
পতাকা ডেস্ক : বেওয়ারিশ লাশ গ্রহণ ও দাফনের উদ্দেশ্য নিয়ে ১৯০৫ সালে যাত্রা শুরু করে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি এতিম, বিধবা, দরিদ্র, প্রতিবন্ধী এবং দুস্থদের ত্রাণ ও সহায়তা প্রদান করছে। এই সেবাকে আরও এগিয়ে নিতে সমাজের বিত্তবান ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের যাকাত ও সদকার টাকা দান করার আহ্বান জানিয়েছেন আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের পরিচালনা পরিষদ।
শনিবার রাজধানীর কাকরাইলে আঞ্জুমান জেআর টাওয়ারে সংবাদ সম্মেলন করে আঞ্জুমানের পরিচালনা পরিষদ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের ট্রাস্টি ও সহ-সভাপতি গোলাম রহমান, প্রফেসর খলিলুর রহমান, মিডিয়া ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক মো. আজিম বখ্শ, নির্বাহী পরিচালক ড. মো. আফজাল হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে কর্মকর্তারা বলেন, লাশ দাফন ছাড়াও আঞ্জুমান এতিম, বিধবা, দরিদ্র, প্রতিবন্ধী এবং দুস্থদের ত্রাণ ও সহায়তা প্রদান করে আসছে। এ ছাড়াও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বিকাশ ও সুসংহত করে উৎপাদনশীল, দায়িত্বশীল ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার মিশন নিয়ে কাজ করছে।
জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে লাশ বহনের কাজ অব্যাহত রেখেছে সংস্থাটি। রয়েছে ৪৬টি এম্বুলেন্স ও ফ্রিজিং ভ্যান। যেগুলোর মাধ্যমে ঢাকা শহর এবং দেশের বিভিন্নস্থানে রোগী ও লাশ পরিবহন করা হয়। গত ৫ বছরে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম বিনামূল্যে হাসপাতালে রোগী পরিবহন করেছে ২২ হাজার ৬৪ জন, লাশ পরিবহন করেছে ২ হাজার ৩টি। বেওয়ারিশ লাশ দাফন করা হয়েছে ৩ হাজার ৩৫০টি। ওয়ারিশ লাশ গোসল করানো হয়েছে ৩ হাজার ৫৪৭টি।
এ ছাড়াও সম্প্রতি সমাজের দুস্থ, অসহায় ও হতদরিদ্র মানুষের মাঝে চিকিৎসাসেবা প্রদানের অংশ হিসেবে ঢাকা শহরের বস্তি এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মোবাইল মেডিকেল সার্ভিস চালু করেছে। চিকিৎসক, নার্স ও প্যারামেডিকস মিলে সপ্তাহে ২ দিন ঢাকা শহরের বিভিন্ন বস্তি এলাকায় চিকিৎসাসেবা প্রদানে নিয়োজিত আছে। ফ্রি চিকিৎসাসেবা প্রদান করেছে বিশ্ব ইজতেমায়।
বক্তারা বলেন, অসহায়, এতিম ও দরিদ্রদের শিক্ষার জন্য ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ৯টি হোমে (এতিমখানায়) চারশ’র বেশি এতিমের থাকা, খাওয়া, পোশাক ও লেখাপড়ার যাবতীয় খরচ বহন করে আঞ্জুমান। আর ২০০০ সাল থেকে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম ট্রাস্ট ফান্ড নামে একটি ফান্ড চালু করে। ভাতা প্রদান করা হচ্ছে সমাজের দুস্থ, গরিব ও বয়স্কদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে।
বক্তারা বলেন, আঞ্জুমান বর্তমানে ঢাকার বাইরে ৩০টি জেলা শাখার মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর মধ্যে বেওয়ারিশ লাশ দাফন, সেলাই প্রশিক্ষণ ও মেশিন বিতরণ, শীতবস্ত্র বিতরণ, দুর্যোগকালে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ এবং ১৪টি জেলায় অসুস্থ রোগী পরিবহনের জন্য অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু রয়েছে। এ ছাড়াও চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নেত্রকোনা ও পাবনা জেলায় ৪টি এতিমখানা রয়েছে। আঞ্জুমানের শাখা কার্যক্রম দেশব্যাপী বিভিন্ন জেলায় সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের যাকাত ও সদকার টাকা আঞ্জুমানে দান করার আহ্বান জানিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ট্রাস্টি ও সহ- সভাপতি গোলাম রহমান।