sliderস্পটলাইট

হারিয়ে যেতে বসেছে বসন্তের স্মারক পলাশ…শিমুল

আব্দুর রাজ্জাক, ঘিওর (মানিকগঞ্জ): ‘ও পলাশ .. ও শিমুল কেন এ মন মোর রাঙ্গালে / জানি না জানি না আমার এ ঘুম কেন ভাঙ্গালে . . . লতা মুঙ্গেশকারের কালজয়ী এ গান শিমুল-পলাশকে ভীষণ মনে করিয়ে দেয় আমাদের। এমন অজস্র গানের কথায় কিংবা কবিদের কবিতার ছন্দে উঠে এসেছে বসন্তের এই প্রতীক। পলাশ-শিমুল আমাদের বাঙ্গালীর ফুল। ফাগুনের-বসন্তের-ভালোবাসার ফুল।বসন্তের মাতাল সমীরণের টকটকে লাল বর্ণচ্ছটায় মন রাঙ্গানো শিমুল-পলাশ প্রকৃতিতে এনে দেয় নতুন মাত্রা। বাঙ্গালীর সংস্কৃতির আবাহনে হৃদয়কে সাজায় পলাশ-শিমুলের লাল আভা । প্রেম-ভালোবাসার মধুরিমায় শিমুল পলাশেরা ছন্দায়িত করে তোলে মন।
তবে সৌন্দর্যের এই লীলাভূমি বাংলার দৃশ্যপট আস্তে আস্তে ম্লান হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে অনেকটা হারিয়ে যাওয়ার পথে এই গাছগুলো। ঘিওর উপজেলাসহ মানিকগঞ্জের প্রায় সব গ্রামেই এই ফুলের দেখা মিলতো। এখন ফাগুনের আগুণ রাঙা এই ফুলের দেখা পাওয়া খুবই দুস্কর। অনেকের মতে এটি ফলজ বৃক্ষ নয়, শুধু ফুলের সৌন্দর্য্য। এছাড়াও এই গাছের কাঠ জ্বালানি ছাড়া কোন কাজে আসেনা বলে এই গাছ লাগাতে মানুষের এত অনিহা।
পশ্চিম আফ্রিকা থেকে ইন্দোনেশিয়া হয়ে শিমুল এসেছে এই বাংলায়। ইংরেজি নাম সিল্ক কটন। বৈজ্ঞানিক নাম বোমবাক্স সিইবা। মালভেসি গোত্রভূক্ত শিমুল ১৮ রকম হারবাল ওষুধে ব্যবহৃত হয়।
পাতাহীন গাছের নগ্ন ডালে প্রকৃতি তার আপন লীলায় মত্ত হয়ে দৃষ্টিকটু গাছে উজ্জ্বল লাল বা গাড় কমলা রঙের পলাশ ফুটিয়ে মানুষের আদর ভালোবাসা বাড়িয়ে তোলে। ফুলে ফলে সমৃদ্ধি বাংলার হাজার হাজার বৃক্ষরাজির মধ্যে পলাশ অন্যতম। রঙেভরা বসন্তে এই ফুলের বিশাল দখলদারিত্ব। যার বৈজ্ঞানিক নাম- ইঁঃবধ সড়হড়ংঢ়বৎসধ। দ্বিজেন শর্মা তার বইয়ে লিখেছেন- পলাশ মাঝারি আকারের পত্রমোচী দেশীগাছ। তিনটি পত্র নিয়ে যৌগিকপত্র। ফুল ফোঁটে বসন্তে। ৭.৫ থেকে ১০ সে.মি. আয়তনের শিম ফুলের মতো। বাংলা সাহিত্যে পলাশের প্রভাব অতিশয়।
মানিকগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষকরে গায়ের মেঠো পথের ধারে অযতেœ অবহেলায় শিমুল পলাশের কোল জুড়ে হেসে ওঠেছে রক্তিম ফুল। তবে সৌন্দর্যের এই লীলাভূমি বাংলার দৃশ্যপট আস্তে আস্তে ম্লান হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে অনেকটা হারিয়ে যাওয়ার পথে এই গাছগুলো। আগে গ্রাম গঞ্জের সবখানে এই ফুলের দেখা মিললেও এখন দেখা পাওয়া খুবই দুস্কর। অনেকের মতে এটি ফলজ বৃক্ষ নয় শুধু ফুল। ফুল ও জ্বালানি ছাড়া কোন কাজে আসেনা বলে এই গাছ লাগাতে মানুষের অনিহা। আবহমান বাংলার প্রকৃতির রুপ ও দীর্ঘদিনের পাালিত সংস্কৃতি বাচিঁয়ে রাখতে পলাশ -শিমুল গাছ টিকে থাকার প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Back to top button