ চেষ্টা করব রপ্তানিকারকদের কেবল স্টল দিতে। তাছাড়া ওখানে (পূর্বাচল) নিম্নমানের খুচরা বিক্রেতারা সুবিধাও করতে পারবে না। করোনা পরিস্থিতি ভালো থাকলে আমরা এবারের মেলায় সর্বোচ্চ মান এবং বিদেশি ক্রেতা উপস্থিতির চেষ্টা করব। কেবল সত্যিকারে রপ্তানিকারকরাই যাতে স্টল পায় সেই দিকে সর্বোচ্চ খেয়াল রাখব।’
সুত্র : দেশ রূপান্তর