গায়ক ইলিয়াস হোসাইনের বিরুদ্ধে যৌতুকের জন্য নির্যাতনের অভিযোগে করা মামলা ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে আপসে সম্মত হয়েছেন অভিনেত্রী শাহ হুমায়রা হোসেন সুবহা। তাই তিনি মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন। তবে ইলিয়াস চাইলে এখনও তার সাথে সংসার করতে চান সুবহা।
সোমবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক সাবেরা সুলতানা খানমের আদালতে যৌতুকের জন্য নির্যাতনের অভিযোগের মামলায় সাক্ষ্য দিতে এসে একথা বলেন সুবহা।
এদিন মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ধার্য ছিল। সুবহা ও ইলিয়াস হোসাইনও আদালতে হাজির হন। সকাল ১১টার দিকে মামলাটির কার্যক্রম শুরু হয়। সুবহা সাক্ষীর কাঠগড়ায় এবং ইলিয়াস হোসাইন আসামির কাঠগড়ায় গিয়ে দাঁড়ান।
সুবহা বিচারককে বলেন, গতকাল মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করি। আসামি না থাকায় তা হয়নি। আজকের জন্য দিন ধার্য আছে।
তখন বিচারক সুবহার কাছে জানতে চান, মামলা প্রত্যাহারের জন্য আপনি কি সম্পূর্ণ স্যাটিসফাই?। সুবহা তখন বলেন, না। বিচারক কারণ জানতে চাইলে সুবহা বলেন, এখনও কিছু দেনা-পাওনা বাকি আছে। আর আমি এখনও সংসার করতে চাই। ইলিয়াস যদি চায়।
তখন বিচারক বলেন, কেউ সংসার করতে না চাইলে সেখানে না যাওয়ায় ভালো। এরপর বিচারক সুবহার কাছে জানতে চান, আসামি তাকে কত টাকা দিয়েছে, দেনমোহর কত? তখন সুবহা বলেন, সব মিলিয়ে ২০ লাখের মধ্যে ১০ লাখ দিয়েছে। এসময় নথি দেখে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতকে জানান, বিয়ের দেনমোহর সাত লাখ টাকা। তখন বিচারক বলেন, ১০ লাখ তো বেশি দিয়েছে। সুবহা বলেন, ৮ মাসের ভরণপোষণসহ অন্যান্য কিছু মিলিয়ে ১০ লাখ দিয়েছে।
বিচারক তখন সুবহার কাছে জানতে চান, ১০ লাখ টাকা পেয়েছেন। আপনি কি এতে স্যাটিসফাই? স্যাটিসফাই না হলে মামলা চালাতে পারেন। তখন সুবহা বলেন, আমি মামলা চালাতে চাই না।
তখন বিচারক সুবহার কাছে জানতে চান, আসামির বিরুদ্ধে আপনার কোনো অভিযোগ আছে? সুবহার বলেন, না। দুই পরিবারের উপস্থিতিতে তাদের আপস মীমাংসা হয়ে গেছে।
এরপর আসামিপক্ষ আপস মীমাংসার অ্যাফিডেটিভ জমা দেন। তখন রাষ্ট্রপক্ষ বলেন, মামলা আপস করতে চাইলে সাক্ষ্য দেন।
তখন সুবহার সাক্ষ্য দেন। তিনি বলেন, ‘মামলাটি আপস হয়েছে। আসামির বিরুদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ নেই। দেনা-পাওনা পরিশোধ করেছে। এরপর আসামিপক্ষ সুবহাকে জেরা করেন।
পরে ইলিয়াসের জামিনের বিষয়ে শুনানি হয়। আদালত শুনানি শেষে ইলিয়াসের জামিন মঞ্জুর করেন। আদালত আগামী ২৭ জুলাই আসামির আত্মপক্ষ শুনানি, মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন এবং রায়ের জন্য রাখেন।
এর আগে, রোববার সুবহা আদালতে সাক্ষ্য দেন। তিনি ইলিয়াসের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের মৌখিক আবেদন করেন। ইলিয়াস পলাতক থাকায় এ বিষয়ে রোববার শুনানি হয়নি।
গত ১৯ জুন একই আদালত ইলিয়াসকে পলাতক দেখিয়ে তার বিরুদ্ধে চার্জগঠনের আদেশ দেন। গত ২২ মার্চ ইলিয়াস হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন একই ট্রাইব্যুনাল। গত ৩ জানুয়ারি রাজধানীর বনানী থানায় মামলাটি দায়ের করেন সুবহা।
নয়া দিগন্ত