মনিরুল ইসলাম মিনি : ভালো নেই বিরল রোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার সেই কিশোরী মুক্তামনি (১২)। এখন তার অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। ব্যথা আর যন্ত্রণায় প্রতিনিয়ত কান্না-কাটি করছে সে। আগের চেয়ে তার ডান হাতটি এখন আরো ফুলে গেছে। রোগের বিস্তার বুক, পেট আর পায়েও ছড়িয়ে গেছে। রক্তনালীর টিউমারে আক্রান্ত তার হাতটি আদৌ ভাল হবে কি না- তা বলতে পারছে না কেউই।
মুক্তা মনির ডান হাতের অবস্থা খারাপ দেখে ১৫ দিন আগে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের চিকিত্সক ডা. সামন্ত লাল সেনের সাথে ফোনে কথা বলেন তার বাবা ইব্রাহিম হোসেন। এ সময় তিনি মুক্তার দুইটি ছবি পাঠানোর কথা বলেন। পরে ডাক্তার শারমিন সুমির ইমোতে দুইটি ছবিও পাঠান ইব্রাহিম। ছবি দেখে তার হাতের অবস্থা খারাপ বলে জানান ডা. শারমিন সুমি। এরপর গত বুধবার সামন্ত লাল ফোন করে মুক্তামনির খোঁজ-খবর নিয়ে রোজার পরে আবারও মুক্তামনিকে ঢাকায় নিয়ে আরো কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার কথা জানান।
বর্তমানে সারাদিন শুয়ে শুয়েই দিন কাটছে মুক্তামনির। অনুরোধ রাখতে মাঝে মাঝে হুইল চেয়ারে করে দাদার কবরের পাশে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। এসব দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে তার পরিবারটি। এলাকার ছেলে-মেয়েরা তার কাছে ভয়ে যেতে চায় না। কেমন আছো জানতে চাইলে মুক্তামনি এক কথায় বলে, ভাল না। হাতের অবস্থা কি? প্রশ্ন করলে শুধু হাতের দিকে তাকায় সে।
মুক্তামনির বাবা সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশদাহ ইউনিয়নের দক্ষিণ কামারবায়সা গ্রামের ইব্রাহিম হোসেন জানান, চিকিত্সকরা তো চেষ্টার কম করেননি; কিন্তু বর্তমানে তার হাতের অবস্থা আরো খারাপ। ফুলে গিয়ে রস ও বড় বড় ‘পোকা’ বের হচ্ছে। আর দুর্গন্ধ তো আছেই।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তার চিকিত্সার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এরপর ১১ জুলাই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয় তাকে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ধরা পড়ে মুক্তামনির হাত রক্তনালীর টিউমারে আক্রান্ত। তারপর কয়েক দফা অস্ত্রোপচার করে অপসারণ করা হয় তার হাতের অতিরিক্ত মাংস পিণ্ড।