জ. ই. আকাশ, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) : মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের পদ্মা নদীতে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ ও পদ্মা ভাঙনরোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৩ জুলাই (রবিবার) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ‘পদ্মা ভাঙন থামাও, হরিরামপুর বাঁচাও’ স্লোগানে ফেসবুক পেজ গ্রুপের আয়োজনে ঘন্টাব্যাপী উপজেলা চত্বরের প্রধান ফটকের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে এলাকার রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন, শিক্ষক, শিক্ষার্থী সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার প্রায় দুইশতাধিক জনগণ উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাসুদুর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তারা অবিলম্বে অপরিকল্পিতভাবে পরিচালিত এই অবৈধ ড্রেজার বন্ধের দাবি জানান।
তারা আরও বলেন, ঢাকার পাশ্ববর্তী মানিকগঞ্জ জেলার ৭টি উপজেলার মধ্যে ১৩ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত সর্ববৃহৎ উপজেলা হরিরামপুর। যার মধ্যে ৫০ দশক থেকে অনবদ্য পদ্মা ভাঙনের ফলে ১০টি ইউনিয়নই নদী ভাঙন কবলিত হয়ে পড়ে। এই ভাঙন কবলিত এলাকায় কিছু স্বার্থান্বেষী মহল পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করছে। ফলে দিনে দিনে পদ্মার তীরবর্তী পরিবারগুলো ভাঙনের শিকার হচ্ছেন।”
এছাড়াও বক্তারা বিভিন্ন জেলায় নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হলেও হরিরামপুরে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নেই বলে দুঃখপ্রকাশ করেন এবং সেই সাথে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করে স্থায়ী বেড়িবাঁধেরও দাবী জানান তারা।
মানববন্ধনে এই অবৈধ ড্রেজার বন্ধ করতে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে গণস্বাক্ষর ও স্মারকলিপি প্রদান করবেন বলেও জানান আয়োজন কমিটি।
মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ‘পদ্মা ভাঙন থামাও, হরিরামপুর বাঁচাও’ স্লোগানে ফেসবুক পেজ গ্রুপের সমন্বয়ক ও স্বেচ্ছাসেক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শাহাবুদ্দিন আহমেদ চঞ্চল, পাটগ্রাম অনাথবন্ধু সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হরিপদ সূত্রধর, উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবুল বাশার সবুজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মহিদুর রহমান মহিদ ও পবিত্র কুমার শাখারী, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের আহবায়ক আমিনুর রহমান চৌধুরী (মিল্টন), উপজেলা কৃষক লীগের সদস্য সচিব শহিদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কর্মসূচি ও পরিকল্পনা সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা আক্তার চায়না, সামাজিক সংগঠনের কর্মী তানভীর আহমেদ, হারুকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান শেখ মোশারফ হোসেনসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, “আমাদের অভিযান চালাতে দুই থেকে তিনটি দপ্তরকে অবগত করতে হয়। তাদের নিয়ে নদীর স্পটে পৌঁছাতে নৌযানে ৪০/৫০ মিনিট সময় লাগে। এর মধ্যে ড্রেজার ব্যবসায়ীরা কোনো না কোনো ভাবে মোবাইল কোর্টের খবর পেয়ে যায়। সেই সুযোগে ড্রেজার গুলো, পার্শ্ববর্তী উপজেলা দোহার সীমান্ত সরিয়ে ফেলে। ফলে আইনি জটিলতায় মোবাইল কোর্ট করা সম্ভব হয় না। আমি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে গত কাল একটা প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। তাতে আমি উল্লেখ করেছি, পাশ্ববর্তী জেলার সাথে সমন্বয় না করে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া কষ্টকর।”