sliderস্থানীয়

সিংড়ার ওসি ওপর সকালে প্রতিমন্ত্রীর ক্ষোভ, রাতে ওসিকে প্রত্যাহার, পরদিন পুনর্বহাল

নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের সিংড়ায় তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এক গণশুনানিতে স্থানীয় লোকজনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এই ঘটনার পর রোববার সকালের রাতেই ওসিকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহারের আদেশ দেন পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম । সোমবার সকালে সেই আদেশ প্রত্যাহার করা হয়।রোববার সকাল ১০টায় সিংড়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় চুরি, ছিনতাই ও মাদকসংক্রান্ত বিষয়ে গণশুনানি এবং সিংড়া পৌরসভার গুরুত্বত্বপূর্ণ স্থানে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঞ্চালনায় গণশুনানিতে সরাসরি স্থানীয় বাসিন্দাদের নানা সমস্যার সমাধান দেন প্রতিমন্ত্রী ও নাটোর-৩ (সিংড়া) আসনের সংসদ সদস্য জুনাইদ আহ্মেদ। গণশুনানিতে অর্ধশত ভুক্তভোগী চাকরি দেওয়ার নামে টাকা আÍসাৎ, চুরি, জমি দখল, মাদক ব্যবসা ও সন্ত্রাসী হুমকিসহ নানা বিষয়ে প্রতিকার চাইতে থানায় গিয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ করেন। প্রতিমন্ত্রী প্রতিটি অভিযোগের ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য ওসিকে নির্দেশ দেন। তিনি তাৎক্ষণিক আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দেন।

ওসি মিজানুর রহমান জবাব দেওয়ার একপর্যায়ে প্রতিমন্ত্রী তাঁর প্রতি ক্ষুব্ধ হন। তিনি বলেন, আমি আইনজীবী, আইনপ্রণেতা। আমাকে আপনি হাইকোর্ট দেখাচ্ছেন, আইনের বই দেখাচ্ছেন। তাহলে পুলিশের দরকার কি? পুলিশের হাতে প্রযুক্তি আছে, চোর শনাক্তের কৌশল আছে। তাহলে কেন চোর শনাক্ত হবে না।

পুলিশ সংক্রান্ত প্রতিটি বিষয়ে পুলিশের পদক্ষেপ শুনে প্রতিমন্ত্রী উষ্মা প্রকাশ করেন এবং ১৬ ও ১৭ আগস্টের মধ্যে সব সমস্যা সমাধানের নির্দেশ দেন। প্রতিমন্ত্রীর এই গণশুনানি বিভিন্ন অনলাইন টিভিতে সরাসরি প্রচার হয়। পরে ভিডিও আকারে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
রোববার গভীর রাতে নাটোরের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম সিংড়া থানার ওসি মিজানুর রহমানকে পুলিশ লাইনেপ্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। তাঁর নির্দেশনা ই-মেইলে রাতেই ওসির কাছে পাঠানো হয়। সকালে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উঠে আসায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। এর মধ্যে আজ দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ সুপার অপর এক আদেশে রাতের আদেশ প্রত্যাহার করে নেন এবং ওসিকে সিংড়া থানায় পুনর্বহাল করেন।

সিংড়া থানা ওসি মিজানুর রহমান বলেন, পুলিশের পক্ষে আইনের বাইরে কাউকে সহযোগিতা করা সম্ভব না। কেউ কোনো বিষয়ে অভিযোগ করলে তাৎক্ষণিক সবাইকে প্রতিকার দেওয়াও সম্ভব না। এই কথাটিই আমি গণশুনানিতে বলেছি। এর বাইরে আমার কিছু বলার নাই। থানা থেকে প্রত্যাহার ও পুনর্বহাল করা স¤পর্কে ওসি বলেন, এটা কর্তৃপক্ষের ব্যাপার। কর্তৃপক্ষ যে নির্দেশ দেবে, আমি তা মাথা পেতে নিব। আমি সকালে আমার প্রত্যাহারের বিষয়টি দেখেছি। দুপুরে প্রত্যাহারের আদেশ বাতিলের চিঠিও পেয়েছি। এর বেশি কিছু আমার পক্ষে বলা সম্ভব না।

পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের বলেন, দুটি বিষয়ই পুলিশের প্রশাসনিক সিদ্ধাšন্ত। এর বেশি কিছু না। এ ব্যাপারে আর মন্তব্য করতে চাননি তিনি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Back to top button